Shadow

শ্লোক থেকে ব্লগ

সাহিত্য বিভাগ, প্রবন্ধ গল্প ও কবিতা

কবি শঙ্খ ঘোষের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য – শ্রাবণী বসু

কবি শঙ্খ ঘোষের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য – শ্রাবণী বসু

কবিতা
কবি শঙ্খ ঘোষের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য শ্রাবণী বসু বাতাসে তরঙ্গে মাটিতে কম্পনে মিশে আছো তুমি।অথচ- চোখ খুলে দেখতে পাচ্ছিনা, ডেকে ডেকে সাড়া পাচ্ছিনা। শ্মশান থেকে ফিরে এলো শবযাত্রীরা নিঃসীম শূন্যতা ,বিষণ্ণতার মাঝখানে আয়না ধরেছে  স্থির মুখচ্ছবি। আকাশ যদি মাটিতে নেমে আসে,তবু ফিরবেনা তুমি- মহামারীর অন্ধকার গহ্বর টেনে নিয়েছে তোমায় মহাসিন্ধুর ওপারে। বালিশে বিছানায় রেশম সুতোর মতো লেগে আছে তোমার জাগতিক স্পর্শ শোক উড়ছে ঝাঁক ঝাঁক পঙ্গপালের মতো। সারস্বত কলমকে কেউ কেড়ে নিতে পারেনা সেটাই একমাত্র সান্ত্বনা। কবিতার কাছে তুমিহীন তোমার হাজারো কথার মুকুল ঝরছে । আমরা কুড়িয়ে রাখছি একে একে। ********************************* শ্রাবণী বসু পরিচিতি: পেশা শিক্ষকতা। কবিতা যাপনে যে সুখ পান,তেমনটি আর কোথাও পাননা। আর সেই কারণে কবিতা পাঠ করার সাথে সাথে লেখালিখি চলতে থাকে। প্রকাশিত যৌথ কাব্যগ্রন্থ: দ্বিপ্র...
“আকাশ সমুদ্র” – শ্রুতি দত্ত রায়

“আকাশ সমুদ্র” – শ্রুতি দত্ত রায়

কবিতা, বিহানবেলায়
PC-shutterstock.com "আকাশ সমুদ্র" শ্রুতি দত্ত রায় তোমার ও দুটো চোখের তারায় কিভাবে যে দুটো সমুদ্র লুকিয়ে রাখো,বুঝি না আর তাই,যখন সমুদ্রে ওঠে ঢেউ বড়ো অসহায় লাগে, বুঝিবা সাঁতার না জানা এই আমি কোন অতল গভীরে যাব ডুবে।। তোমার ও দুটো চোখের তারাতেই কিভাবে যে দুটো আকাশ লুকিয়ে রাখো,বুঝি না কিন্তু যখন মেঘহীন নির্মল আকাশে সূর্য হেসে দীপ্তি ছড়ায় বড়ো আনন্দ হয়, মনে হয় প্রজাপতি রাঙা ডানা মেলে তোমার অসীম আকাশে যাই হারিয়ে ।। ------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------   শ্রুতি দত্ত রায় পরিচিতি:      সুন্দরী ডুয়ার্সের মফস্বল শহর জলপাইগুড়িতে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। পেশায় সরকারি বিদ্যালয়ের ভাষা সাহিত্যের শিক্ষিকা। ভালবাসেন গান শুনতে, বই পড়তে, ডুয়ার্সের প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়াতে। আর গান ...
ভুয়ো – চন্দ্রকান্তি দত্ত

