Shadow

কবিতা

স্মৃতিরা ফুরিয়ে এলে – শাশ্বতী হোসেন

স্মৃতিরা ফুরিয়ে এলে – শাশ্বতী হোসেন

কবিতা
স্মৃতিরা ফুরিয়ে এলে শাশ্বতী হোসেন প্রথম কবিতা কবে লিখেছিলাম? যেদিন শালকুঁড়ির ফাঁকে ফাঁকে রোদ আল্পনা এঁকেছিল? ঝরনা পাথরের আমোদি পথে তুই যেদিন প্রথম সিগারেট খেয়েছিলি? মনে পড়ছে না। ননীবালা গার্লস স্কুলের প্রেয়ার লাইনে তাপ্তী হঠাৎ সেই গানটি গেয়ে উঠেছিল-- "তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয় / আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁয়ায়--" হেড বড়দি তাপ্তীকে শাস্তি দিয়েছিলেন। নাকি যেদিন চশমা পরা অনামিকাকে দেখে অমিত বলেছিল, "আজি বিশ্বময় ব্যপ্ত গেছো প্রিয়ে / তোমারে দেখিতে পাই সর্বত্র চাহিয়ে..." নাহ, কিছুতেই মনে পড়ছে না। অঙ্কের খাতায় নাকি ভূগোলের মানচিত্রে ভাঁজে.... কোথায় যেন লিখেছিলাম! তারাফেনীর নদীর বিকেলে সুর্য যখন ডুবছিল, আকাশ থেকে আবির ঝরে পড়ছিল। চারপাশ বসন্তবর্ণ ঝিরঝিরে বাতাসের কোরাস-- কোকিলের ডানার ঝাপটানি। তুই পাথরের ওপর দু-হাত মেলে গলা খুলে বলেছিলি, দাও খুলে দাও, খুলে দাও, খুলে দাও সুর, মেলে দাও গ...
একান্ত কথারা – লাবন্য নন্দী

একান্ত কথারা – লাবন্য নন্দী

কবিতা
একান্ত কথারা লাবন্য নন্দী ভীষণ ভীড় চার পাশে, সবাই মত্ত নিজের কাজে। প্রচুর সমস্যা ওদের চলো এই ফাঁকে, দু চারটে কথা বলি। শুধু নিজেদের নিয়ে ভাবি, সময় যে  বড় অল্প, রয়েছে কত গল্প, শেষ করবো কখন? আর দুটো স্টেশন নামতে হবে যখন ছাড়াছাড়ি আবার দুদিনের তখন। ******************************************* লাবন্য নন্দী পরিচিতি লাবণ্য নন্দী বর্ধমানের বাসিন্দা। প্রথাগত শিক্ষা Bsc(fishery), M.A.(Mass communication) । অতীতে বর্তমান পত্রিকাতে বেশ কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা। প্রায় 400 প্রতিবেদন প্রকাশিত এবং পশ্চিম বঙ্গ সরকারের মৎস্য দপ্তর (মীন ভবনে) জল ও মৃত্তিকা বিশ্লেষক এর কাজে নিযুক্ত  ছিলেন। বর্তমানে বিভিন্ন ম্যাগাজিনে লেখালেখি করেন। এছাড়া গান ও ফটোগ্রাফি তে বিশেষ আগ্রহ আছে এবং স্বীকৃতিও রয়েছে।...
লক ডাউন – সুকন্যা দাসগুপ্ত

লক ডাউন – সুকন্যা দাসগুপ্ত

কবিতা
লক ডাউন সুকন্যা দাসগুপ্ত লক ডাউন সময়ে সময় কি লক ডাউন হয়? জীবন কি থেমে যায়? হয় কি জীবন স্পৃহার ক্ষয়? জীবনের খুঁটিনাটির  চরৈবেতি কই, যায় না তো থেমে? ক্লান্ত কাঁধের বোঝা----চাওয়া পাওয়া যায় কি নেমে? পরিযায়ী শ্রমিকের মতো আনাগোনা দিন নামচার ডালি দেখি না তো পড়ে থাকে কভু---একা একা নিষ্ফলা খালি। মৃত্যুর খতিয়ান ঘেরা অস্থির সময়ের ত্রাস বিবর্ণ সমাজের ওঠা পড়া নিত্য করে গ্রাস। সুখী রাতঘুমেরা বাষ্প হয়ে পোড়ায় দুচোখ ত্রস্ত মন চায় ধস্ত সময় অবসান হোক ভোরের মিঠে আলো ভুলেছে সঞ্জীবনী পরশ তাড়া করে, পিছু ধায়, হতাশার হারানোর তরস বয়ে চলে লক ডাউন, বয়ে চলে ভয় তিরতির আশাহীন দিগন্তে তবু আশা, কাটবেই এ তিমির।। ************************************************ সুকন্যা দাসগুপ্ত পরিচিতি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। সাহিত্য কে সঙ্গী করে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু...
দাম্পত্য – নবনীতা সাঁতরা দে

