https://youtu.be/NRDp3KcAw1k
মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় -
জন্ম কলকাতায়, বেড়ে ওঠা দুর্গাপুরে ৷ পড়াশোনা করেছেন বিশ্বভারতী এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৷ এম এ, এমফিল, পিএইচডি করে, তিনি কলকাতার একটি কলেজে দীর্ঘদিন অধ্যাপনার কাজে যুক্ত সেই ১৯৯৭ থেকে। কবিতা পড়া ও আবৃত্তি করা হলো ভালোবাসা।
আগন্তুক
নাজির হোসেন বিশ্বাস
"কে বাবা তুমি, চোখ মুখ দেখে তো মনে হচ্ছে খুব কষ্টে রয়েছো?" কোন কথা না বলে শুধু একবার চেয়ে দেখলো আগন্তুককে। বাপের বয়সী’ই হবে। তিনি খেয়াল করলেন, ছেলেটির চোখ ছলছল করছে, এক টোকাতেই যেন বৃষ্টির ফোঁটা ঝরঝর করে ঝরে পড়বে। আগন্তুক পাশে বসে, পিঠে হাত রাখতেই গ্রীষ্মের শুকিয়ে যাওয়া লতায় বৃষ্টির ছোঁয়া পাওয়ার মতো যেন স্নেহের পরশ লাগলো, সেই স্নেহের ছোঁয়ায় হাউহাউ করে কেঁদে উঠলো চব্বিশ পঁচিশ বছরের তরতাজা যুবক। আগন্তুক ভদ্রলোক পিঠে থাবা দিয়ে বলতে থাকেন, কাঁদিস না বাবা, কি হয়েছে বল আমাকে। জানিস না,“বিপদে মোরে রক্ষা করো এ নহে মোর প্রার্থনা, বিপদে আমি না যেন করি ভয়।“ আগন্তুকের কথায় যেন ছেলেটি কোন আপনজনের সান্নিধ্য পেল। নিজেকে সংবরণ করে নিয়ে,"আব্বু এই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন দু’সপ্তাহ থেকে। "ভদ্রলোক মুখে দুঃখসূচক শব্দ করে বলে উঠলেন,"তোমার নাম কি বাবা? বাড়ি কোথায়?"
কাঁদ...
বৃদ্ধাশ্রম : সমস্যা? না সমাধান?
সোনালী গুহ
বৈদিক ভারতবর্ষে চতুরাশ্রমের কথা পাওয়া যায়। প্রৌঢ়ত্বে বাণপ্রস্থে যাবার রীতি ছিল। সংসার থেকে স্বেচ্ছায় নির্বাসন।সংসারের সব কাজ সেরে নিজের মতো জীবন যাপন করতে বাণপ্রস্থের পথে এগিয়ে যেতেন তখন সকলে।সংসার ত্যাগ করে ঈশ্বর চিন্তায় দিন অতিবাহ করার জন্য এই ব্যবস্থা। "পঞ্চাশোর্ধে বনং ব্রজেৎ।" বাণপ্রস্থে এইরকমই নিয়ম ছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "কণিকা" কাব্যগ্রন্থের "শাস্ত্র" কবিতায় কবি যদিও বলেছেন,
"পঞ্চাশোর্ধে বনে যাবে
এমন কথা শাস্ত্রে বলে,
আমরা বলি বাণপ্রস্থ
যৌবনেতেই ভালো চলে।" .....
কিন্তু বিষ্ণুপুরাণে আছে,যখন গৃহস্থের নিজ দেহে বলি ও পলিত উপস্থিত হবে এবং যখন পৌত্র ভূমিষ্ঠ হবে,তখন বনে গমন করা কর্তব্য। "Retirement from household life."
সংসারে তখন সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করে,তাদের হাতে সব ছেড়ে বাণপ্রস্থে যাওয়াই শ্রেয়। কিন্তু আমাদের ব...
কবির বিস্মরণ ?
অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য
রবীন্দ্রসঙ্গীতে নিবেদিতপ্রাণ, সঙ্গীতসাধক শ্রী শৈলজারঞ্জন মজুমদার মহাশয় তাঁর অসামান্য স্মৃতিকথা "যাত্রাপথের আনন্দগান" গ্রন্থে তাঁর জীবনে রবীন্দ্র সান্নিধ্যের বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন। সকল ঘটনাই যদিও বহুপঠিত,তবু বার বার ,বিশেষ বিশেষ কিছু ঘটনার কথা পড়লে শৈলজাবাবু ও রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ট ও সহজ সম্পর্কের মধুর ছবি মনে ভেসে ওঠে। সেই সব অনুপম মুহুর্তের ঘটনাবলীর মধ্যে সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক হল শান্তিনিকেতনে ১৯৩৯ সালের বর্ষামঙ্গল অনুষ্ঠানের জন্য কবির কাছ থেকে শৈলজাবাবুর পছন্দের ও ফরমায়েশের একাধারে পনেরটি গান সুকৌশলে আদায় করে নেবার কাহিনী! সেই বহুপঠিত পনেরটি গান রচনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনার মধ্যে না গিয়ে, আমি আজ কেবল একটি মাত্র গান রচনার ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করবো , তার প্রেক্ষিতে আমার ব্যক্তিগত অভিমত ব্যক্ত করবো এবং পরিশেষে পাঠককুলের নিরপেক...
খেলব কখন ?
প্র ত্যু ষ সে ন গু প্ত
সবাই গভীর ঘুমে এখন
আড়মোরা দেয় সুয্যিমামা
এই ভোরে মা ডাকছো কেন?
স্কুলে যাবো? ভাল্লাগে না ৷
ইচ্ছে যে হয় শুয়ে পড়ি
চুপটি করে বাবার কোলে
উপায় আছে? স্কুলের গাড়ি
ঐ বুঝি মা এলো চলে !
দু'চোখে মা ঘুম জড়িয়ে
তার মাঝেতেই ব্রাশ যে দাঁতে
জামা জুতো ব্যাজ টাই পরিয়ে -
দুধের গ্লাসটা ধরাও হাতে ৷
দুই কাঁধে মা দারুণ ব্যথা -
বইয়ের বোঝায় ধরছে যে হাঁপ -
খেলব কখন ? সময় কোথা ?
পড়াশোনার ভীষণ যে চাপ৷
অ্যাত্তোগুলো বই খাতা আর -
হোমটাস্কেই হারায় খেলা !
কাড়ছো কেন তোমরা আমার
এমন সাধের ছেলেবেলা ?
****************************************************
প্র ত্যু ষ সে ন গু প্ত পরিচিতিঃ
সরকারী বেসরকারী মিলিয়ে নানা রকম চাকরী করে এখন বেলাশেষে কলম ধরেছেন। প্রথম চাকরী এক ওষুধ কোম্পানীতে। তারপর চা বাগানে। এরপর দু'দুটি খবরের কাগজে সাব এডিটর। শেষ পর্বে গোপনীয়তায় ভরা সরকারী চাকর...
কিছু স্মৃতি কিছু কথা
ডঃ গৌতম সরকার
পয়লা বৈশাখ কেটে গেলে আমাদের অপেক্ষা শুরু হতো জ্যৈষ্ঠ মাসে জামাই ষষ্ঠীর সময় দুই রাত্রি ব্যাপী যাত্রাপালা অনুষ্ঠানের জন্য৷ একদমই অ্যামেচার,পাড়ার দাদা-কাকারাই অভিনয় করত৷ খুব ছোটবেলায় দেখতাম ছেলেরাই মেয়েদের পার্ট করত,একটু বড় হবার পর দেখেছি ফিমেল (তখন মহিলা শিল্পীদের এই নামেই ডাকা হত) ভাড়া করা হতো৷ কয়েকমাস আগে থেকেই সন্ধ্যের পর ক্লাব প্রাঙ্গণে নাটকের মহড়া শুরু হতো, সন্ধ্যাবেলা পড়তে বসে পড়া থামিয়ে কান একটু খাড়া করলে রিহার্সালের আওয়াজ শুনতে পেতাম; আর বাড়ির প্রয়োজনে সন্ধ্যাবেলা দোকান থেকে কিছু আনতে হলে সানন্দে রাজী হতাম-কারণ তাহলে পড়া থেকে কিছুক্ষণের ছুটি যেমন মিলত, তেমনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ রিহার্সাল শোনার সৌভাগ্য হতো৷ আমাদের সার্ব্বজনীন বেচাদা হ্যারিকেনের আলোয় প্রম্পট করত আর বাকিরা পার্ট বলে যেত৷ তখনো গ্রামে ইলেকট্রিসিটি আসেনি, সম্ভবত আমি যখন ক্লাস সিক্স...
