Shadow

প্রথম বর্ষপূর্তি

প্রথম বর্ষপূর্তি

“বলি শোন্” – কঙ্কণা সেন

“বলি শোন্” – কঙ্কণা সেন

কবিতা, কাশবন ২
"বলি শোন্"  কঙ্কণা সেন এই মেয়ে,তুই কাজল পড়্ চোখদুটো ডাগর কর কেউ যেন না বুঝতে পারে কতো অশ্রু জমাট বেঁধে ঐ নয়ন মাঝারে। এই মেয়ে, তুই রঙ মাখিস শুকনো ওষ্ঠাধরে কেউ না যেন করে আঁচ কতো ঝড় বইছে রোজ তোর হৃদমাঝারে।                           শুনছিস মেয়ে,মুখখানাকে রঙিন কর্ রঙতুলির আলপনায় গাঢ় রঙ ফুটিয়ে তোল কেউ যেন ভেবেই না পায় মুখের পরে রইছে মুখোশ। বলি শোন্,হাসিটা মুখে ঝুলিয়ে রাখিস, ফেসবুকে রোজ স্ট্যাটাস দিস নব সাজে নব রূপে অভিনয়ে নিপুণ হোস। জীবন নদী চলেছে বয়ে ক্ষণিক সুখ ,তার কতো ক্লেশ কেই বা জানে,কেই বা বোঝে কোথায় হবে কার যে শেষ।। ************************************************** কঙ্কনা সেন পরিচিতি রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম এ। ছোট থেকেই কবিতার প্রতি ভালোবাসা। বিশ্বাস মানবতায়। পেশা - শিক্ষকতা।  ...
শিউলি – শ্রাবণী দাশগুপ্ত

শিউলি – শ্রাবণী দাশগুপ্ত

কাশবন ২, গল্প
শিউলি শ্রাবণী দাশগুপ্ত আকাশপ্রদীপ আকশের বুকে ছোট্টো, তীব্র, মিষ্টি হয়ে ফুটে আছে। কেমন গন্ধ। আলোরও বিশেষ গন্ধ হয়। হেমন্তের গন্ধ! জানালার ফাঁক দিয়ে আকাশে কুচোকুচো সাজানো ডায়মণ্ড তারা। একদৃষ্টে দেখার মতো ঝলক নেই। বড্ড মায়া-মায়া। চোখ বুজলেও ছুঁয়ে থাকে। কুঁচকির দুপাশ থেকে আড়ষ্ট অচেনা ব্যথা নেমে যাচ্ছে। বুকের মধ্যে তোলপাড়। অস্থির লাগছে শরীর। বাবার ঘর থেকে গান আসছে – ‘শুধু এই পথ চেয়ে থাকা ভালো কি লাগে’? তানিশক থেকে ওরকম হীরের নেকলেস কিনে দিয়েছিল না অরণ্য? বিয়ের জন্মদিনে? “ডাস্কি স্কিনে ডায়মণ্ড গ্ল্যাম দেখাচ্ছে” বলেছিল। তনু বেঢপ পেটে কাত হয়ে কুঁকড়ে আছে, ফোঁপানির মতো শ্বাস। কান্না আটকে ছাতিতে ব্যথা হচ্ছে। উঠে বসে দম ফেলার চেষ্টায় হাঁকপাক করে। খড়খড়িওয়ালা জানালা হাট করে খুলে ফেলে। পারলে ফাঁক দিয়ে মাথা বের করে দিত। হাঁ করে হাওয়া নিতে গিয়ে চেঁচায়, -মা, ও-মা... মা। হেমন্তের নিঝুম সন্ধ্যেতে জটপাকা...
“ফেরত”   ️কলমে – অঙ্কন দন্ড