দাম্পত্য – নবনীতা সাঁতরা দে

কবিতা
দাম্পত্য নবনীতা সাঁতরা দে আলমারির দরজায় দুজনকে পাশাপাশি দেখা যেত না। একজনকে দেখা গেলে অন্যজন চলে যেত আড়ালে, যেমনটা হয়ে থাকে দাম্পত্য জীবনে। আমি চোখে কাজল লেপতে এলে তোমার চুলের সিঁথি সোজা হতো না, মুখে কপট বিরক্তি নিয়ে সরে জেতে দাম্পত্যের রোজনামচায়। রোজ সকালে বাসি বিছানা গোছানোর সময়, সাহায্যের হাত না বাড়ানোর অকর্মণ্যতা বোঝাতে গিয়ে যখন রাগে নীতিবাক্য আউরেছি, তুমি তখন না শুনেই সরে গেছো অকাজের অছিলায়। তবু জীবন তৃপ্ত থাকে বিছানা গোছানোয়। দাম্পত্য বেঁচেছে এভাবেই। তোমার অফিস মোজা আর আমার মুখ মোছা রুমাল, একসাথে কেচে ধুয়ে রোদে শুকিয়েছে, তারপর আবার জলেও ভিজেছে অনেকগুলো বছর। যেভাবে পাশাপাশি থেকে যায় দাম্পত্যের আলোছায়া। একসাথে পথে বেরিয়ে হেঁটেছ একগজ আগে নয়তো একগজ পিছে। মনে হয়েছে এর চেয়ে একলা চলাই ছিল ভালো। তবু খানিক পথ পেরিয়ে দাঁড়িয়েছ অপেক্ষায়, যেভাবে বহু পথ অতিক্রম করা যায় কোন এক স...
শেষ পৃষ্ঠায় দেখুন – মধুপর্নি  চট্টোপাধ্যায়

শেষ পৃষ্ঠায় দেখুন – মধুপর্নি চট্টোপাধ্যায়

কবিতা
শেষ পৃষ্ঠায় দেখুন মধুপর্নি  চট্টোপাধ্যায় রোজ সকাল হলে দেখি দৌড়ে দৌড়ে ওরা যায়  - ওদের দৌড়োনো দেখে জানলা দিয়ে উঁকি দেয় বুড়ো শালিকেরা চিৎকার করে বলে - "লক্ষ্য তো স্থির - এবার এগোও" কচি ঘাস অনাবৃত একটা শুকনো মাঠে দৌড়োয় ছোট - বড়ো - মেজো রা আমি গেলে ওরা ভয় পায় ওদের চোখে কখনো বা ভাসে তীব্র বিরক্তি আমার শরীরে নেই দৌড় - চাঞ্চল্য ছাপ পড়ে না শৈশব, কৈশোর কিংবা যৌবনের, আমাদের মতো বুড়ো বট গাছের সাথে তাই ওদের ঠিক জমে না চাঞ্চল্য-হীন জীবনে হিসেব রাখি আকাশলীন লেনদেনের আর ওরা হিসেব ধরে - কোনো গন্ধযুক্ত অঙ্কের ।। ********************************************** মধুপর্নি চট্টোপাধ্যায় পরিচিতি বাংলা সাম্মানিক প্রথম বর্ষের ছাত্রী। কবি, আবৃত্তিকার ও বাচিক শিল্পী। বাংলা সাহিত্য এবং সুস্থ সংস্কৃতির অনুরাগী।      ...
বলা যায় – অনুপ ঘোষাল

