Shadow

শ্লোক থেকে ব্লগ

সাহিত্য বিভাগ, প্রবন্ধ গল্প ও কবিতা

স্বাধীনতা – সন্দীপ মুখার্জী

স্বাধীনতা – সন্দীপ মুখার্জী

কবিতা, শ্লোক থেকে ব্লগ
স্বাধীনতা সন্দীপ মুখার্জী নিশীথরাতের অগ্নিবাসর--- নেশাতুর নৃত্য দোদুল ছায়াঘন কায়া সকল, বিচিত্র এক জীর্ণ স্থাবর ! পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার স্বাধীনতায় তারাই মুখর ; অবক্ষয়ের ভাঙন মাঝে রাঙা চোখের এ কোন আখর ?? চল নীলিমা, অনেক হলো !! শাল সেগুনের গন্ধ মাখি--- ধামসা মাদল পলাশ রাঙা, লাল ফাগুয়ার নেশায় সখী।। মন মহুয়ার মনমহলে বেণীর দোলায় বাঁধন খুলি--- লালিগুরাসের ছায়াতলে, অচিন পাখির মায়া কাকলি। তার ধুনে আয় 'বিহু' নাচি--- রাজার আগল খুলবো আজি, চল নীলিমা দু'জনেতে স্বাধীন হয়ে আবার বাঁচি।। ************************************************ সন্দীপ মুখার্জী পরিচিতিঃ কলকাতা নিবাসী এই কবি শিক্ষা গ্রহণ করেছেন চারু ও কারু কলা বিভাগের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ইন্ডিয়ান পেইন্টিং বা অবন ঠাকুর, নন্দলাল বসুর ঘরানার ছাত্র হয়েও, পরবর্তীতে ঘরানার গন্ডী পেরিয়ে বিমূর্ততার মাধ্যমে রঙ, রূপ, সুর ও কথ...
প্রেমের আখর – অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য

প্রেমের আখর – অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য

পাকা চুলের কলমে
প্রেমের আখর অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য "আমার খেলা যখন ছিল তোমার সনে, তখন কে তুমি তা কে জানত ...." ১৯১৬ সালের ঘটনা দিয়ে শুরু করছি। আট বছরের এক ছোট্ট মেয়ের গল্প! কলকাতার থেকে অনেক দূরে, এক  ছোট পাহাড়ী শহরে(১) ছিল তার বাস। পড়াশুনো সেই শহরের "লরেটো কনভেন্ট" স্কুলে। ইংরেজি মাধ্যমে পড়লেও বাংলা ভাষার পাঠ সে তার বাড়িতেই নিয়েছিল।একদিন  বইয়ের তাক থেকে একটা পাতলা মলাটের সরু বই , রবিবাবুর লেখা "খেয়া" নিয়ে তার মা তাকে বললেন "এটা তোমার।" সত্যিকথা এই, যে মেয়েটি বইটি পড়বার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু লেখার একবর্ণও বুঝতে না পেরে বইয়ের তাকেই সেই বই  রাখলো ফেলে। পরে একদিন তেঁতুলের আচার মোছার জন্য একটা পরিষ্কার কাগজের প্রয়োজন হওয়ায়  সেই "দুর্বোধ্য" বইয়ের থেকে  একটা পুরো পাতাও নয়, মাত্র খানিকটা ছিঁড়ে ফেলতে, বাড়ীর সকলের কাছে  যথেষ্ট "হেনস্থা"  হতে হয়েছিল তাকে! আর এখানেই শেষ নয়, সেইসময়  বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন সদ্য ...
সমুদ্র জীবন – অরূপ কুমার সেনগুপ্ত

সমুদ্র জীবন – অরূপ কুমার সেনগুপ্ত

পাকা চুলের কলমে
সমুদ্র জীবন অরূপ কুমার সেনগুপ্ত আমার সমুদ্র জীবনের ৩৫ বছরে যেমন অনেক সুন্দর মুহূর্ত্ত আছে, তেমনি কিছু কিছু ঘটনা আছে, যেগুলো সারাজীবনেও ভোলা যায় না।   আমার জীবনের স্মরণীয় একটা রাত। সেই রাতে আমি তাকে খুব নিবিড় ভাবে কাছে পেয়েছি। তার বুকে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলাম। তার গন্ধ বুক ভরে নিয়েছি। তার স্বাদ আস্বাদন করেছি, তাকে পুরোপুরি ভাবে উপলব্ধি করেছি। সারাটা রাত তার বুকেই হাবুডুবু খেয়েছি। আশা করি বুঝতে পেরেছো, কে সে, যে আমাদের তার বুকের মধ্যে রেখেছিলো। হ্যাঁ সে হচ্ছে দিগন্ত বিস্তৃত মহাসমুদ্র। দিনটা ছিল ২০ মার্চ ১৯৭৯ সাল। আমাদের জাহাজ M V Mandadevi  গুজরাটের জামনগর বন্দর থেকে সিমেন্ট লোড করে দুবাই এর দিকে রওনা দিয়েছে। শান্ত সমুদ্র, জাহাজ খুব স্বাভাবিক ভাবেই সমুদ্রের বুক চিড়ে জল কেটে এগিয়ে চলেছে। জাহাজে খুবই স্বাভাবিক পরিস্থিতি। যে যার নিজের নিজের কাজে ব্যস্ত। একুশে মার্চ দুপুর বারোটার সময় ...
গন্ধপুরাণ – হিমাশিস ভট্টাচার্য্য