“ফেরত” ️কলমে – অঙ্কন দন্ড

কাশবন ২, গল্প
“ফেরত” ️কলমে - অঙ্কন দন্ড রাগে, দুঃখে, অভিমানে নিজের ফোনটা মাটিতে আছাড় মারল অর্ঘ্য। বুকের মধ্যে ফুটছে হতাশার বুদবুদ আর তার গালকে উপত্যকা করে বয়ে চলেছে অশ্রু। বুকের মধ্যে হেরে যাওয়া তীব্র যন্ত্রণা দুমড়ে-মুচড়ে মুখ দিয়ে বেরোচ্ছে নিঃশব্দে। তার নিজের পৃথিবীতে জলভাগের সমান যাকে স্থান দিয়েছিল সেই তিথি তার জীবনকে মরুভূমি করে দিয়ে চলে গেছে। নিজেকে নিঃস্ব, ভিখিরি মনে হল অর্ঘ্যর। সে ভাবল কী লাভ এই জীবন রেখে?  আঘাতে মতিভ্রষ্ট হয়ে উঠে দাঁড়াল সে। অবিবেচকের মতো ঘর থেকে বেরিয়ে গেল আত্মবলিদানে। চোখের জল কে নিয়ন্ত্রণ করে রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে অর্ঘ্য। চেপে রাখা কান্না ভারী করে তুলেছে তার কণ্ঠ। কান্না চেপে রাখলে হয়তো সেই অবদমিত তরল নাসারন্ধ্র দিয়ে নির্গত হয়। তাই না চাইলেও বারবার মুছতে হচ্ছে নাক। হঠাৎ সে দেখল ফুটপাতের পাশেই বসে কাঁদছে বছর চারেকের একটি ছোট্ট শিশু। অর্ঘ্য সে সব এড়িয়ে এগিয়...
অপেক্ষা – কাজরী বসু

অপেক্ষা – কাজরী বসু

কবিতা, কাশবন ২
অপেক্ষা  কাজরী বসু  সুবাতাস বইছিল কই! হঠাৎই আকাশ কালো মেঘমন তাই থৈথৈ  হারিয়ে নিথর আলো। খুঁজেছি সেদিন থেকে আলোতে হাতছানি-ভোর। শিউলির সুবাস মেখে সেদিনের প্রথম প্রহর। একদিন বৃষ্টি আসে রোদ্দুর একলা নীরব রিমঝিম অনুপ্রাসে বেজে যায় কালভৈরব। বেজে যায় একলা বাঁশি সবুজের প্রেক্ষাপটে সে রাতেই পৌর্ণমাসী নীল চাঁদ জ্যোৎস্না তটে। আলো মন ভাঙতে থাকে ভেঙে পড়া ব্রিজের মতো অদেখা ঘূর্ণিপাকে বেড়ে যায় নীলচে ক্ষত। তথাপি পাড় ভাঙেনি গভীরের তর্জমাতে থেকে যায় মেঘরা সুনীল আগামীর অপেক্ষাতে। থেকে যায় ঈশান কোণে সন্ধান ফল্গুজলের থেকে যায় একলা মনে বিরহের অকুস্থলে। বাঁধা হয় আকাশমণি ঝরে পড়া শিউলি, গিঁটে থাকে না ভুল সরণি না পাওয়ার ব্যালেন্সশিটে। বয় ফের সেই সুবাতাস শরতের গন্ধ নিয়ে বৃষ্টির গন্ধে আকাশ ঢুকে যায় জানলা দিয়ে। না পাওয়ারা আগাম ভোরের দরজায় দেয় পাহারা পরিযায়ী স্বপ্নে ওড়ে চিরকাল অপেক্ষারা।...
মিলন সেতু – অমৃতা লাহিড়ী