ভুয়ো – চন্দ্রকান্তি দত্ত

গল্প
ভুয়ো চন্দ্রকান্তি দত্ত চাকরী থেকে অবসর নেওয়ার পর দক্ষিণবাংলার কোন ছোট শহরে স্হায়ীভাবে বসবাস করব ভেবে রেখেছিলাম। সেইমতো খোঁজখবর করে কোন্নগরে একটা বাড়ি ভাড়া নিয়ে সমস্তিপুর থেকে সোজা এখানে এসে উঠেছি। বাড়িটা মূল লোকালয় থেকে একটু তফাতে, গঙ্গার ধারে। পুরনো বাড়ি, একতলা। তবে যত্নে বেশ ঝকঝকে রাখা হয়েছে। সামনে পিছনে খানিকটা জমি। তারপর পুরো চত্তরটা উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। ভিতরের জমিতে বড় বড় কয়েকটা গাছ-আম, কাঁঠাল, নিম, সজনে ও পেঁপে। কিছু ফুলের গাছও আছে। একজন মালি দেখাশোনা করে। আমি একা মানুষ। তিনকুলে এক বৃদ্ধা পিসি ও নবতিপর পিসেমশাই ছাড়া আর কেউ নেই। খুব ছেলেবেলায় অনাথ হওয়ার পর এই পিসিই আমাকে কোলেপিঠে করে মানুষ করেন। পিসেমশাই রেলে চাকরী করতেন। আমার রেলের চাকরীটাও পিসেমশাই-এরই বদান্যতায়। আমার বিয়ের বছর দুয়েকের মাথায় আমাদের প্রথম সন্তানের জন্মের অনতিবলম্ব পরেই সন্তান ও তার মা দুজনেই আমাকে ছেড়ে গে...
“অচ্ছুৎ” – পারমিতা নিয়োগী

“অচ্ছুৎ” – পারমিতা নিয়োগী

গল্প
"অচ্ছুৎ" পারমিতা নিয়োগী আমাদের কাছে আগে থেকেই খবর চলে আসে কোন বাড়িতে বিয়ে, কোন বাড়িতে বাচ্চা হয়েছে ইত্যাদি আর ঐ খবর আমাদের কাছে আনন্দের, আমাদের ভাত-রুটির ইনকামের খবর। খবর পেলেই সময় মতো পৌঁছে যাই সেই সব বাড়িতে কখনো ছেলে নাচাই, কখনো বা নিজেরা নেচে-কুঁদে পয়সা আদায় করি। দাবি মতো পয়সা না পেলে আবার শাপ-শাপান্তও করি ভয় দেখানোর জন্য। ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় না করলে আমাদের পেট চলবে কি করে? আমাদেরওতো ভালো-মন্দ খেতে, ভালো কাপড় পরতে, ভালো ভালো জায়গায় ঘুরতে আরো কতকিছু করতে ইচ্ছা করে। কিন্তু সমাজ------ জানিনা আমাদের অপরাধ কি, কিন্তু সমাজ আমাদের একঘরে করে রেখেছে। নেতাদের সব বড় বড় লেকচার---কাজের কিছুই না। নেতাদের কথায় বা রাগ করি কেন, যারা জন্ম দিয়েছে তাদের কি কোনো দায়িত্ব নেই? আছে---- কিন্তু ঐ--,সমাজ--, সেই সমাজের ভয়ে বুকে পাথর বেঁধে, কান্না চেপে দশমাস সযত্নে তিলে তিলে নিজের শর...
এবং অলকানন্দা – দেবপ্রিয়া সরকার

এবং অলকানন্দা – দেবপ্রিয়া সরকার

গল্প
এবং অলকানন্দা দেবপ্রিয়া সরকার এক দরজাটা খুলতেই হিমেল হাওয়ার ঝাপটা এসে লাগলো চোখে মুখে। হুড়মুড়িয়ে ঠান্ডা উওুরে বাতাস ঘরের ভেতর ঢুকছে আগলে রাখা উষ্ণতাটুকু গিলে খাবার মতলবে। প্রাথমিক ঝটকা সামলে গায়ের চাদরটা ভাল করে কানে মাথায় জড়িয়ে নিল নন্দা। সন্তর্পণে সদর দরজা বন্ধ করে পা বাড়াল ঘরের বাইরে। এবার পৌষের শুরু থেকেই জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। উওরবঙ্গের শীতের রকমসকম নন্দার ভালই জানা। মায়ের পেট থেকে বেরিয়ে আসা ইস্তক এর দামালপনা দেখে আসছে। আজ কুয়াশাও পড়েছে জব্বর! দু’হাত দূরের জিনিসকেও ঠাহর করা যাচ্ছে না ঠিকঠাক। রাস্তাঘাট শুনশান। সঙ্গের ঢাউস ব্যাগটাকে আঁকড়ে দ্রুত পা চালালো নন্দা। ঘন কুয়াশার পর্দা ডিঙিয়ে নজরে আসছে হলদে রঙের স্কুল বাড়িটা। একটা আবছা মানুষের ছবি চোখে পড়ছে ঝুপসি ছায়া ঘেরা চন্দনগাছের নীচে। নন্দা একটু থমকালো। অজান্তেই বুকের গহীন কুঠুরি থেকে বেরিয়ে এল একটা স্বস্তির শ্বাস। টুপি-মাফলারে মাথা গলা...
উমাশশী কর্মকার – জলি চক্রবর্তী শীল

