Shadow

প্রথম বর্ষপূর্তি

প্রথম বর্ষপূর্তি

একদিন – গীর্বাণী চক্রবর্তী 

একদিন – গীর্বাণী চক্রবর্তী 

কবিতা, কাশবন ২
একদিন  গীর্বাণী চক্রবর্তী  নদীর ছলাৎ ঢেউ বাতাসে দোল খায়, খুনসুটি করে;দিঘিও কেমন হেসে ওঠে সলাজ কিশোরীর মতো। মাছরাঙা ডানা মেলে উড়ে যায় --- নদীর ঢেউ আর শ্যাওলার জল চুপিচুপি কত কথা বলে। শরীর ভেজায় জল, মেয়েলি আলতা, মসৃণ গোড়ালি হেসে খুন হয়।নরম কিশোরী ভেঙেচুরে অচেনা যুবতী-- তার চোখ দুটি নীল;নদীর জল আর শ্যাওলা দিঘি শ্বাস ফেলে জোরে। নীল আকাশের জলছবিতে সোহাগ ছড়িয়ে পড়ে।। ********************************************** গীর্বাণী চক্রবর্তী পরিচিতি জলপাইগুড়ি শহরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা, পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন শিক্ষকতাকে। প্রায় তিন দশক ছুঁয়ে আছে তার সাহিত্য সৃজন। ইতিমধ্যে অসংখ্য পত্র পত্রিকায় গীর্বাণীর লেখা প্রকাশ পেয়েছে। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা চার। তার লেখা গ্রন্থগুলি হল, এক ডজন গপ্পো, ভূত বাংলোর আতংক, শ্বেতা তোমার জন্য এবং অরণ্য জোনাকি।  ...
বন্ধু – ডঃ গৌতম সরকার

বন্ধু – ডঃ গৌতম সরকার

কাশবন ২, গল্প
বন্ধু ডঃ গৌতম সরকার এদিকটায় নন্দ আগে কখনও আসেনি। কয়েকটা বাড়িঘর, একটা বড় মাঠ আর পুকুর পেরিয়ে জঙ্গল শুরু হয়েছে। নন্দর আজ এতটাই মনখারাপ যে বেখেয়ালে জঙ্গুলে পথ পেরিয়ে অনেকটা ভিতরে চলে এসেছে৷ যত এগোচ্ছে জঙ্গল আরও ঘন হচ্ছে, বড় বড় গাছগুলো মাথার ওপর যেন চাঁদোয়া খাটিয়ে রেখেছে। রোদ প্রায় ঢুকতেই পারছেনা। ভরা দুপুরেও জায়গাটা বেশ ঠান্ডা। পাখির ডাক শোনা যাচ্ছে। পরিষ্কার জায়গা দেখে একটা গাছের গায়ে হেলান দিয়ে বসে পড়লো। স্কুলের ব্যাগটা পায়ের কাছে নামিয়ে রাখলো। কিছুদিন আগে নন্দ কৃষ্ণনগরে মাসির বাড়ি গিয়েছিল। সেখানেই প্রথম স্মার্টফোন দেখে। এত তাক লেগে গিয়েছিল, বাড়ি ফিরে বহুদিন ঘ্যানঘ্যান করেছে ওরকম একটা মোবাইল ফোন কিনে দেওয়ার জন্যে। মোবাইল তো জোটেইনি, উল্টে বাবার হাতে বেদম পেটানি জুটেছে। আজ ক্লাসে বিপিনের হাতে স্মার্টফোন দেখে পুরোনো দুঃখটাই চাগিয়ে উঠেছিল। তাতাইদার কাছে সে ফোনের অনেক ফাংশন শিখেছিল। আজ বিপনে...
হে ক্ষণিকের অতিথি – সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী

হে ক্ষণিকের অতিথি – সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী

কাশবন ২, গান নাচ ও বাদ্য
https://youtu.be/j-6OBt34whE শিল্পী পরিচিতিঃ সিদ্ধার্থ চক্রবর্তীঃ আদি বাড়ি উত্তরবঙ্গের বালুরঘাট শহরে।পড়াশোনা সেখানেই। বর্তমানে কলকাতা সংলগ্ন হরিনাভির স্থায়ী বাসিন্দা। সঙ্গীত শিক্ষা নিয়েছেন শিক্ষাগুরু শ্রী বিকাশ সরকারের কাছে। পরবর্তীকালে শ্রী শান্তিরঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের কাছে মার্গসঙ্গীত শিখেছেন। কিছু কাল তালিম নিয়েছেন শ্রী জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের কাছে। কলকাতায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। অসম্ভব চর্চিত সুকন্ঠের অধিকারী। দূরদর্শনের শিল্পী। প্রচুর স্টেজ প্রোগ্রাম করেছেন। যে স্তরের শিল্পী সেরকম কোনও অহংকার নেই। বয়স মাত্র উনপঞ্চাশ। প্রচার প্রিয় একদমই নন। শুভেন্দু চক্রবর্তী ওরফে বাপ্পাঃ বয়স উনপঞ্চাশ। কোদালিয়া হরিনাভির আদি বাসিন্দা শুভেন্দু বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। দুর্দান্ত তবলা বাজান। অসাধারণ সুকন্ঠের সঙ্গীত যেন আলাদা মাত্রা পায়। নিখুঁত ছবি আঁকেন এবং মাটির মূর্তি যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে ওর আ...
অবশেষে – জলি চক্রবর্তী শীল

অবশেষে – জলি চক্রবর্তী শীল

কাশবন ২, গল্প
অবশেষে জলি চক্রবর্তী শীল 'চলো এবার বিয়েটা করে ফেলা যাক'| অমিত্র ঘাসের ওপর শরীরটাকে এলিয়ে দিয়ে কথাগুলো বলে। ডিসেম্বরের শেষ বিকেলের আলো তখন নিভু নিভু হয়ে আসছে| সামনের ঝিলের জলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া হাওয়ায় তিরতিরে ঠান্ডা মাঝে মাঝেই  তীব্রভাবে অনুভুত হচ্ছে| একটা বছর যেন তালেগোলে কিভাবে কেটে যেতে চলল‚ আর কটা দিন পরেই শেষ হবে অভিশপ্ত বিষে বিশ বছরটি| যদিও করোনা আবহ পুরোপুরি কাটেনি‚ তবু পার্কের ভিতরের ভিড় দেখে কে বলবে যে এখনো চারিদিকে বিধিনিষেধ বহাল? মাস্ক ছাড়া পার্কে প্রবেশ নিষেধ ঠিকই‚ তবে পার্কে প্রবেশের পর অনেকের মুখেই মাস্কের বালাই নেই| সুপ্তি আজ দ্বিতীয়বার এই পার্কে এল অমিত্রর আহ্বানে সাড়া দিয়ে| এর আগে এসেছিল প্রিয় বান্ধবী রিঙ্কার সাথে| উত্তরাখন্ডে অমিত্র একটি কোম্পানীতে কাজ করে| দিনকয়েকের জন্য কলকাতায় এসেছে| উঠেছে রিঙ্কার বাড়িতে| রিঙ্কার বরের বন্ধু|   ভিড় এড়িয়ে ওরা একটা ফাঁকা জায়গাতেই বসেছ...
আমার প্রেম আছে আলোর কাছে – ডঃ অনুপ দত্ত

আমার প্রেম আছে আলোর কাছে – ডঃ অনুপ দত্ত

কবিতা, কাশবন ২
আমার প্রেম আছে আলোর কাছে ডঃ অনুপ দত্ত আমার প্রেম আছে আলোর কাছে বহুদিন ধরে যত্নে রাখা এই ধন হৃদয়ে সঞ্চয়, তাই হারাই সর্বক্ষণ দানপত্র করে দিতে চাই, কোথায় পাবো সেই জন৷ ০ আমার এক চালাঘর আছে ঝোলায় ভরা অযত্নে রাখা মনের মাঝে গোছানো উঠোন তুলসী মঞ্চ ঘিরে আছে ফুল মাধবী কানন জোনাক জ্বালে সাঁঝের আলো, শ্রাবণ ধারা যেমন৷ ০ আমার এক বোষ্টমী সখা আছে এখানে তার হৃদয় গানে মাধব বেড়ায় হেসে এখানে জীবন অর্থ খোঁজে রবীন্দ্র নজরুল বেশে এখানে সূর্য আপন রঙে হোলি খেলে যায় অনুক্ষণ এখানে যেন ঘরপোড়া গরু হৃদয়ে ভয়,হারাই মন সর্বক্ষণ৷ ৹ এখানে আমার প্রেম আছে আলোর কাছে আলোয় ভরা জোনাক ঘেরা তুলসী মঞ্চে শ্রদ্ধা জোড়া সবই আছে হৃদয়ে দুঃখ হরা, এখানে ভৌগোলিক কাঁটাতার বেশে- আমি শুধু নাই আমার অনন্ত নিরিবিলি দেশে ৷ ************************************************** ডঃ অনুপ দত্ত পরিচিতি: কবি অনুপ ...
আলোর অমল কমলখানি কে ফুটালে – মল্লিকা রায়