মিলন সেতু – অমৃতা লাহিড়ী

আলোকপাত, কাশবন ২
মিলন সেতু অমৃতা লাহিড়ী 'ধর্ম 'শব্দটির প্রকৃত অর্থ নির্ধারণ করা সহজ নয়। আপাতদৃষ্টিতে ধর্ম বলতে বোঝায় দেবদেবীর উদ্দেশ্যে কিছু আচার-অনুষ্ঠান এবং কিছু রীতিনীতি পালন ,তথাপি এটিও ধর্মের প্রকৃত স্বরূপ নয় ।'ধর্ম ' শব্দের প্রকৃত অর্থ যা মানুষকে ধারণ করে থাকে ।যুগে যুগে জাতিতে, আদর্শের কত বিভিন্নতা ঘটে, আচার-অনুষ্ঠান ও রীতিনীতির অনুসরণ যদি ধর্মের একান্ত রূপ হতো তাহলে ধর্মের সার্বজনীন কোন রূপ থাকত না। 'ধর্ম' কথাটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত, সম্প্রদায়গত ও জাতিগত ব্যাপারই মাত্র বোঝাত। কিন্তু সনাতন ভারতবর্ষ কখনো ধর্ম বলতে এই সংকীর্ণ অর্থ কে বোঝে নি । তার দৃষ্টিতে সকল তুচ্ছতার মধ্যে,সকল আচার-অনুষ্ঠান এর মধ্যে, সকল উত্থান-পতনের মধ্যে যা মানুষকে চিরন্তন সত্যে ধারণ করে থাকে তাই ধর্ম । রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, "সংসারের একমাত্র যাহা সমস্ত বৈষম্যের ঐক্য, সমস্ত বিরোধীদের মধ্যে শান্তি আনয়ন করে, সমস্ত বিচ্ছেদের মধ্য...
সিপাহী বিদ্রোহ এবং চার কলোনি – সুলগ্না চক্রবর্তী

সিপাহী বিদ্রোহ এবং চার কলোনি – সুলগ্না চক্রবর্তী

আলোকপাত, কাশবন ২
সিপাহী বিদ্রোহ এবং চার কলোনি  সুলগ্না চক্রবর্তী ১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহের কথা কে না জানে ? এই প্রবন্ধ এই ক্রান্তিকাল কে ঘিরেই তৈরি হয়েছে। স্থান হলো হুগলি নদীর পশ্চিম তীরে অব্রিটিশ কলোনি গুলো। আর পাত্ররা হলো ব্যান্ডেলের পর্তুগিজ, চন্দননগরের ফরাসি, শ্রীরামপুরের ডেনিস ও হাওড়ার ব্রিটিশ নয় এমন শ্বেতাঙ্গরা ও মেটে ফিরিঙ্গিরা। তারা এই বিদ্রোহকে কী চোখে দেখেছিলো , তাদের অবস্থান কী ছিলো এবং তাদের আশা-নিরাশা কীভাবে বিবর্তিত হয়েছিলো - এইসব সাতপাঁচ নিয়েই এই লেখা। প্রথমেই বলে রাখা ভাল এই লেখা পণ্ডিতদের জন্য  নয়।  হুগলী - ব্যান্ডেল : ============ ১৮৫৭ র মহাবিদ্রোহের সময় হুগলি ও ব্যান্ডেল থেকে অনেক পর্তুগিজ ব্যক্তিরা ইংরেজদের বাহিনীতে যোগ দেয়। তাদের গোলন্দাজ ও অফিসারদের পোস্টও দেওয়া হয় ।তারা আশা করেছিল এর ফলে তাদের সামাজিক সম্মান বাড়বে ও শাহজাহানের দেওয়া ৭৭৭ বিঘা জমি ফেরত পাবে। ব্যান্ডেল চার্চের ভ...
আত্মজ – ব্রতী ঘোষ

