Shadow

পাকা চুলের কলমে

কর্মজীবনে অবসরপ্রাপ্তদের নিজস্ব বিভাগ

বেলুড় মঠে দুর্গাপূজা – বিজিত কুমার রায়

বেলুড় মঠে দুর্গাপূজা – বিজিত কুমার রায়

পাকা চুলের কলমে
বেলুড় মঠে দুর্গাপূজা বিজিত কুমার রায় স্মৃতির পাতা থেকে............... অনেক দিন ধরেই স্বামী বিবেকানন্দের মনে এই ইচ্ছেটা ছিল যে তিনি বেলুড়মঠে দুর্গাপূজো করবেন। কিন্তু নানা কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে বেলুড়মঠ প্রতিষ্ঠার পর স্বামীজি প্রায়ই তাঁর প্রিয় বেলগাছতলায় বসে সম্মুখে প্রবাহিতা গঙ্গার দিকে তাকিয়ে আপন মনে গাইতেন ‘‘…বিল্ববৃক্ষমুলে পাতিয়া বোধন/গণেশের কল্যাণে গৌরীর আগমন।/ঘরে আনব চণ্ডী, কর্ণে শুনব চণ্ডী,/আসবে কত দণ্ডী, জটাজুটধারী"। এরপর একদিন ১৯০১ খ্রিস্টাব্দের মে-জুন মাস নাগাদ স্বামীজির অন্যতম গৃহী শিষ্য শরৎচন্দ্র চক্রবর্তী বেলুড়মঠে এলে বিবেকানন্দ তাঁকে ডেকে রঘুনন্দনের ‘অষ্টবিংশতি তত্ত্ব’ বইটি কিনে আনার জন্য বললেন। শরৎচন্দ্র চক্রবর্তী কৌতূহলী হয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘আপনি রঘুনন্দনের বইটি নিয়ে কি করবেন?’ স্বামীজি বললেন, ‘এবার মঠে দুর্গোৎসব করবার ইচ্ছে হচ্ছে। যদি খরচ সঙ্কুলান হয় ত মহ...
রামগড় পর্বত শিখরে – অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য

রামগড় পর্বত শিখরে – অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য

পাকা চুলের কলমে
রামগড় পর্বত শিখরে অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য সম্প্রতি সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে যে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শাখা খুলবার সিদ্ধান্ত সরকারী অনুমোদন লাভ করেছে এবং সেই শাখাটি  স্থাপিত হতে চলেছে উত্তরাখণ্ড প্রদেশের কুমায়ুন অঞ্চলের অন্তর্গত "রামগড়"* নামক একটি স্থানে। এই আপাত অখ্যাত "রামগড়" স্থানটিতে বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় শাখা নির্বাচনের তাৎপর্য্য সাধারণ পাঠককুলকে অবগত করাতেই আমার এই নিবেদন। আর তার জন্য বর্তমান সময় থেকে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে প্রায় এক শতাব্দীরও কিছু বেশী সময় আগে। আসুন আমরা সেই অতীতের পথে কালান্তরে ভ্রমণ শুরু করি। কাহিনীর শুরু এক কিশোরের পথচলা দিয়ে। কলকাতার এক অভিজাত পরিবারের সেই কিশোরের পিতা তাঁর পুত্রকে এক আদর্শ  ব্রহ্মচর্যাশ্রমে প্রতিপালিত করে তুলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাই তিনি তাঁর পুত্রকে ব্রহ্মচর্যাশ্রমের কঠোর জীবনের প্রত্যক্ষ অনুভবের স্পর্শে দীক্ষিত করার উদ্দেশ্যে পদব্রজে তীর্থ...
প্রেমের আখর – অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য