আলোর অমল কমলখানি কে ফুটালে – মল্লিকা রায়

কাশবন ২, গান নাচ ও বাদ্য
https://youtu.be/KKJQVkdMyC4 মল্লিকা রায় পরিচিতিঃ অধুনা হাওড়া নিবাসী মল্লিকা ছোটবেলা থেকেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও রবীন্দ্রসঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। ইংরেজীতে স্নাতকোত্তর হয়ে ১৯৮২ সালে ভারতীয় জীবন বীমা নিগমে যোগদান করেন তিনি ৷ অফিসার পদ থেকে অবসর গ্রহণ করে এখনও তিনি নিরন্তর সঙ্গীতের সাধনায় নিয়োজিত ৷ তিনি স্বনামধন্য রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ডঃ স্বপ্না ঘোষালের ছাত্রী ৷...
রায়পুর জমিদারবাড়ি – পরাগ ভূষণ ঘোষ

রায়পুর জমিদারবাড়ি – পরাগ ভূষণ ঘোষ

কাশবন ২, গল্প
রায়পুর জমিদারবাড়ি পরাগ ভূষণ ঘোষ মনুষ্য ধর্ম বিশেষত আমাদের মতো সাধারণ বাঙালী হঠাৎ কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হতে না পারলে যখন দিশাহীন অবস্থায় হাবুডুবু খান, সেই সময়েই ত্রাণকর্তা রূপে গুরুদেব, শান্তিনিকেতন, বোলপুরকে আঁকড়ে ধরে পরিত্রাণ পাওয়ার চিরাচরিত প্রথা আমিও অনুসরণ করতে বাধ্য হলাম। বন্ধুবর ব্যানার্জীমশাইয়ের অনুরোধকে (যেটাকে আমি আদেশ বলেই মেনে নিয়েছি) উপেক্ষা করার ধৃষ্টতা আমার নেই। বীরভূমের নামের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে চলে আসে লালমাটি, মাদল, ধামসা, বিশ্বকবি, শান্তিনিকেতন, দশমহাবিদ্যা, একান্ন পিঠ, সোনাঝুড়ি হাট ইত্যাদি। এই তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর এবং ক্রমবর্ধমান। কিন্তু, না জানা বা স্বল্প জানা ইতিহাসের পাতাও ছড়িয়ে আছে এই জেলায়। সেরকমই একটি গ্রামের নাম রাইপুর বা রায়পুর। ভৌগলিক ভাবে বোলপুর স্টেশন থেকে ইলামবাজার যেতে সাত আট কিমি দূরে এই গ্রাম। অপরপক্ষে ইলামবাজার থেকে চোদ্দ পনেরো কিমি। রায়পুর-সুপুর ...
বেগুনি রঙের আলো জন্ম – পৃথা রায় চৌধুরী

বেগুনি রঙের আলো জন্ম – পৃথা রায় চৌধুরী

কবিতা, কাশবন ২
বেগুনি রঙের আলো জন্ম  পৃথা রায় চৌধুরী ⁠অ্যাসফল্ট খোবলানো যায় দেখতেই পাচ্ছিস, আর সার সার ফুটপাথ মাখা গাছের নিচে জমে থাকে থ্যাঁতলানো জামের বেগুনি রক্ত... গোটা জাম খাস, আলোকলতা? আলোকলতা, তুই এমন পেঁচিয়ে শাড়ি জড়াস বুকে? চায়ের ঠেকের ভাঁড় চলকে যায় ছলকে ছলকে আসে আনাড়ি দাগ অ্যাম্বুল্যান্স ডাকি, দাগ তুলে ফেলি তড়িঘড়ি তোর কোলে কোন স্পার্ম অফ্‌? মুখে ওড়না বাঁধিস, কোঁচড়ে খুচরো দশ পাঁচ, ইস্কুল গেটের বাইরে হজমিগুলি বিকোয় না এখন অফিস গেট, ডেকার্স লেন, কোথায় কোথায় যাস আলোকলতা? আমি অভিধান মুখে জামের ইংরাজি খুঁজি খুঁজি খসে পড়া হলদে খয়েরি পাতাটাতার ফরাসি শব্দ। আলোকলতা তোর নাম, তাই তো? ************************************************* ড. পৃথা রায় চৌধুরী পরিচিতিঃ জন্মস্থান ভারতবর্ষের ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ শহরে। সাহিত্য চর্চা শুরু, ছোটবেলা স্কুলে থাকতেই। প্রাণীবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ও পরি...
ঝরা পাতার কবিতা – শ্রীময়ী গুহ

