Shadow

“পার্বণী ১৪৩০”

পৌষ সংখ্যা পার্বণী ১৪৩০

সম্পাদকীয় – পৌষ সংখ্যা ১৪৩০ পার্বণী

"পার্বণী ১৪৩০"
সম্পাদকীয় দেবদত্ত বিশ্বাস সুখের মাস পৌষ মাস। আনন্দের মাস পৌষ মাস,উৎসবেরও। এই মাসের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে বাঙালীর বিভিন্ন পার্বণ। কুলায় ফেরার আনন্দ ঘেরা পৌষ সংখ্যার নামও তাই পার্বণী। এমাসেই বিশ্বপিতার জন্মদিন। ইংরেজি সালের ২৫ শে ডিসেম্বর। এমাসেই আসে ইংরেজি সালের নতুন বছর। ১লা জানুয়ারি থেকে যা শুরু হয়। ঘন কুয়াশায় শীতের চাদরে মোড়া,ঠকঠক করে কাঁপার মাস হলো পৌষ মাস। আগুনে গা তাপিয়ে পিঠেপুলি খাওয়ার মাস পৌষ। কথায় বলে,মাঘের শীতে বাঘ পালায়। কিন্ত এবার যেন মনে হচ্ছে,তার আগে,এই পৌষেই বাঘ পালাবে! এ যেন টেস্ট ম্যাচে জিওফ্রে বয়কটের বিরক্তিকর ঠুকঠুকানি আর কুড়ি-কুড়ির স্লগওভারে মহেন্দ্র সিং ধোনীর চালিয়ে খেলা! সংক্রান্তি র আগেই তো শীতে জবুথবু বাংলা। গোটা পৌষ ঘুমিয়ে থেকে পৌষের শেষাশেষি পাহাড় থেকে সাগর,কুয়াশার চাদরে মোড়া বাংলা যেন কবিগুরু র কথায়.."হিমেল ঘন ঘোমটা খানি,ধুমল রঙে আঁকা.."!নতু...
দুই এক্কে দুই – সুজয় দত্ত

দুই এক্কে দুই – সুজয় দত্ত

"পার্বণী ১৪৩০"
PC: Women News দুই এক্কে দুই সুজয় দত্ত  (১)  রঙ্গন জানলাটা বন্ধ হয়না ভাল করে। শীতের পড়ন্ত বিকেলের হিমেল হাওয়া হুহু করে ঢুকছে তার ফাঁক দিয়ে। ট্রেনের গতির সঙ্গে তাল রেখে। পরের স্টেশন আসতে এখনো খানিকটা দেরী। আমার মুখ দিয়ে নিজের অজান্তেই বেরিয়ে এল,"ঠান্ডা লেগে যাবে। সরে এসো এদিকে।" তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেখলাম না ওর। একরাশ ফিনফিনে কোঁকড়া চুল হাওয়ায় উড়ছে এলোমেলো। মুখ আলতো ছোঁয়ানো জানলার কাঁচ।  উষ্ণ নিঃশ্বাসে মাঝেমাঝেই ঝাপসা হয়ে উঠছে সে-কাঁচ। খানিক পরে মুখ ফিরিয়ে আস্তে আস্তে বলল, "জ্বর এলে রাত জেগে জলপটি দিতে হবে,তাই তো?" আমার মাথা নীচু,চোখ কামরার মেঝেতে। মনের ক্যালেন্ডারে ফুটে উঠছে একটা তারিখ। ১১ই মে। চার বছর আগের। শেষ যখন ওর শিয়রে বসে তপ্ত কপালে হাত ছুঁইয়েছিলাম--জলপটি দিতে। আগের দিন কালবৈশাখীর হঠাৎ হওয়া বৃষ্টিতে ছাতাহীন বাড়ী ফিরেছিল। বৃষ্...
মিশর – মধুমিতা মিত্র

