Shadow

কবিতা

কবিতা

ঘুমন্ত পৃথিবী ঘর গাছ – দীপন মিত্র

ঘুমন্ত পৃথিবী ঘর গাছ – দীপন মিত্র

কবিতা, বসন্ত সংখ্যা
ঘুমন্ত পৃথিবী ঘর গাছ দীপন মিত্র রাতের আকাশ থেকে আমি আর ফিরব না আমি আর ফিরব না শৈশবের ঘর থেকে অলিগলি রাস্তা ঘাট সে শহর, ছাড়ে না আমায় প্রতিটা পথের গন্ধ আমার নিঃশ্বাসে বাস করে আমি আর ফিরবনা সে শহর থেকে কী ধূসর, শহরের পুবদিকে শেষ প্রান্ত ক্ষয়ে গেছে রেল গুমটি, প্ল্যাটফর্ম! যে পথ যতটা গেছে আরো যাবে, যাক অতীতের থেকে ফেরা যায় না কখনো ফাল্গুনের দ্বিপ্রহরে হঠাৎ ঝড়ের বেগে পাতারা আকাশ ছেয়ে ফেলে শিরীষ বৃক্ষের নীচে দাঁড়িও তখন…. ফিরব না বছর দশক যুগ ধরে আমি এক পাথরের মতো একটি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমি আর ফিরব না, ফিরব না আর *****************************************      ...
জীবনের গান – জয়ন্ত সরকার

জীবনের গান – জয়ন্ত সরকার

কবিতা, কাশবন ২
  জীবনের গান  জয়ন্ত সরকার   তখন আমি মগ্ন বিষণ্নতায় ক্লান্তি লুকোই রঙিন খামে ইচ্ছেগুলো করছি ফেরি - মনখারাপের সস্তা দামে।  স্রোতের টানে গা ভাসিয়ে ভালো থাকার মিথ্যে ভান তুমি তখন স্রোতের বিপরীতে বেড়ে চলে দূরত্বের পরিমাণ।  শিরায় শিরায় জমা স্মৃতি রক্ত স্রোতে বাড়ায় ব্যথা জীবন এখন শেষের পাতা অভিযোগ - অব্যক্ত কথা। ভাঙছে স্বপ্ন রোজ রোজ মৃত্যু - কত সম্ভাবনার ! মনের ঘরে একলা বসেও এগোয় জীবন বারংবার। ****************************************************** জয়ন্ত সরকার পরিচিতি: জন্ম এবং বড় হয়ে ওঠা সবুজ ঘেরা ডুয়ার্সের আলিপুর দুয়ার জেলার ফালাকাটা ব্লকের এক অখ্যাত গ্রাম ভুটানীর ঘাটে। ছোটোবেলা থেকেই বইপড়া আর বই সংগ্রহ করা, বর্তমানে একটি ক্ষুদ্র লাইব্রেরি ব্যক্তিগত সংগ্রহে রয়েছে। হাতে কলম উঠে আসে কলেজে পড়াকালীন সময়ে। জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের সবুজের কোলে অবস্থিত একটা গ্...
ঘূর্ণিঝড় (আমফান) – অভিজিত বেজ

ঘূর্ণিঝড় (আমফান) – অভিজিত বেজ

কবিতা, কাশবন ২
ঘূর্ণিঝড় (আমফান)     অভিজিত বেজ সেদিন ছিলো অন্যরকম বিকেল জানতো সবাই আসছে ধেয়ে ঝড়- উদ্বেগ চোখে তাকিয়ে আকাশপথে, কাঁপলো হৃদয় জাগলো ভয়ঙ্কর। বন্য সে ঝড় মস্ত হাতে, উপরে নিলো সাজানো গাছের সারি উড়িয়ে নিলো সুখের ঘরের চালা, আছড়ে ভাঙ্গলো মলিন ভাতের হাঁড়ি। মত্ত প্রলয় প্রবল কঠিন রোষে, ফেললো ছিঁড়ে কোমল বইয়ের পাতা- কাড়লো অনেক শহর গ্রামের পুঁজি, রুটির যোগান দোকান ঘরের ছাতা। ভীষণ প্রলয় হটাৎ অসময়ে, ভাসিয়ে দিলো নদীর দুকূল জলে- দেখলো মানুষ অসহায়ের মতো, আর্ত চোখে ধ্বংস কাকে বলে। ***********************************************  ...

