Shadow

“পার্বণী” ১৪২৯

পৌষ সংখ্যা ১৪২৯ “পার্বণী”

প্রমাণ – বিদ্যুৎ পাল

প্রমাণ – বিদ্যুৎ পাল

“পার্বণী” ১৪২৯
প্রমাণ  বিদ্যুৎ পাল শহরের মাঝখান দিয়ে রেললাইন গেছে। আসলে মূল শহরের পাশ দিয়ে রেললাইন তৈরি হওয়ার পর তার ওপারেও প্রায় ততখানিই ছড়িয়ে পড়েছে শহর। ওপারে ছড়িয়ে পড়ার কারণ,এপারে তো রেললাইনের উল্টোদিকে নদী! পিঠ ঠেকে আছে! বাড়বে কী করে? যাহোক ওপারটাই আমাদের এপার। আর মূল শহরটা ওপার। অফিস ধরতে,কলেজ বা বড় স্কুলে পৌঁছোতে ওপারে যেতে হয়। এমনকি এপারে যাদের ব্যবসাপত্তর তাদেরও মাল যোগাড় করতে ওপারে যেতে হয়। আর সবার একে অন্যের সঙ্গে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যখন ছুটির দিনে সিনেমা,থিয়েটার দেখতে বা পার্কে,ময়দানে ঘুরতে,দামী বাজারে কেনাকাটা করতে ওপারে যেতে হয়। তারপরও আছে। মাঝেমধ্যে সার্কাস আসে,সেও ওপারে। মেলা বসে,ওপারে। এমনকি দুর্গাপুজোর মরশুমে বড়,নামকরা মন্ডপগুলোও সব ওপারে। গঙ্গার ওপারে যেতেও আগে শহরের ওপারে যেতে হয়। ট্রেন ধরতে অবশ্য, খুব বেশি জিনিসপত্তর না থাকলে ওপারে যেতে হয় না। নৌকো বেয়েই স্টীমারঘাটায় পৌঁছোনোর ...
জীবনদর্পণ ও বাস্তবতা – সুরজিত সরখেল

জীবনদর্পণ ও বাস্তবতা – সুরজিত সরখেল

“পার্বণী” ১৪২৯
জীবনদর্পণ ও বাস্তবতা সুরজিত সরখেল " যতদিন বেঁচে আছি আকাশ চলিয়া    গেছে কোথায় আকাশে অপরাজিতার মত নীল হয়ে আরো নীল হয়ে আমি যে দেখিতে চাই;_সে আকাশ      পাখনায় নিঙরায়ে লয়ে কোথায় ভোরের বক মাছরাঙা           উড়ে যায় আশ্বিনের মাসে আমি যে দেখিতে চাই_আমি যে বসিতে             চাই বাংলার ঘাসে পৃথিবীর পথে ঘুরে বহুদিন অনেক বেদনা প্রাণে সয়ে ধানসিড়িটির সাথে বাংলার শ্মশানের দিকে যাব বয়ে যেইখানে এলোচুলে রামপ্রসাদের সেই শ্যামা আজো আসে যেইখানে কল্কাপেড়ে শাড়ী পরে কোনো এক সুন্দরীর শব চন্দন চিতায় চড়ে_ আমের শাখায় শুক ভুলে যায় কথা যেইখানে সবচেয়ে বেশী রূপ_ সবচেয়ে গাঢ় বিষণ্নতা যেখানে শুকায় পদ্ম_ বহুদিন বিশালাক্ষী যেখানে নীরব যেইখানে একদিন শঙ্খমালা চন্দ্রমালা মানিকমালার কাঁকন বাজিত,আহা,কোনোদিন বাজিবে কি আর!" আমার ভীষণ প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশের এই বিখ্যাত কবিতাটা পড়ার সঙ্গে সঙ...
মনে পড়ে – সুপ্রিয়া মুখার্জ্জী

মনে পড়ে – সুপ্রিয়া মুখার্জ্জী

“পার্বণী” ১৪২৯
মনে পড়ে সুপ্রিয়া মুখার্জ্জী তুমি চলে যাবার পর রক্তিম পলাশগুলো সব ঝরে গেল। অস্তগামী সূর্যের শেষ কিরণের মত তুমি চলে গেলে। আঁধার গাঢ় থেকে গাঢ়তর হল রাত্রির নিস্তব্ধতা,নীরব গভীরতা এক অন্য কথা বলে গেল চুপিচুপি কানে কানে। তুমি আছো,ভীষণভাবে বেঁচে আছো আমার মনে,মননে। বসন্ত আজও আসে,ফুল ফোটে আজও মনে পড়ে তোমার কথা। রোজ তুমি কেন স্বপ্নে আসো? আমি তো কষ্ট পাই,যন্ত্রণায় দীর্ণ হই! বন্ধনে বাঁধা পড়া হল না, স্বর্গের পারিজাতের গন্ধে তুমি আছো ভীষণভাবে আছ ।। ********************************* সুপ্রিয়া মুখার্জী চন্দননগরের বাসিন্দা। কবিতার সঙ্গে পথ চলা শুরু বেশ বড় বয়সেই। কবিতা লিখতে ও পড়তে ভালোবাসেন।    ...
রোষাগ্নি – শর্মিষ্ঠা দাস (মিষ্টি)