মিশর – মধুমিতা মিত্র

"পার্বণী ১৪৩০"
পিরামিড-কে-সঙ্গে-নিয়ে মিশর  ইতিহাসের ছায়ায় ভূগোলের আশ্রয়ে মধুমিতা মিত্র "মোমের পুতুল মমির দেশের মেয়ে নেচে যায়-বিহ্বল চঞ্চল পায়"- ছোটবেলা থেকেই নাচের ছন্দে গাঁথা এই নজরুল গীতি খানি মনের মধ্যে মমির দেশের এক অদ্ভুত আবেশ রচনা করে রেখেছিল। সেই আবেশ আরও ঘন হল ভূগোলের পাতায়, আন্ডারগ্র্যাজুয়েটে  আলাদা করে একটা গোটা পেপারে আফ্রিকার সঙ্গে ইজিপ্টকে পড়ানো হতো আমাদের সময়  আশির দশকে। সেই তখন থেকেই মনের মধ্যে বাসনা রচিত হল, যদি কখনও বিদেশ ভ্রমণে যাই তবে অবশ্যই ইজিপ্টে যেতেই হবে এবং নীলনদ কিভাবে মরুভূমির মধ্যে সবুজের মায়াজাল তৈরি করেছে তা অবশ্যই স্বচক্ষে দেখতে হবে। ইতিহাস আমার বিষয় নয়। মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়া ইতিহাসের পাঠক্রমে যেহেতু ভারতবর্ষের বিস্তারিত ইতিহাস ছাড়া আর কিছুই জানার সুযোগ হয় নি সেহেতু মিশরের ঐতিহাসিক তাৎপর্যের প্রতি মন অতটা নিবদ্ধ ছিল না, যদিও পৃথি...
জন্মদিনের গিফট্ – ব্রতী ঘোষ

জন্মদিনের গিফট্ – ব্রতী ঘোষ

"পার্বণী ১৪৩০"
PC: Wallpapers.com জন্মদিনের গিফট্ ব্রতী ঘোষ ক্লাস ফাইভের অ্যানুয়াল পরী - ক্ষার আজই শেষ দিন ৷ আজ বাংলা পরীক্ষা ৷ বাংলা পড়তে সায়নের বেশ ভালো লাগে । একে তো শেষ পরীক্ষা তার ওপর বাংলা তাই সকাল থেকে সায়নের মনটা একেবারে ফুরফুরে৷ পরীক্ষার শেষ প্রশ্নের উত্তরটা লিখতে লিখতেই ওর মাথার দুষ্টু পোকাগুলো নাচানাচি করতে থাকে ৷ আর লিখতেই ইচ্ছা করছে না ৷ কতক্ষণে বাড়ি ফিরে ক্রিকেট খেলবে অভিষেকের সঙ্গে,এই আনন্দে ওর শেষ উত্তরটাই ঠিকঠাকভাবে লেখা হলো না । মাথার পোকাগুলো যদি এইভাবে নাচানাচি করে তাহলে ওর কি দোষ? পরীক্ষা শেষ হলে মার সঙ্গে বাড়ি ফিরে ও ছুট্টে চলে আসে ছাদের ঘরে। এই ঘরটা এক্কেবারে ওর নিজের ৷ একদম ছোটবেলা থেকে ওর যত খেলনা ছিল সব গুলোর ধ্বংসাবশেষ এখানে আছে ৷ কি নেই তাতে? প্রথম জন্মদিনের পাওয়া তিন চাকার সাইকেল,ওর স্নান করার বড় গামলা,ক্যারাম বোর্ড,ক্রিকেটের সব সরঞ্জাম,সব,সবকিছু। তাড়াতাড়ি ...
পৃথিবী তুমিময় – শম্পা সরকার

পৃথিবী তুমিময় – শম্পা সরকার

"পার্বণী ১৪৩০"
কবির প্রতি আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি কবির ই ভাষায়: পৃথিবী তুমিময় শম্পা সরকার সকালের প্রথম শিশির কণায় তোমার বাণী"তুমি প্রভাতের শুকতারা"ভালোবাসার প্রতিটি শব্দ যেন তোমারি লেখা"চিরকাল রবে প্রেমের কাঙাল"পথের প্রতিটি বাঁকে তোমার ছন্দ"আমার এই পথ চলাতেই আনন্দ"দুপুরে তপ্ত হাওয়ায় তুমি গেয়ে ওঠো"দারুণ অগ্নিবাণে ---"সন্ধ্যাবেলায় বিরহীর সুরে সুর দিয়ে বলো"বলেছিনু ভুলিবো না যবে তব ছলছল আঁখি.."জ্যোৎস্না প্লাবিত নীরব রাতে আবার তুমি গেয়ে ওঠো"চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙেছে --"জীবনের শেষ প্রান্তে যেতে যেতেও আশার বাণী বলো"মোর মরণে তোমার হবে জয় --"কবি জীবন আমার তুমি তুমি ময়ভাষা আমার তোমাতেই শুরু আর তোমাতেই শেষ"যেদিন সে প্রথম দেখিনু--"সেদিন ই তোমাতে একাকার হয়ে গেনু ৷ **************************************** শম্পা সরকারএকজন শিক্ষিকা তবে অধ্যাপনার সাথে সাথে লেখা লেখি করতে ভালোবাসেন। দীর্ঘ দিন কলকাতার ...
রাগে অনুরাগে – সুরজিত সরখেল