ক্যালেন্ডারের হেমন্ত – দেবলীনা সরকার

কবিতা, কাশবন ২
ক্যালেন্ডারের হেমন্ত দেবলীনা সরকার দুব্বোঘাসে হীরের কুচি ঝরছে শিশির ভোর বেলা হিমঋতু ওই শরৎ শেষে তাই বিধাতার এই খেলা। আজ ইস্তক এমন কথাই শুনছে দিদার কোল ঘেঁষে ছোট্ট তোজো ভাবছে শুধুই  হাতটি গালে, আঁক কষে! শপিং মলের শো কেসে সে হীরের কুচি দেখতে পায় কি করে তা আসতে পারে দুব্বো ঘাসের  গায়, মাথায়? ঠাম্মা দিদা বলতে থাকে কতোই কথা তাল বেতাল মেলে না তার অঙ্ক গুলো যোগবিয়োগে নাজেহাল। দাদাই এসে বল্লে হেসে চল দাদুভাই মাইল আট? হাঁটতে গিয়ে গার্ডেনেতে পাবোই দেখতে হীরের ঠাট! আটটি মাইল হাঁটবে!ভেবে- ভ্যাঁ করে সে দেয় কেঁদে ওরা যেন ফিকির করেই ফেলছে তাকে জাল ফেঁদে তবু দাদাই বলছে যখন যেতেই হবে একটিবার, দুব্বো ঘাসের মাথায় হীরে- কচু পাতায় মোতির হার! হাঁটতে থাকে দুইটি প্রদীপ গার্ডেনেরই ধার ঘেঁসে কোথায় হীরে? মোতিই কোথায়? আছে কোথায়? কোন বেশে? কে যে সঠিক, কে-ই বা বেঠিক ভরতে থাকে চোখে...
ভোর পথ – শাশ্বতী হোসেন

ভোর পথ – শাশ্বতী হোসেন

কবিতা, কাশবন ২
             ভোর পথ               শাশ্বতী হোসেন শ্যামা যখন হাসান আলির বাগানে ফুল তুলতে যায় মৌন ভোরবেলা তখন গেরুয়া আলো মাখা বাগান সবে শিশিরের সাথে ভোরের শিস একাত্ম হয়েছে। হাসান আলির খুরপিতে বেজে উঠেছে মাটির একতারা ফুলে ফুলে লেগে আছে নকশিমুখের বানজারা সুখ। শ্যামার পুজোর থালায় আমপল্লব, সিঁদুরলেপা ঘট তার নাকে হাসানের দেওয়া রুপোর পালক ঝোলানো নাকছাবি চোখের মণিদুটি ভেজানো ভাষায় একা একা। আঙুলে আঙুলে লেগে আছে ভীরু অধরের মধু। রোজ ভোরে হাসান আলির বাগানের ফুলে ভৈরবেশ্বরী মন্দিরে পুজো দেয় শ্যামা। রোজ ভোরে শ্যামার পথ চেয়ে বাগান সাজায় হাসান। শ্যামাকে দেখিয়ে হাসান বলে,অই দ্যাখ,দেইখতে পাচ্ছিস? লদীর চরে পাখিগুলা রঙচঙা ড্যানায় ভালোবাসার সাধ জ্যাগেছে-- অরা ভরা জলকে নাম্যেছে কেনে জানিস? জানিস নাই? দ্যাখ দ্যাখ,পানকৌড়ি জোড়টা এখুনি ডুবতে যাছে অ শামা, চায়্যে দ্যাখ... কিন্তু পানকৌড়ি দুটি নিয...
অসমাপ্ত অধ্যায় – প্রতিভা পালসেন