প্রেমের আখর – অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য

পাকা চুলের কলমে
প্রেমের আখর অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য "আমার খেলা যখন ছিল তোমার সনে, তখন কে তুমি তা কে জানত ...." ১৯১৬ সালের ঘটনা দিয়ে শুরু করছি। আট বছরের এক ছোট্ট মেয়ের গল্প! কলকাতার থেকে অনেক দূরে, এক  ছোট পাহাড়ী শহরে(১) ছিল তার বাস। পড়াশুনো সেই শহরের "লরেটো কনভেন্ট" স্কুলে। ইংরেজি মাধ্যমে পড়লেও বাংলা ভাষার পাঠ সে তার বাড়িতেই নিয়েছিল।একদিন  বইয়ের তাক থেকে একটা পাতলা মলাটের সরু বই , রবিবাবুর লেখা "খেয়া" নিয়ে তার মা তাকে বললেন "এটা তোমার।" সত্যিকথা এই, যে মেয়েটি বইটি পড়বার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু লেখার একবর্ণও বুঝতে না পেরে বইয়ের তাকেই সেই বই  রাখলো ফেলে। পরে একদিন তেঁতুলের আচার মোছার জন্য একটা পরিষ্কার কাগজের প্রয়োজন হওয়ায়  সেই "দুর্বোধ্য" বইয়ের থেকে  একটা পুরো পাতাও নয়, মাত্র খানিকটা ছিঁড়ে ফেলতে, বাড়ীর সকলের কাছে  যথেষ্ট "হেনস্থা"  হতে হয়েছিল তাকে! আর এখানেই শেষ নয়, সেইসময়  বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন সদ্য ...
সমুদ্র জীবন – অরূপ কুমার সেনগুপ্ত

সমুদ্র জীবন – অরূপ কুমার সেনগুপ্ত

পাকা চুলের কলমে
সমুদ্র জীবন অরূপ কুমার সেনগুপ্ত আমার সমুদ্র জীবনের ৩৫ বছরে যেমন অনেক সুন্দর মুহূর্ত্ত আছে, তেমনি কিছু কিছু ঘটনা আছে, যেগুলো সারাজীবনেও ভোলা যায় না।   আমার জীবনের স্মরণীয় একটা রাত। সেই রাতে আমি তাকে খুব নিবিড় ভাবে কাছে পেয়েছি। তার বুকে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলাম। তার গন্ধ বুক ভরে নিয়েছি। তার স্বাদ আস্বাদন করেছি, তাকে পুরোপুরি ভাবে উপলব্ধি করেছি। সারাটা রাত তার বুকেই হাবুডুবু খেয়েছি। আশা করি বুঝতে পেরেছো, কে সে, যে আমাদের তার বুকের মধ্যে রেখেছিলো। হ্যাঁ সে হচ্ছে দিগন্ত বিস্তৃত মহাসমুদ্র। দিনটা ছিল ২০ মার্চ ১৯৭৯ সাল। আমাদের জাহাজ M V Mandadevi  গুজরাটের জামনগর বন্দর থেকে সিমেন্ট লোড করে দুবাই এর দিকে রওনা দিয়েছে। শান্ত সমুদ্র, জাহাজ খুব স্বাভাবিক ভাবেই সমুদ্রের বুক চিড়ে জল কেটে এগিয়ে চলেছে। জাহাজে খুবই স্বাভাবিক পরিস্থিতি। যে যার নিজের নিজের কাজে ব্যস্ত। একুশে মার্চ দুপুর বারোটার সময় ...
দীর্ঘ ও হ্রস্ব – অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য

দীর্ঘ ও হ্রস্ব – অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য

পাকা চুলের কলমে
দীর্ঘ ও হ্রস্ব অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য প্রথম যুগের শান্তিনিকেতনের  ছবি যখন মানসপটে ফুটে ওঠে, রবীন্দ্রনাথকে কেন্দ্র করে যে সকল দিকপাল মানুষের  উপস্থিতি  সেই সময়ের আশ্রমকে  সৌরজগতের মতো অধিষ্ঠিত করে তুলেছিলেন, তাঁদের মধ্যে  দীনেন্দ্রনাথ  ঠাকুর ছিলেন অন্যতম! সম্পর্কে তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের নাতি। রবীন্দ্রনাথের বড়দা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি ২০ বছরের বড়ো ছিলেন কবির চেয়ে, তাঁর নাতি দীনেন্দ্রনাথ ছিলেন রবীন্দ্রনাথের থেকে ঠিক ২০  বছরের ছোট। তাঁর মতো  সদাহাস্যময়, সুকন্ঠের অধিকারি, নাট্যকুশলী, স্নেহময়, অতিথিবৎসল ও সর্বোপরি বিশাল মাপের  সঙ্গীত প্রতিভা  শান্তিনিকেতনের ইতিহাসে বিরল! রবীন্দ্রনাথের রচিত  প্রায় আড়াই হাজার গানের  সিংহভাগের স্বরলিপিকার, শান্তিনিকেতনের অন্যতম প্রাণপুরুষ দীনেন্দ্রনাথকে, রবীন্দ্রনাথ  শুধুমাত্র তাঁর  "গানের ভাণ্ডারী" আখ্যায় ভূষিত করেই ক্ষান্ত থাকেন নি, তাঁর পরম স্নেহের "দীন...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!