ঝরা পাতার কবিতা – শ্রীময়ী গুহ

কবিতা, কাশবন ২
ঝরা পাতার কবিতা   শ্রীময়ী গুহ কবিতা লেখার জন্য একটু বেদনা লাগে! একটু বালিশ ভেজা কান্না.... আর লাগে এক ছটাক ব্যর্থ প্রণয়! তুমি কিচ্ছু জানো না কবি! কবিতা লিখতে গেলে গরীব হতে হয়। মনে গো মনে! হৃদয়ের অভ্যন্তরে অভূক্ত তৃষ্ণার্ত চাতক হতে হয়! ও গোঁসাই! বাস্তবে নয়..... গরীব হতে হয় শুধু একাকীত্বের আখর খাতায়!! কবিতা লিখতে মন লাগে! একটা গোটা মন! ভাঙা মন হলে আরও ভালো লেখা হয়! আসলে লেখনীতে শব্দ আসেনা; আসেনা নুপূরের বা সেতারের ঝঙ্কার! তাও ভালোবাসার এ এক অলিখিত সেতু পারাবার! একটা কফি হাউস লাগে  জানো! চিলতে কলেজ স্ট্রিট, ছোট্ট চায়ের কেবিন, বা নিদেনপক্ষে.....ট্রামলাইনের অহেতুক হঠাৎই জলেভেজা! অথবা.... কোনো ছাতের পুরোনো চিলেকোঠার  কম্পন চুম্বনে চিঠি দিয়েও, বন্ধনে ডানা ঝাপটানো প্রেমে মুক্তি   খোঁজা! ঘাসজমি ,আলপথ শহরতলীর.... বেফসলা মাঠঘাট, পটভূমি........ একটু তো লাগেই গো! আজ ...
বৃষ্টিনদী – শ্রাবণী বসু 

বৃষ্টিনদী – শ্রাবণী বসু 

কবিতা, কাশবন ২
বৃষ্টিনদী শ্রাবণী বসু  চালচুলোহীন একখানা মেঘ বৃষ্টি হয়েছে তোমার জন্য, কঠিন শিলা উত্তাপে গলে গিয়ে ঝরছে ঝরঝর ...ঝরঝর...ঝরঝর...! এ কী ! ছাদের আড়াল দিলে যে ? মেঘেরা দুঃসাহসী কিন্তু বেহায়া নয়, অদম্য কিন্তু অশালীন নয়।  আকাশের নীচে ভুবন জুড়ে দাঁড়াও শুধু একটা মুহূর্তের জন্য - তুমি আর ক্রন্দসী সমার্থক হয়ে যাও। ওভাবেই দাঁড়িয়ে থাকো- বুকের বোতাম খুলে। তোমার বাদামি বুকে নীল জলের নদী হয়ে যাবে বৃষ্টি । ********************************************** শ্রাবণী বসু পরিচিতি: পেশা শিক্ষকতা। কবিতা যাপনে যে সুখ পান,তেমনটি আর কোথাও পাননা। আর সেই কারণে কবিতা পাঠ করার সাথে সাথে লেখালিখি চলতে থাকে। প্রকাশিত যৌথ কাব্যগ্রন্থ: দ্বিপ্রহর-১ (প্রিয়মুখ প্রকাশনী বাংলাদেশ) ফেলে আসা শহর (বিভা পাবলিকেশন,কলকাতা) দুই বাংলার লতিফা কলস (২০১৭),(২০১৮),(২০১৯) সম্পাদক ডঃ অনুপ দত্ত পাল তুলে দিই কবিতায় ...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!