অসমাপ্ত অধ্যায় – প্রতিভা পালসেন

কবিতা, কাশবন ২
  অসমাপ্ত অধ্যায়   প্রতিভা পালসেন  আঙুলের ফাঁক গলে একটা গোটা-পৃথিবী গলাধঃকরণ; হাতের তালুর আয়ুরেখা বরাবর হেঁটে চলে ইচ্ছেদের জিজীবিষা ! অনন্তকাল নক্ষত্রদের ভিড়ে- ঘুরেফিরে ফিরে আসে খসে-পড়া কিছু তারাদের জিজ্ঞাসা ! আলোকবর্ষ দূরত্বের ব্যবধান চোখের পলকে মিশে যায় প্রশ্বাসে ; হামাগুড়ি দেওয়া দুঃসময়ের কালরাত্রি অকারণে অবাধ্য হয় ভীষণ ! দাবানলের ধিকিধিকি আগুন-ঘিরে নৈঃশব্দের প্রকট শীৎকার ! কিছু অধ্যবসায় অচিরেই ধ্বংসাবশেষে আঁকে মন ! অসম্পূর্ণ থেকে যায় থেকে যাওয়া কিছু অসমাপ্ত অধ্যায়, আজীবন!! **************************************************** প্রতিভা পাল সেন পরিচিতিঃ পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি নিবাসী। কম্পিউটার-বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। পেশায় শিক্ষক। সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা থেকে ছোট থেকে লেখালিখির সঙ্গে যুক্ত। মূলতঃ কবিতা, গদ্য ও ছোটগল্পে লেখার প্রয়াস সীমাবদ্ধ। এছা...
“বলি শোন্” – কঙ্কণা সেন

“বলি শোন্” – কঙ্কণা সেন

কবিতা, কাশবন ২
"বলি শোন্"  কঙ্কণা সেন এই মেয়ে,তুই কাজল পড়্ চোখদুটো ডাগর কর কেউ যেন না বুঝতে পারে কতো অশ্রু জমাট বেঁধে ঐ নয়ন মাঝারে। এই মেয়ে, তুই রঙ মাখিস শুকনো ওষ্ঠাধরে কেউ না যেন করে আঁচ কতো ঝড় বইছে রোজ তোর হৃদমাঝারে।                           শুনছিস মেয়ে,মুখখানাকে রঙিন কর্ রঙতুলির আলপনায় গাঢ় রঙ ফুটিয়ে তোল কেউ যেন ভেবেই না পায় মুখের পরে রইছে মুখোশ। বলি শোন্,হাসিটা মুখে ঝুলিয়ে রাখিস, ফেসবুকে রোজ স্ট্যাটাস দিস নব সাজে নব রূপে অভিনয়ে নিপুণ হোস। জীবন নদী চলেছে বয়ে ক্ষণিক সুখ ,তার কতো ক্লেশ কেই বা জানে,কেই বা বোঝে কোথায় হবে কার যে শেষ।। ************************************************** কঙ্কনা সেন পরিচিতি রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম এ। ছোট থেকেই কবিতার প্রতি ভালোবাসা। বিশ্বাস মানবতায়। পেশা - শিক্ষকতা।  ...
অপেক্ষা – কাজরী বসু

অপেক্ষা – কাজরী বসু

কবিতা, কাশবন ২
অপেক্ষা  কাজরী বসু  সুবাতাস বইছিল কই! হঠাৎই আকাশ কালো মেঘমন তাই থৈথৈ  হারিয়ে নিথর আলো। খুঁজেছি সেদিন থেকে আলোতে হাতছানি-ভোর। শিউলির সুবাস মেখে সেদিনের প্রথম প্রহর। একদিন বৃষ্টি আসে রোদ্দুর একলা নীরব রিমঝিম অনুপ্রাসে বেজে যায় কালভৈরব। বেজে যায় একলা বাঁশি সবুজের প্রেক্ষাপটে সে রাতেই পৌর্ণমাসী নীল চাঁদ জ্যোৎস্না তটে। আলো মন ভাঙতে থাকে ভেঙে পড়া ব্রিজের মতো অদেখা ঘূর্ণিপাকে বেড়ে যায় নীলচে ক্ষত। তথাপি পাড় ভাঙেনি গভীরের তর্জমাতে থেকে যায় মেঘরা সুনীল আগামীর অপেক্ষাতে। থেকে যায় ঈশান কোণে সন্ধান ফল্গুজলের থেকে যায় একলা মনে বিরহের অকুস্থলে। বাঁধা হয় আকাশমণি ঝরে পড়া শিউলি, গিঁটে থাকে না ভুল সরণি না পাওয়ার ব্যালেন্সশিটে। বয় ফের সেই সুবাতাস শরতের গন্ধ নিয়ে বৃষ্টির গন্ধে আকাশ ঢুকে যায় জানলা দিয়ে। না পাওয়ারা আগাম ভোরের দরজায় দেয় পাহারা পরিযায়ী স্বপ্নে ওড়ে চিরকাল অপেক্ষারা।...
এ কেমন তুমি? – কঙ্কণা সেন