রাগে অনুরাগে – সুরজিত সরখেল

"পার্বণী ১৪৩০"
রাগে অনুরাগে সুরজিত সরখেল কতদিন পর সুধাময় লোকাল বাসে উঠলো। আসলে উঠতে বাধ্য হল। করোনা অতিমারী একেবারে চলে যাবার পর,যখন মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক ছন্দে ক্রমশ: আসতে শুরু করেছিল, ততদিনে অনেক অভ্যাস আর বদভ্যাসও,মানুষ একটু একটু করে ভুলতে বসেছিল। যেমন, অফিস থেকে মেট্রো করে শ্যামবাজারে নেমেই ঘোষ দা,বোস দা,তন্ময়,আর সুধাময় উত্তর পূর্ব দিকে একটা ছোট্ট তেলেভাজার দোকানে নিয়ম করে প্রতিদিন গরম গরম পেঁয়াজি আর আলুর চপ গোগ্রাসে গিলতো! সেটা আবার অফিসের হেড ক্যাশিয়ার নীলিমা সেনের চোখে একদিন পড়েছিল। বেশ রাশভারী,গম্ভীর,মেজাজি ভদ্রমহিলা,চোখ সরু করে সুধাময়ের দিকে তাকিয়ে বলেছিল,"এই ভর সন্ধ্যেবেলায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে তেলেভাজা না খেয়ে বাড়িতে গিয়ে হাতমুখ ধুয়েই তো খেতে পারতেন! যত্তসব! আপনাদের দেখে মনে হচ্ছে কতগুলো ষাঁড় রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জাবনা কাটছে !”ভীষণ রেগে গিয়েছিল ওরা সবাই। আসলে...
আহোম রাজবাড়ী তলাতল ঘর – অজন্তা প্রবাহিতা

আহোম রাজবাড়ী তলাতল ঘর – অজন্তা প্রবাহিতা

"পার্বণী ১৪৩০"
তলাতল-ঘর-আসাম আহোম রাজবাড়ী তলাতল ঘরঅজন্তা প্রবাহিতা ভারতের উত্তর পূর্ব সীমান্তে  অসম রাজ্যর  সমৃদ্ধশালী  ইতিহাস ও রহস্যময়ী প্রকৃতি সকলকেই আকর্ষিত করে। প্রাচীন তথ্য অনুযায়ী অসমের অংশ ছিল কামরূপ এবং রাজধানী ছিল প্রাগজ্যোতিষপুর (বর্তমান গুয়াহাটি শহর)। অসম কন্যা হবার কারণে  চোখের সামনে বহু  ইতিহাসকে  চাক্ষুষ দেখেছি এবং তার রোমাঞ্চ অনুভব করেছি।পাল,কোচ,কছারি এবং চুটিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন রাজবংশ দ্বারা শাসিত হয়েছিল অসম। ১৩শ শতাব্দীতে আহোমরা মিয়ানমার থেকে পাটকাই রেঞ্জ অতিক্রম করে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রবেশ করে।কোনো রকম প্রতিষ্ঠিত রাজার সঙ্গে যুদ্ধ না করেই নিজেদের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আহোমরা।১২২৮ থেকে ১৮২৮ পর্যন্ত আহোম রাজারা প্রায় ৬০০ বৎসর নিজেদের সার্বভৌমত্ব বজায় রেখেছিল এবং অসমে মোগল সাম্রাজ্য স্থাপনে বাধা দিয়েছিল। রাজকুমার সাউলং সুক...
ঝরা পৌষের চারণ – মণি ফকির