আত্মজ – ব্রতী ঘোষ

কাশবন ২, গল্প
আত্মজ ব্রতী ঘোষ  পাশের ফ্ল্যাট থেকে মাঝেমধ্যেই হাসির শব্দ ভেসে আসছে ৷  মায়া বসে আছে প্রতিমা দেবীর মাথার কাছে ৷  মাঝে মাঝে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ৷  "তুমি কাঁদছো ?" "নারে মা !! বয়স হলে এমনিতেই চোখ দিয়ে জল পড়ে ৷" মায়া বুঝতে পারে এই চোখের জলের কারণ ৷  আজ মাসিমার ছোট ছেলের জন্মদিন ৷ থাকে পাশের ফ্ল্যাটেই ৷ লোকজনের হাসি হুল্লোড়ের শব্দ ভেসে আসছে সেই সন্ধ্যে থেকে ৷ মুখে না বললে কি হবে মায়া জানে মাসিমা সেই সকাল থেকে অপেক্ষা করে আছে কখন তার ছোট ছেলে আসবে মার সাথে দেখা করতে !! আজ বছর চারেক হল মায়া প্রতিমাদেবীকে  দেখাশোনার কাজ নিয়েছে ৷ সপ্তাহে এক দিন শনিবার সন্ধ্যা বেলা বাড়ি যায় আবার রোববার সকালেই ফিরে আসে ৷ "মায়া হাতটা একটু ধর তো !!" মায়া সাবধানে হাতটা ধরে আরামকেদারায় বসিয়ে দেয় ৷ "জানিস !! যখন তোর মেসোমশাইয়ের সংসারে আমি আসি তখন আমার মাত্র ঊনিশ বছর বয়স ৷ সেই ছোটবেলায় মাকে হা...
টং আছু – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

টং আছু – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

আলোকপাত, কাশবন ২
পথ চিনে এদেশে চিনের প্রথম বসতি আছিপুরে                                  সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়  "The main purpose of the horseshoe-shaped or, more frequently, omega-shaped ridge surrounding the tomb is to substitute for a range of hills ridge which, according to the principles of feng shui, needs to protect the grave from the "noxious winds" from the three sides – the situation that is rarely naturally obtainable." কথাগুলো লিখেছিলেন প্রখ্যাত চীনতত্ত্ববিদ জাঁ জ্যাকব মারিয়া দে গ্রুট (Jan Jakob Maria De Groot)। তাঁর 'The Religious System of China' গ্রন্থে। জীবনে অনেক সমাধিক্ষেত্রে গিয়েছি। চন্দননগরে ফরাসীদের কবরখানা দেখেছি। চুঁচুড়ায় ডাচদের কবরখানা দেখেছি। কলকাতায় সাউথ পার্ক স্ট্রিট কবরখানাতেও উঁকি দিয়েছি। নানান স্থাপত্যের স্মৃতিসৌধ দেখেছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত চিন ভ্রমণে না যাওয়ায় সেখানকার অশ্ব...
এ কেমন তুমি? – কঙ্কণা সেন

এ কেমন তুমি? – কঙ্কণা সেন

কবিতা, কাশবন ২
এ কেমন তুমি?   কঙ্কণা সেন ------------------------- এ তুমি কেমন মাগো? প্রতিবার বন্যা কবলিত তোমার সন্তান! প্রতিটি পদক্ষেপে মৃত্যুর অগ্ন্যুৎপাত জীবন স্তব্ধ হতে হতে টিকে থাকা তুমি না দুর্গতিনাশিনী? তুমি না অসুরদলনী? তবে কেন এতো নারী নির্যাতন! লোলুপ দৃষ্টির লেহনে কুঞ্চিত সত্তা অসুর তো হয় নি দলিত,মদগর্বী তারা উচ্চাশার স্বপ্নরা উড়ে যায়,ডানা ভাঙে মাথা কুটে মরে কন্যাভ্রূণগুলো। তুমি তো সর্বজ্ঞা,,,,,বোঝো না মর্ত্যে শুধু দেবী পূজা,হয় না মাতৃ আরাধনা মূর্তির জাঁকজমকে আদিখ্যেতায় বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা বাড়ে নিখোঁজ হয় মানবীগুলো; কালের প্রলেপে রোজ রোজ নতুন ইতিহাস রচিত হয়। তুমি তো অঘটন ঘটনপটীয়সী---তাই বুঝি আশার ডানা মেলে স্বপ্নের জাল বুনি অন্তরের অন্দরমহল থেকে উঠে আসে মাভৈ ধ্বনি-------------------শান্তিরূপেন সংস্থিতা শ্রদ্ধারূপেন সংস্থিতা দয়ারূপেন সংস্থিতা জীবনী শক্তি রূপেন সংস...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!