দারুশিল্পীদের গ্রাম নতুনগ্রামের ইতিকথা
সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়
রংবেরঙের বিচিত্র গড়নের বিভিন্ন রকমের পুতুল। সবই কাঠের পুতুল। উজ্জ্বল নানা রঙের বৈভবে গোল গোল চোখওয়ালা তিন কোণা ছোটো-বড় পেঁচাগুলো সবার আগে নজর কাড়ত। রাজা-রানী,বর-বউ বা উদ্বাহু নৃত্যরত গৌর-নিতাই পুতুলগুলো দেখেও মজা পেতাম। নিজের হাতে বানানো এইসব পুতুল ঝুড়িতে সাজিয়ে বিক্রি করতেন এক ফেরিওয়ালা। জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় চন্দননগর স্টেশন রোডে শ্যাম মাস্টারের গলির কাছে। প্রতি বছর মোটামুটি একই জায়গায় তিনি তাঁর পসরা নিয়ে বসতেন। তাঁকে দেখলেই 'ভানু পেলো লটারী' ছবিতে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'লিপ'-এ শ্যামল মিত্রের গাওয়া 'পুতুল নেবে গো পুতুল' গানটা মনে পড়ে যেত। গানটা সেইসময় রেডিওতে প্রায়ই বাজানো হত। 'সেইসময়' বলতে আমার তখন শৈশবকাল। স্কুলে নীচু ক্লাসে পড়তাম। একবার একটা পেঁচা কিনেছিলাম। আর একবার একটা বউপুতুল। সেটিকে দেখতে অনে...
অতি পরিচিত গল্প
ব্রতী ঘোষ
আজকাল অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে আমার আর ভালো লাগে না | বাস থেকে নেমে পাড়া দিয়ে হেঁটে যখন বাড়ি ফিরি তখন আমার পা দুটো আর চলে না কারণ বাড়িতে প্রায় প্রতিদিনই লীনা আর মায়ের কথা কাটাকাটি লেগেই থাকে ৷ লীনার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে বছর তিনেক আগে ৷ আমি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান,মার নয়নের মণি ৷ মা অনেক কষ্ট করে আমাকে মানুষ করেছেন আর সে কথা পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনকে বলতে বেশ গর্ব বোধ করেন ৷ বাবার ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের বদলির চাকরি-সবে দু বছর হলো অবসর নিয়েছেন ৷ বারো ক্লাস পর্যন্ত প্রতিদিন মা সাথে করে স্কুলে,টিউশনে নিয়ে গিয়ে বসে থেকেছেন ৷ মার পরিশ্রমের মূল্য আমি দিয়েছি,আইটি সেক্টরে বেশ বড় একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে মোটা মাইনের চাকরি করি আমি ৷ ও হ্যাঁ,বলতে ভুলে গেছি,আমি তন্ময় চক্রবর্তী ৷ চাকরি পেয়ে মার পছন্দ করা সর্বগুণসম্পন্না মেয়েকে বাড়ির বউ করে এনেছ...
ব্যান্ডেল চার্চ এবং তৎকালীন ইন্ডিয়া
সুলগ্না চক্রবর্তী
খবর পাওয়া মাত্র মাহমুদ শাহ চোখে অন্ধকার দেখলেন। কী করবেন ভেবে পেলেন না। পশ্চিম থেকে শেরশাহ আসছে তাঁর রাজ্য আক্রমণ করতে। এই আক্রমণ রুখে দেওয়ার মতো লোকবল তাঁর কাছে থাকলেও তা যে খুব একটা কার্যকর হবে না তা তিনি জানতেন। তাই খবর পাঠালেন গোয়াতে পর্তুগীজদের কাছে , সাহায্যের জন্য। পর্তুগীজরা সাহায্য করতে রাজি হলো একটা শর্তে। মাহমুদ শাহ ভেবে দেখলেন আগে তো রাজ্য সামলানো যাক তারপর পর্তুগীজদের ব্যবসা করার অধিকার নিয়ে ভাবা যাবে। রাজি হয়ে গেলেন তিনি।
মাহমুদ শাহের রাজ্য আক্রমণ করলেন শেরশাহ বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে। পর্তুগীজদের কিছু করার ছিলো না এবং গৌড় দখল হলো। শেরশাহ প্রচুর স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে গৌড় ছাড়লেন আর এই যুদ্ধে পূর্ব শর্ত অনুযায়ী পর্তুগীজরা গৌড়ে বাণিজ্য করার অধিকার পেলো। যখন সপ্তগ্রামে পর্তুগীজরা বাণিজ্য করে মোটা লাভের মুখ দেখবো দেখ...