উমাশশী কর্মকার – জলি চক্রবর্তী শীল

গল্প
উমাশশী কর্মকার জলি চক্রবর্তী শীল 'উমাশশী কর্মকার আছে তো?' ফড়িং এবার মাথা চুলকায়|  এ বাড়িতে উমশশী বলে কেউ আছে নাকি? 'খোকা এই জন্য বললাম বাড়ির বড় কাউকে ডাক?' ভোটার লিস্ট কারেকশন করতে আসা লোকটি মৃদু বিরক্তি নিয়ে ফড়িংকে বলে| ফড়িং দুপুরবেলা একা একাই খেলছিল| এই সময় বাড়ির সবাই একটু বিশ্রাম নেয়| আর এই সময়টাতে ফড়িং এ বাড়ির সর্বেসর্বা| তাই কর্মীটি আসতেই সেই বলেছিল‚ তার সাথেই কথা বলতে‚ এখন কাউকে ডাকা যাবে না| অগত্যা কি আর করার আছে‚ বড় কাউকে তো ডাকতেই হবে| ফড়িং ভিতরে চলে যায়| কুঁজি ঠাম্মি তো জেগেই থাকে| কুঁজি তখন বসে বসে ঝিমোচ্ছিল| একটু পরেই রাস্তাকলে জল আসবে| লাইন পড়বে| তার আগেই তাকে গিয়ে লাইন দিতে হবে| 'ও কুঁজি ঠাম্মি‚ উমাশশী কর্মকারকে চেনো?' ঝিমুনি টুটে গেলেও তখুনি কুঁজি বুঝে উঠতে পারে না‚ ফড়িং কি জানতে চাইছে| 'কি বললি?' 'বলছি উমাশশী কার নাম তুমি কি জান?' 'তাকে তোর কি দরকার শুনি?' 'ঐ ...
পথের কাদাজল – উৎপল দত্ত

পথের কাদাজল – উৎপল দত্ত

কবিতা
পথের কাদাজল উৎপল দত্ত পথে নেমে বেপথু হতে চাইনি কখনও - কাদার ছিট জামায় মেখে বাড়ি ফিরেছি। বোনকে বলেছি ধুয়ে দে - গীতি কবিতা, গণিতের সূত্র শুধরে দেব - ধুয়ে রাখিস। কাদা-কুৎসিত জামা সারারাত জেগেছিল আমি তো একুশ, বেহুঁশ হওয়ার ভয়ে পার্কে ঘুরি না, পথের মাপজোক করি। চুলবুলে মেয়েটি যদি রক্তে লালা ঢালে হাতছানি সময়ে যদি ছোবল হয়ে যায়! একুশের ছেলে। আবোল। তাবোল। ছোবল। এ বয়সে চোরাস্রোত গোপনে শিরায় উথলায় আহত মন জানে না পথের বাঁকের নিগূঢ় কথা কী আছে নদীর বাঁকে, মধু না বিষ উজিয়ে সে যায় উত্তাল, দুপুরের উষ্ণ কথার ফাঁকে - তাই এ একুশ একাই রাত জাগে। তড়পায়। ঘুমায়। তিলকে তাল করা অন্যায় তাও বিস্মৃত হয়ে সংযুক্তাকে তিলোত্তমা বলেছি এক বিকেলে মুখ ফিরিয়ে সে ক্রিকেটের গল্প তুলেছিল - আকাশ ছুঁই-ছুঁই ছক্কাটি সীমানায় ধরা পড়ে মনিটরে থার্ড আম্পায়ার, মন ছটফট করে। ************************************************...
দৃঢ় অঙ্গীকার – কঙ্কনা সেন