সেলফি
দেবাশিস দণ্ড
না,শেষে চমক দেব না,শুরুতেই বলে রাখি আমি স্বপ্ন দেখছিলাম। স্বপ্নের বইমেলায় ঘুরছিলাম। বই কিনছিলাম না,কারণ বাস্তবেও বই বিশেষ কিনি না। পড়লে চেয়েচিন্তে পড়ি। আদ্ধেক পড়েই ভালো মন্দ বলার অসম্ভব প্রতিভা আছে আমার। তাই পুরোটা পড়তেই হয় না। যেহেতু আদ্ধেক বই বিক্রি হয় না,পুরোটাই কিনতে হয়,তাই আমার কাছে বই কেনা ঠকা। রানুদিকে দেখতে পেলাম। আমার স্বপ্নের রানুদি। আহা কী কন্ঠ! এই কন্ঠই তো ছড়িয়ে পড়েছে রানাঘাট থেকে নানা ঘাটে। আমি সেলফি নেব। রানুদির পাশে দাঁড়ালাম। মোবাইলটা তেরচা করে উপরে তুললাম। রানুদি যথাসম্ভব মিষ্টি করে হাসল,কিন্তু ক্লিক করা হল না।
আনন্দর কাউন্টারের পাশ থেকে রাধারমণ চেঁচিয়ে উঠল-শিগগির আয়,শ্রীজাতদা...শ্রীজাতদা...
রানুদিকে পরেও পাব,পহলে শ্রীজাত। জাতকবি বলতে আমি শ্রীজাতই বুঝি। আমার স্বপ্নের শ্রীজাতদার সঙ্গে ছবি তুলব। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢেউ তুলব। লহরীর পর লহরী তুলিয়া আঘাতের পর আ...
সদা বিরাজ হৃদমাঝারে
অঙ্কন - রতন সেন
*************************************************************
রতন সেন পরিচিতিঃ
চন্দননগর নিবাসী রতন বাবু ভারতীয় জীবন বীমা নিগমে কর্মরত। মানুষটির শৌখিনতা হলো অঙ্কন শিল্প,ফটোগ্রাফি এবং সুরসৃষ্টি ৷ তিনি বিশ্বাস করেন মানবতায় ৷
আঁধার গাছ
মধুমিতা ভট্টাচার্য
আমাদের আঁধার-গাছে রক্তফুল ফোটে
জোনাকি বিছন দেয় হিমকুঁড়ি পাতায় পাতায়
ডালপালা ছুঁয়ে থাকে পালকের চাবি
পিউকাঁহা ভালবাসার মেঠো গান গায়
আমাদের কুয়াশা বাগানে অবাক ভৈরবী
শিকড়ে ব্যথাবিধুর কোমল জলগান
জলের ভেতর ঘুমে থাকে স্নেহমন
আশ্চর্য মোহময় তাদের রূপটান
আমাদের আঁধার-গাছে আলোর সংযম
জলতরঙ্গের মত জ্যোৎস্না উপচায়
হাওয়ার বাসরঘরে আনন্দ বিন্যাস
মায়াজন্ম খসে পড়ে শুকনো পাতায় ।
******************************************************
মধুমিতা ভট্টাচার্য পরিচিতিঃ
জন্ম আসানসোলে,সেখানেই স্কুলবেলা শেষ হলে শান্তিনিকেতনে বাকি পড়াশুনো। লেখালিখির ভালোবাসা হাত ধরে লিখিয়ে নেয় কবিতা,ছোটগল্প বা প্রবন্ধ। একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্বে থাকায় ছোটদের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ তাই খুব ভালোলাগা ছোটদের জন্যে ছড়া বা গল্প লেখা। গান শোনা ও দু-চার কলি কন্ঠে সাজাতে ভালো ল...