রোষাগ্নি – শর্মিষ্ঠা দাস (মিষ্টি)

“পার্বণী” ১৪২৯
রোষাগ্নি শর্মিষ্ঠা দাস (মিষ্টি) পুতুল খেলা আর নয় মা, চোখের কোণে আগুন জ্বাল। শরীরের ঐ প্রতি খাঁজে, সংহার রূপী সাহস আন। গতরের ভাঁজে কাঁটা পুঁতে, ত্রিশুলটাকে আজ শান দে, হয়েছে সময় রুখে দাঁড়ানোর, নারীদের যোগ্য মান দে। জ্বলছে ঐ চিতার আগুন, আগুন তো নয়; চোখের জল। চিৎকার করে বলছে যেন— বাড়াও তোমার মনোবল। মেয়েটা যে আজ নিথর দেহ, কারা যেন ওকে খুবলে খেলো। এবার সময় বুঝিয়ে দেবার, 'দানবদলনী মা' যে এলো। প্রতি ঘরে হোক্ তোর বন্দনা, মায়ের কোল যেন না হয় শূন্য। বুক জুড়ে আজ সাইজ নয়, সদর্পে বলুক,আমি নই পণ্য। চোখের কোণে জল নয় আর, রক্তচক্ষু দৃষ্টি দে। নৃশংস ঐ পশুদের, পরাণে একটু ভয় দে। নয় আর কোনো নির্ভয়া,বাল্মকী— হোক্ নারীজাতির জয়, সম্মান আর শ্রদ্ধায় বলো, জয় 'দেবী দুর্গা'র জয়'। প্রতি ঘরে হোক্ তোর আগমন, লক্ষীরূপে বিরাজ কর। *************************  ...
কেন এমন? – অর্চনা মহান্তি

কেন এমন? – অর্চনা মহান্তি

“পার্বণী” ১৪২৯
কেন এমন?  অর্চনা মহান্তি আন্তরিক আলাপচারিতায় প্রায় প্রতিটি মানুষের গোপন হৃদয় থেকে ঝরে পড়ে মনখারাপের হলুদ পাতা জটিল জীবন-গণিতের না মেলা কঠিন সব পাটিগণিত । শুধু মেলে ধরুন নিজের "কানু গোয়ালার গলির" জীবন বৃত্তান্ত, অকপট স্বীকার উক্তিতে দেখুন অপরপক্ষের  "ফুল্লরার বারোমাস্যা" ছিল  ঝরারই অপেক্ষায়, ক্ষোভ উদগীরণের মুহূর্তে শুধু প্রয়োজন ছিল একটু সমবেদনার কড়া নাড়ার। কেউ এখন অন্তর থেকে ভালো আছি বলে না বা বলতে পারেনা একের পর এক তুলে ধরে সঠিকভাবে ভালো না থাকার অসংখ্য ধূসর বৃত্তান্ত সে দেহে বা মনে এককের বা পরিবারের। সহজ কথায় আমরা কেউ আজ সত্যিই ভালো নেই শুধু ভালো থাকার বিস্তর লড়াইয়ের ভেতর কোন ক্রমে টিকে আছি আপাদ-মস্তক।। ********************************** অর্চনা মহান্তি পরিচিতি: বাঁকুড়া জেলার হিড়বাঁধ গ্রামে জন্ম। বাবা শ্রী ফণীভূষণ মহান্তি,মা শ্রীমতী সরোজিনী মহান্তি। পারিবারিক ভাবে সাহিত্য...
উৎসের শেষ শিকড় টুকু  – সুরভী চট্টোপাধ্যায়