দৃঢ় অঙ্গীকার – কঙ্কনা সেন

কবিতা
দৃঢ় অঙ্গীকার কঙ্কনা সেন নারী দেহ দেখলেই মনে হয় এতো শুধু পণ্য!! যখন যেমন সুযোগ পাবে লুটে নাও___ কোর না তাকে গণ্য!!! আদিম হিংস্রতায় তার সযত্নলালিত শরীরে ভরে দাও দাঁত ও নখের উগ্র বিষ। লজ্জা কিসের? এ তো পুরুষের অধিকার! তাই কোর না মান্য শিশুকে বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনীকে সুখী গৃহকোণের স্ত্রীকে বা ফুটপাতের কাগজকুড়ুনীকে। যে মেয়েটি পরম নির্ভরতায় উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দুচোখে মেখে আসতো শিক্ষকের কাছে__ তাকে মূল্য দিতে হয়। যে মেয়েটি 'লাইফ অফ পাই' দেখে উজ্জীবিত হয় বাঁচার প্রেরণায় তাকেও মূল্য দিতে হয় নরখাদকের হাতে। তুমি না নারী? তোমার শরীরে আমার অধিকার। প্রতিবাদ? চোপ! অ্যাসিডে দেব বন্ধ করে মুখ__ তোমার শরীর ক্ষতবিক্ষত করেই আমার সুখ! কবিতা, তোমায় দিই নি এখনো ছুটি___ শরীর আমার ঝলসে গেছে মনের আগুন নিভবে না যে এবার শুরু অন্য লড়াই প্রতিবাদ তাই রক্তস্রোতে দুর্বার আমি দুর্দম আম...
যন্ত্রণা – ব্রততী সেন দাস

যন্ত্রণা – ব্রততী সেন দাস

গল্প
যন্ত্রণা ব্রততী সেন দাস কুর্চি, আমি বিজনের সাথে কথা বলেছি। কাল রাতেও ওর সঙ্গে প্রায় আড়াইটে অবধি কথা হল। কিন্তু না, আমি কোন সমাধান সূত্র খুঁজে পাইনি। হয়ত সত্যি এর কোন সমাধান হয় না। হলে হয়ত আমার জীবন টা আজ অন্য খাতে বইত।....কিন্তু আমি খুব কষ্ট পেয়েছি রে, তিলে তিলে যে জীবন টা আমি গড়ে তুলেছিলাম একার হাতে সেটা যেন তাসের বাড়ির মত হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল... আরো একবার বাস্তুহারা হলাম। আমার সমস্ত লড়াই, জেতার ইচ্ছে, অহংকার মিথ্যে হয়ে গেল। বাইশ বছর আগে যখন বাইরের পৃথিবীতে পা রাখতে হয়েছিল তখন মাথার ওপর কোন ছাদ ছিল না তবুও আমি ভয় পাইনি কারণ আমার ডান হাত টা ধরা ছিল এক সাত বছরের শিশুর হাতে। সে আমার একমাত্র সন্তান বিজু। ও তার মায়ের অপমান, বঞ্চনা আর রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম দেখে শিউরে উঠত। বাবার অনাচার আমাদের পথের যে মোড়ে এনে ফেলেছিল তাতে বিজন ভিষণ জেদি হয়ে গেছিল। মেধাবী ছিল তাই পরীক্ষার নানা কঠিন বাধা টপকে আজ ভিন...
স্বচ্ছতা দূত – প্রণব আচার্য্য

স্বচ্ছতা দূত – প্রণব আচার্য্য

কবিতা
স্বচ্ছতা দূত প্রণব আচার্য্য আমরা হলাম স্বচ্ছতা দূত । রাস্তাঘাট সাফাই করে, জঞ্জাল সব ভ্যাট-এ ভরি । নিত্য এ কর্মের দ্বারা রোগের জীবাণু আমরা নাশ করি । বাঁচাতে মারণরোগের হাত থেকে সকল নগরবাসীদের আমরাই যে সব লাগাম ধরি । ঊষার আলো ফুটতেই, বাঁশি বাজিয়ে প্রতি বাড়ি হতে জঞ্জাল সব সংগ্রহ করি । এ শহর, এ গ্রাম আমাদের কাছে যেন এক পুন্য তীর্থভূমি । তার শুধ্বয়নে, তার পরিচ্ছন্নে আমরা যে সদাই সতর্ক থাকি । কারণ, এ পরিবেশ আমাদের জন্মভূমি । এ কর্ম আমাদের একার নয়, সকল নাগরিকের । বন্ধ কর সব ময়লা ফেলা যত্রতত্র, আর নদী নালা পূর্ন করা আবর্জনায় । গড়তে যদি চাই এ পরিবেশ স্বাস্থ্যকর ও সুখকর, মানতে হবে নিয়মবিধি সকল অধিবাসীবৃন্দের । **********************************************      প্রণব আচার্য্য পরিচিতি : বি. কম (অনার্স), কাব্য ও সাহিত্য চর্চায় অনুরাগী। সম্প্রতি কিছুদিন আগে থেকে কলম কে সাথী করে পথ...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!