ঝরা পৌষের চারণ – মণি ফকির

"পার্বণী ১৪৩০"
ঝরা পৌষের চারণ মণি ফকির..........................  বিষাদ ছুঁয়েছ চোখ, নাকে ফসলের ঘ্রাণ। অবিরত ভাঙে শোক, বুকে কার্তিক অঘ্রাণ। চরণ চেয়েছে জল। মুক্তিযুদ্ধে শুদ্ধি খোঁজেনি, রুদ্ধ শ্বাসের দল।চোরাবালি মন দেখে প্রিয়জনতলিয়ে যাওয়ার আগে।এখনও স্থায়ীর কোমল নিষাদনিষ্কলঙ্ক লাগে।এখানেই কবিতা থামবে আর তারপর একটা চারণ।ইন্টারল্যুড থেকেই ধরি?................................. মাঘের বাতাসে আদুরে শীতপরিযায়ী পাখিরা এখনওফেরার কথা ভাবেনি। তোমার আবার বেরিয়ে পড়ার কাল।শুনেছি এবার নাকি মেঘের দেশে?কলাবতীর মধুর চলনে, সোহগী ধানের ফলনে;তোমার মুক্তি স্নান।আবার তোমার পরবাস।মৃদু লয়ে চলে শ্বাস।ভালো কথা, একটা পাথর এনআর এক আঁজলা নদীর নীর।আবার কোনো অজানা বাঁকেমৌসুমী ভেসে যাওয়া,এক অনামী সন্ধ্যায়।ঝরা পৌষের চারণ। একলা শোনায় বারণ। *****************...
কবিতা – দীপন মিত্র

কবিতা – দীপন মিত্র

"পার্বণী ১৪৩০"
গোলাপের ঈর্ষাদীপন মিত্র ভিখিরি করেছ তুমি,গোলাপের ঈর্ষাআমি তো উত্তরবাসী,বনেদি জেনো হেতোমাদের রাজধানী,বুরুজ,গম্বুজআমার জগতে নেই, আমি আছি তবুমেঘের আড়ালে থাকা নক্ষত্রের মতোতোমারই তো মনে! নই আশ্চর্য সম্পদ?তোমার স্মৃতিতে আছি ভোরের তারাটিপল্লব-বেষ্টিত লেবু ফুল যেন দোলেপ্রশান্ত সাগর তীরে যার ঘরখানিতেমনই লাবণ্যে আছি, সরল আনন্দেএকটি জাহাজ আসে আমার দুয়োরেতারারা জড়ায় তার মাস্তুলে, রজ্জুতে।************************************** রাত্রির গর্জাস রূপেদীপন মিত্র রাত্রির গর্জাস রূপে নয়ন ধাঁধিয়ে যায় প্রায়নক্ষত্রের কাচুলিতে আবৃত ঊর্ধ্বগ কুচযুগকিরণ কিরীটি শিরে,ললাম অঞ্জনচক্র ছেয়েসীতাহার ঢাকে স্তনবিভাজিকা;চকিত তড়িৎছোটে রাতে;চমৎকৃত বাজুবন্ধ খুলি খুলি যায়শ্বেতাভ শাঁখার বালা সফেন ঢেউয়ের মতো আসেকটিবন্ধে ঊর্মিমালা উচ্ছ্বসিত বঙ্গোপসাগরআভূষিত রাত্রি যবে নৃত্য করে অঙ্গুরীয় ছোঁড়েতারার জ্যোৎস্নার মত...
তাথৈ & অথৈ – দেবযানী ঘোষ

তাথৈ & অথৈ – দেবযানী ঘোষ

"পার্বণী ১৪৩০"
PC Iconscout তাথৈ & অথৈ দেবযানী ঘোষ ডাঃ কেয়া মুখার্জী  চোখে মুখে মিটিমিটি  হাসি নিয়ে গালে হাত দিয়ে বসে আছেন চেয়ারে,তাঁর নিজস্ব চেম্বারে। দৃষ্টি অদিতি আর তমালের দিকে। গলায় একরাশ উৎকণ্ঠা নিয়ে অদিতি বলে,     ‘---ম্যাম প্লিজ হেল্প আস। আমরা খুব অসহায় বোধ করছি।’তমালও সমর্থনসূচক মাথা নাড়লো। ওরা দুজনই এই মুহূর্তে  মানসিক টানাপোড়েনে বিপর্যস্ত। যেন সর্বস্ব হারাতে বসেছে এমন উদ্ভ্রান্ত চোখমুখ। ডাঃ কেয়া মুখার্জী একাধারে কোলকাতার একটি নামকরা বেসরকারি  ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অধ্যক্ষা এবং একজন মনস্তত্ববিদ। তাঁর পারসোনাল চেম্বারে তিনি শুধুমাত্র চাইল্ড সাইকোলজি নিয়েই কাজ করে থাকেন। অদিতি আর তমালের দুই মেয়ে কেয়ার স্কুলেই পড়ে। তাই তারা বিপদে পড়েই ছুটে এসেছে কেয়ার কাছে।                         (১)সমস্যার সূত্রপাত বেশ কয়েক বছর আগে। অদিতি আর তমালের দুই যমজ মেয়ে  তাথৈ আর অথৈ। দশ মিনি...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!