হায়দার আলি এবং দাক্ষিণাত্যের প্রথম ব্রিটিশ বিরোধী সামরিক জোট
দীপাঞ্জন মাইতি
আজ থেকে প্রায় আড়াই শো বছর আগে ভারতবর্ষ তখন ছোট বড় অজস্র রাজ্য–অঙ্গরাজ্যের সমষ্টি মাত্র। স্বভাবতই নিজের নিজের ক্ষমতা আর রাজত্ব বিস্তারই প্রতিটি রাজার লক্ষ্য। প্রতিবেশী রাজ্যেরা নিজেদের মধ্যে অনবরত যুদ্ধে ব্যস্ত। যুদ্ধ জয়ের অদম্য স্পৃহায় রাজারা বিদেশী বণিক বাহিনীর সাহায্য নিতে লাগলেন। এই সুযোগে বিশেষ করে ব্রিটিশ এবং ফ্রেঞ্চ কোম্পানি বহির্বিশ্বের যুদ্ধ টেনে আনলো ভারতের মাটিতে একাধিক যুদ্ধে যুযুধান রাজাদের পক্ষ নিয়ে মাঠে নামল বিদেশী বণিক বাহিনী। একদিকে জয় পরাজয়ে ক্ষত বিক্ষত হতে লাগলো তৎকালীন ভারতীয় রাজারা আর সবার অলক্ষ্যে একে একে সমস্ত দেশী বিদেশী শক্তিকে পর্যদুস্ত করে ক্রমশ জাঁকিয়ে বসল ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এমন সময় যখন আপতদৃষ্টিতে প্রতিবেশী বিদেশীর চেয়ে বড় শত্রু এক রাজা! না ঠিক রাজা হয়ত নয় সেনাপতি,নবাব বা ...
সা র প্রা ই জ
প্রত্যুষ সেনগুপ্ত
-আরে? আপনি কে? আপনি আমার প্রোফাইলে ঢুকলেন কীভাবে?
চমকে গেলাম।আজ রবিবার।অফিস নেই।রুমমেট একসপ্তাহের জন্য ছুটিতে। বাড়ি গেছে।গতকাল পর্যন্ত বেশ চাপ ছিলো কাজের।আজ শুধু কুঁড়েমি করব।গাড়িটা সার্ভিসিং য়ে গেছে।সকালে দুবার কফি একবার চা হয়েছে।ব্রেকফাস্ট সারা।রান্না করে চলে গেছে যমুনামাসী।
ল্যাপটপ খুলে এদিক সেদিকের পর ফেসবুক খুলতেই এমন ঝাঁঝালো সওয়াল।বেগতিক দেখে আঙুলগুলোও যেন তোতলাতে থাকে।আমি লিখলাম
-মানে আমিতো কিছুই করিনি।ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট লিস্ট দেখতে গিয়ে কয়েকটা নামে ক্লিক করেছিলাম কাল রাতে।আপনার নামে করেছি কি না সেটা মনে করতে পারছি না।
-কিন্ত আমি কখনোই আপনার কাছে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাইনি তো?
বুঝতে পারলাম কোথাও একটা মারাত্মক ভুল হয়েছে।আমি মহিলাদের থেকে একটু দূরে দূরে থাকতেই ভালোবাসি।আমি কিন্ত হিপোক্রিট নই।স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটিতে কো এড্। চাকরিতে ও অনেক মহিলা ...
“বিজনেস”
কলমে:- অঙ্কন দন্ড
শিক্ষা শিক্ষা শিক্ষা!
এর ব্যবসা ভালো।
শিক্ষক তো বিজনেসম্যান,
জ্ঞান এল ই ডি জ্বালো।
টাকা কড়ি,পড়াশুনা
কে বলো তো আগে?
না ঝরালে অর্থ থোড়াই
জ্ঞানের আলো জাগে?
ম্যানেজাররা কোম্পানিতে
আনেন নতুন প্ল্যান,
শিক্ষা বেচে লাখপতি হয়
কত বিজনেস ম্যান।
সেফ গেম তারা ভালোই খেলে,
স্টুডেন্ট তুই বোকা!
বন্দুক তো তোদের ঘাড়েই
বুঝলে কিছু খোকা?
অযাচিত মেসেজ কেন?
কেন কনসেন্ট লেটার?
বাঁচিয়ে চল বাপ নিজের পিঠ
ইট ইজ ফার বেটার।
স্টুডেন্ট সবাই বুঝবে যবে
ব্যবসায়ীদের কান্ড,
শিক্ষা থাকবে,কেবল হবে
ব্যবসা লণ্ডভণ্ড।
***********************************
অঙ্কন দণ্ড পরিচিতিঃ
জন্ম ২০০৩ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারী। বাসস্থান পুরুলিয়া জেলার আদ্রায়। মাতার নাম বনশ্রী দণ্ড,পিতার নাম স্নেহাশিস দণ্ড। অঙ্কনের লেখালেখির পথ চলা কবিতা দিয়ে। আনন্দবাজার পত্রিকার জেলার পাতা "ছোটদের পাতা" শী...