উৎসের শেষ শিকড় টুকু  – সুরভী চট্টোপাধ্যায়

“পার্বণী” ১৪২৯
উৎসের শেষ শিকড় টুকু  সুরভী চট্টোপাধ্যায় পাহাড়ের মাথা থেকে একটি হাইরাইজ পালক আমাকে ছুঁয়েছিল আর দিন-সপ্তাহ পর আমি ডুবে গিয়েছিলাম সার্বিক বাস্তবতার বোধে যেন শীতের আবেশ মাখা একটি ফ্লুয়ে আচ্ছন্ন আগামীকাল… রক্ত এবং কুয়াশার কয়েকটি ডানা আর আমি স্বর্গীয় মধু ভরে ছুঁয়ে দেখেছিলাম সাম্রাজ্যবাদের ঝুঁটিগুলো… নিভু নিভু মোমের আঁচে প্রয়াত মানবতা আর দুঃখী রগগুলোর ভেতর দিয়ে হেঁটে চলেছে মাদকের সুরম্য ঐতিহ্যখানি… সবুজ হয়ে আছে অহং এর মতো চিরহরিৎ খেতগুলো… আর আমরা পৃথিবী হয়ে উঠে চিবিয়ে খাচ্ছি বহু উৎসের শেষ শিকড়টুকু… ************************************* কবি পরিচিতি - সুরভী লেখালেখির চেষ্টা করতে ভালোবাসে। এর মধ্যে বেশ কিছু পত্রপত্রিকায় তাঁর লেখা বেরিয়েছে,নিজের লেখাকে সকল পাঠকের মধ্যে পৌঁছে দেওয়াই তাঁর স্বপ্ন।  ...
সংস্থান – জয়িতা সরকার

সংস্থান – জয়িতা সরকার

“পার্বণী” ১৪২৯
সংস্থান জয়িতা সরকার আবার একটা নতুন দিন। মেঘে আর বৃষ্টিতে বুঝতে পারছিনা দুপুর- বিকাল -সন্ধ্যা -সকাল... আবার যুদ্ধের প্রস্তুতি অকাল-আকাল-অসময়। আধুনিক পুরুষের চোখ দুটো অস্বস্তিকর লাল। ললনা তার প্রেমিকের রক্তে লিপস্টিক লাগাচ্ছে। এমনকি বালকেরা নীল বৃষ্টিতে কামার্ত! নিজের মাথা নিজেই কেটে নৈবেদ্য সাজিয়েছে সুন্দর বাহুবলী যুবক। সিদ্ধাচার্য মন্ত্ররহিত অস্ত্র আর ফুল সবকিছু একদম মিলে মিশে আছে কাছাকাছি। কেউ কেউ এখন নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে । পুজোর ফুলের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে অনন্ত অসীম, আসছে না কিছুতেই এখনো তা। বাটা চন্দন শুকনো হয়ে গেল। আর কেউ বসে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বিভীষণের সঙ্গে ফিসফিস ষড়যন্ত্রে শান দেবার জন্য। কোথাও যুদ্ধ,আর কোথাও যাত্রাপালায় নকল নকল যুদ্ধ। চুমার বিপরীতে মুখোমুখি তৈরি ধারালো নখ আর দাঁত, সবাই শুনছে না সেইসব শব্দ,জানছে না সেইসব কথা। বুঝেও দেখছে না কেউ কেউ। বৃষ্টি...
লড়াইয়ের নাম দুর্গা – শাশ্বতী হোসেন

লড়াইয়ের নাম দুর্গা – শাশ্বতী হোসেন

“পার্বণী” ১৪২৯
লড়াইয়ের নাম দুর্গা  শাশ্বতী হোসেন স্বাধীনতা মানে বুঝিস বাউরির পো? পাখির পারহা উড়হা আর উড়হা - ড্যানা খুল্যে নীল আকাশে পতপতায়ঁ উড়হে চরহা অ্যতদিন আমার জইন্যে বসে আছিস আর একটঅ বছর... আইসছে বছর শারহুল ফোটার আগুতেই আমদের বিহা। দেশ্যে যুদ্ধ চইলছে মহিলা রেজিমেন্ট ক্যাম্পে ট্রেনিং পুরোদমহে চইলছে। ট্রেনিং শেষ হল্যে যুদ্ধে যাবঅ শত্রুদের ষড়যন্ত্রের টিলহাগুলা ধুলার পারহা উড়াইন দিবঅ একটঅ খুশির খবর শুন,মহিলা শাখার এলিট কমান্ডোর পোস্ট পায়েঁছি। কত স্যালুট পাই জানিস? কেনে পাবঅ নাই বল? হামি যে সে মিয়া নকি? আমার নাম দুর্গা শবর বাপের নাম জগনা শবর। ছুটবেলা থাক্যে আমার রাজমিস্তিরি বাপ হামার ভিত্রে খাদানের গাড়হার পারহা সাম করায়ঁ দিছে--তুই বড় হয়্যে সৈনিক হবি। দেশের লাগ্যে লড়াই করবি। তার জইন্য ইখন থাক্যে হাঁড়ি-পাতিল  খেলা বন্ধ কইরতে হবেক। আমার  দুনিয়াটঅ দমহে ছুটঅ রে দুগ্গা তকে লিয়ে একটঅ স্...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!