এ কেমন তুমি? – কঙ্কণা সেন

কবিতা, কাশবন ২
এ কেমন তুমি?   কঙ্কণা সেন ------------------------- এ তুমি কেমন মাগো? প্রতিবার বন্যা কবলিত তোমার সন্তান! প্রতিটি পদক্ষেপে মৃত্যুর অগ্ন্যুৎপাত জীবন স্তব্ধ হতে হতে টিকে থাকা তুমি না দুর্গতিনাশিনী? তুমি না অসুরদলনী? তবে কেন এতো নারী নির্যাতন! লোলুপ দৃষ্টির লেহনে কুঞ্চিত সত্তা অসুর তো হয় নি দলিত,মদগর্বী তারা উচ্চাশার স্বপ্নরা উড়ে যায়,ডানা ভাঙে মাথা কুটে মরে কন্যাভ্রূণগুলো। তুমি তো সর্বজ্ঞা,,,,,বোঝো না মর্ত্যে শুধু দেবী পূজা,হয় না মাতৃ আরাধনা মূর্তির জাঁকজমকে আদিখ্যেতায় বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা বাড়ে নিখোঁজ হয় মানবীগুলো; কালের প্রলেপে রোজ রোজ নতুন ইতিহাস রচিত হয়। তুমি তো অঘটন ঘটনপটীয়সী---তাই বুঝি আশার ডানা মেলে স্বপ্নের জাল বুনি অন্তরের অন্দরমহল থেকে উঠে আসে মাভৈ ধ্বনি-------------------শান্তিরূপেন সংস্থিতা শ্রদ্ধারূপেন সংস্থিতা দয়ারূপেন সংস্থিতা জীবনী শক্তি রূপেন সংস...
একদিন – গীর্বাণী চক্রবর্তী 

একদিন – গীর্বাণী চক্রবর্তী 

কবিতা, কাশবন ২
একদিন  গীর্বাণী চক্রবর্তী  নদীর ছলাৎ ঢেউ বাতাসে দোল খায়, খুনসুটি করে;দিঘিও কেমন হেসে ওঠে সলাজ কিশোরীর মতো। মাছরাঙা ডানা মেলে উড়ে যায় --- নদীর ঢেউ আর শ্যাওলার জল চুপিচুপি কত কথা বলে। শরীর ভেজায় জল, মেয়েলি আলতা, মসৃণ গোড়ালি হেসে খুন হয়।নরম কিশোরী ভেঙেচুরে অচেনা যুবতী-- তার চোখ দুটি নীল;নদীর জল আর শ্যাওলা দিঘি শ্বাস ফেলে জোরে। নীল আকাশের জলছবিতে সোহাগ ছড়িয়ে পড়ে।। ********************************************** গীর্বাণী চক্রবর্তী পরিচিতি জলপাইগুড়ি শহরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা, পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন শিক্ষকতাকে। প্রায় তিন দশক ছুঁয়ে আছে তার সাহিত্য সৃজন। ইতিমধ্যে অসংখ্য পত্র পত্রিকায় গীর্বাণীর লেখা প্রকাশ পেয়েছে। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা চার। তার লেখা গ্রন্থগুলি হল, এক ডজন গপ্পো, ভূত বাংলোর আতংক, শ্বেতা তোমার জন্য এবং অরণ্য জোনাকি।  ...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!