বলা যায় – অনুপ ঘোষাল

কবিতা
বলা যায় অনুপ ঘোষাল নিভৃতের দিকে হেঁটে গেলে বৃষ্টিরা বৃষ্টির সাথে মিশে যায়। মেঘেরাও ফেলে আসে নামডাক, আদরে জড়িয়ে ধরে কুয়াশা গন্ধমাখা মিহি সন্ধ্যার গান। এলানো দুপুরগুলো রাখা থাকে নোঙরবিহীন। গাছে গাছে এলোমেলো শীত ফুটে থাকে! বড় বেশি মিঠে লাগে কাকভেজা বিডিও অফিস। একটু বাঁদিকে গেলেই বোধগম্য নদী-ঋণ, ধোয়ামোছা জাতীয় সড়ক। এরা সব মুখ বুজে থাকে অবুঝ তালুর ভিতর। শেষ বাস চলে গেলে দৃষ্টি সরিয়ে রাখে মাইলফলক। একসাথে ভিজে যায় ঝুঁকে থাকা ল্যাম্পপোস্ট, আনমনা বীজধান আর অনর্গল চাঁদ। নোনা দেওয়ালের গায়ে সযত্নে আঁক কেটে যায় কেউ। ফেলে যায় দোরগোড়া কিছু। তাঁকেই সম্পূর্ণ ভাবি! ভেবে ফেলি শূন্যতর সুখ! সেই ভুলে, নিজেকে সাজিয়ে রাখি সম্পন্ন তাঁবুর আড়ালে। ঠিক যেন তোমাদের পাড়া। মুড়ে নিতে চাই সবটুকু মায়া সোহাগী থলিতে। তারপর চড়ে বসি অলীকের পিঠে অবুঝ শিশুর মতো। রেডিওটা বেয়াদপ বড়! বারবার বলে চলে - ...
স্বাধীনতা – সন্দীপ মুখার্জী

স্বাধীনতা – সন্দীপ মুখার্জী

কবিতা, শ্লোক থেকে ব্লগ
স্বাধীনতা সন্দীপ মুখার্জী নিশীথরাতের অগ্নিবাসর--- নেশাতুর নৃত্য দোদুল ছায়াঘন কায়া সকল, বিচিত্র এক জীর্ণ স্থাবর ! পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার স্বাধীনতায় তারাই মুখর ; অবক্ষয়ের ভাঙন মাঝে রাঙা চোখের এ কোন আখর ?? চল নীলিমা, অনেক হলো !! শাল সেগুনের গন্ধ মাখি--- ধামসা মাদল পলাশ রাঙা, লাল ফাগুয়ার নেশায় সখী।। মন মহুয়ার মনমহলে বেণীর দোলায় বাঁধন খুলি--- লালিগুরাসের ছায়াতলে, অচিন পাখির মায়া কাকলি। তার ধুনে আয় 'বিহু' নাচি--- রাজার আগল খুলবো আজি, চল নীলিমা দু'জনেতে স্বাধীন হয়ে আবার বাঁচি।। ************************************************ সন্দীপ মুখার্জী পরিচিতিঃ কলকাতা নিবাসী এই কবি শিক্ষা গ্রহণ করেছেন চারু ও কারু কলা বিভাগের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ইন্ডিয়ান পেইন্টিং বা অবন ঠাকুর, নন্দলাল বসুর ঘরানার ছাত্র হয়েও, পরবর্তীতে ঘরানার গন্ডী পেরিয়ে বিমূর্ততার মাধ্যমে রঙ, রূপ, সুর ও কথ...
অপরূপা কৌশানী – ডঃ স্বয়ংদীপ্ত বাগ

অপরূপা কৌশানী – ডঃ স্বয়ংদীপ্ত বাগ

কবিতা
  অপরূপা কৌশানী ডঃ স্বয়ংদীপ্ত বাগ পাহাড়িয়া রাণী তুমি, অপরূপা কৌশানী, হিমালয়ের অন্তঃপুরে, সবুজে সবুজে ভরে, তুমি একখন্ড শান্তি-স্থল, স্তব্ধ কিন্তু প্রাণোচ্ছ্বল! সামনে দিগন্ত জুড়ে— বরফে শিখর মুড়ে, আলোছায়ার ফাঁকে ফাঁকে, নতুন ছবি ঝলকে-পলকে, নাম না জানা ফুলের মেলায় এদিক ওদিক উপত্যকায়, হিমেল হাওয়া শিরশিরিয়ে, পাইন বনে যায় হারিয়ে ।  যতদূর চাই --- শেষ যেনো নাই, পাহাড় আকাশ – হলো এক ঠাঁই, এতো মায়াবী, কুমারী প্রকৃতি, অন্য কোথাও দেখিনি; স্মৃতি-সুখের সাথীও তুমি, অপরূপা কৌশানী ।। **************************************************** ডঃ স্বয়ংদীপ্ত বাগ পরিচিতিঃ ভূগোল নিয়ে গবেষণা, পেশায় শিক্ষক। কিন্তু  প্যাশন  ভ্রমণ ,সাহিত্য ও সংগীত চর্চায় (সেতার)। বিভিন্ন সংবাদপত্র ও পত্রিকায় নিয়মিত লেখক ।লেখালেখির প্রয়াস সীমাবদ্ধ মূলতঃ প্রবন্ধ ও কবিতায় প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দুই। এছাড়া ব...
অবিমৃষ্য – সাজেদুল হক

অবিমৃষ্য – সাজেদুল হক

কবিতা
অবিমৃষ্য সাজেদুল হক যুক্তিহীন মানুষের কণ্ঠ বড়, নাটাই কাঁটা ঘুড়ির মতন ছুটে চলে একা; কিছু মানুষ যুক্তিহীন হয়। কিছু মানুষের লুণ্ঠিত প্রেম অধর স্পর্শ করে স্বপ্নজালে, বেহিসেবি লেনাদেনায় । কিছু মানুষের মন ভালো নেই একলা আকাশ একলা প্রহর নিয়ে একা; কোনো পিছুটান নেই। কিছু মানুষ নিরামিষাশী মাংসের খিদে নেই , গোপন ক্ষত নিয়ে ঘরে এদিক সেদিক। কিছু মানুষের কামুক হৃদয় তৃষ্ণায় বুদ হয়, নগ্নরাত্রির ভেলা ভাসায় দ্রাঘিমা রেখায়। কিছু মানুষ বিশ্বাসের উষ্ণ চাদরে ঢাকে বুকের জমিন । কিছু মানুষ হয় ভালোবেসে, না হয় ভালোবাসায় খুন হয়। কিছু মানুষ যুক্তিহীন হয়।। সাজেদুল হক পরিচিতি – জন্মঃ সেপ্টেম্বর, ১৯৭০। শিক্ষা - বালিগাও প্রাইমারী স্কুল, ভানুগাছ, কমলগঞ্জ। বশিরউদ্দিন আদর্শ হাইস্কুল, মিরপুর। বাঞ্চারামপুর এস এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বাঞ্চারামপুর। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়।বাল্যক...
স্বপ্নসুখ – পার্থ প্রতিম মিত্র

স্বপ্নসুখ – পার্থ প্রতিম মিত্র

কবিতা
স্বপ্নসুখ পার্থ প্রতিম মিত্র একমুঠো আবির ছড়িয়ে দিই রক্তমাখা হৃদয়ে, ভালোলাগার আবেশে চোখ বুজে আসে... মুঠোফোনে হাতরাই ভাষা ভাষা চোখ বিস্মৃতির গভীরে ডুবে। পাড়ভাঙ্গা শব্দ ধেয়ে আসে ঝাউবন পেড়িয়ে... নিকষ কালো অন্ধকার সন্ সন্ বাতাসে দোল খায়... আমি দুহাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরি নিঃশব্দ পৃথিবীকে... বড়ো একা লাগে নিজেকে। কাল এসে দাঁড়ায় সামনে পেছনে চারদিকে, সময় যায় থমকে... অস্পষ্ট মৃদু পদচারণের ধ্বনি শুনতে পাই.. আমি হারিয়ে যাই বহুদুরে সমুদ্রের ফেনার সাথে ভাসতে ভাসতে... হটাৎ আলোর রোশনাই ধেয়ে আসে অন্ধকার চিরে, আমি মুক্তির আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাই, আত্মদর্শনের পরিতৃপ্তি বাঁচার মোহে ফিরিয়ে নিয়ে আসে আমায়, এইতো আমি দাঁড়িয়ে আছি স্বপ্নের মাঝে খুশির হাওয়ায়। স্বপ্ন ভেঙে যায়...... ঘামে ভেজা আমি চোখ মেলে দেখি আমার একান্ত আপন পৃথিবী, সবুজ মাটি স্বপ্ননীল আকাশ ভোরের ঠান্ডা বাতাসে...বড়ো মায়াময়। ***********...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!