গন্ধপুরাণ – হিমাশিস ভট্টাচার্য্য

গল্প
                                                                                                        গন্ধপুরাণ                                                                                                    হিমাশিস ভট্টাচার্য্য শেষ সময়ে বাবা মাঝে মাঝে অদ্ভুত আচরণ করতেন। শরীর খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। থাকতেন আধো ঘুমে, আধো চেতনে। কখনো অতি সক্রিয় হয়ে বলতে শুরু করতেন – ঘরের সোফা চেয়ার গুলো খালি করে দাও। দেখছ না কারা এসেছেন? তাঁদের বসতে দাও। বাবার কথা শুনে মা আশেপাশে তাকিয়ে দেখতেন কেউ তো নেই। বাবা রেগে যেতেন। বলতেন - বাবা, মা, কাকা, ঠাকুরদা, জ্যাঠামশাই সবাই এসেছেন একসঙ্গে। তাঁদের বসতে দাও। মা হয়তো ধোওয়া কাপড়গুলো ছাদ থেকে এনে সোফায় রেখেছেন, পরে গুছিয়ে রাখবেন। বাবার কথা শুনে তাড়াতাড়ি সব সরিয়ে ফেলতেন। তখন বাবা ঠাণ্ডা হয়ে একা একা যেন কার সঙ্গে কথা বলতেন। মা ভয় পেয়ে আমাদের সবাইকে ডেকে নিয়ে আসত...
অপরূপা কৌশানী – ডঃ স্বয়ংদীপ্ত বাগ

অপরূপা কৌশানী – ডঃ স্বয়ংদীপ্ত বাগ

কবিতা
  অপরূপা কৌশানী ডঃ স্বয়ংদীপ্ত বাগ পাহাড়িয়া রাণী তুমি, অপরূপা কৌশানী, হিমালয়ের অন্তঃপুরে, সবুজে সবুজে ভরে, তুমি একখন্ড শান্তি-স্থল, স্তব্ধ কিন্তু প্রাণোচ্ছ্বল! সামনে দিগন্ত জুড়ে— বরফে শিখর মুড়ে, আলোছায়ার ফাঁকে ফাঁকে, নতুন ছবি ঝলকে-পলকে, নাম না জানা ফুলের মেলায় এদিক ওদিক উপত্যকায়, হিমেল হাওয়া শিরশিরিয়ে, পাইন বনে যায় হারিয়ে ।  যতদূর চাই --- শেষ যেনো নাই, পাহাড় আকাশ – হলো এক ঠাঁই, এতো মায়াবী, কুমারী প্রকৃতি, অন্য কোথাও দেখিনি; স্মৃতি-সুখের সাথীও তুমি, অপরূপা কৌশানী ।। **************************************************** ডঃ স্বয়ংদীপ্ত বাগ পরিচিতিঃ ভূগোল নিয়ে গবেষণা, পেশায় শিক্ষক। কিন্তু  প্যাশন  ভ্রমণ ,সাহিত্য ও সংগীত চর্চায় (সেতার)। বিভিন্ন সংবাদপত্র ও পত্রিকায় নিয়মিত লেখক ।লেখালেখির প্রয়াস সীমাবদ্ধ মূলতঃ প্রবন্ধ ও কবিতায় প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দুই। এছাড়া ব...
আলোকের এই ঝর্ণাধারায় – অনসূয়া সরকার বিশ্বাস

আলোকের এই ঝর্ণাধারায় – অনসূয়া সরকার বিশ্বাস

গল্প
                                    আলোকের এই ঝর্ণাধারায়                                                                                    অনসূয়া সরকার বিশ্বাস                                                                                       (১) সকাল থেকেই মাথাটা ভার হয়ে আছে শ্রীলেখার। কেমন যেন একটা গুমোট লাগছে। জানালার পর্দা সরিয়ে কিছুক্ষণ একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, বাগানে গন্ধরাজ গাছটার দিকে। ফুলে ফুলে ভরে গেছে গাছটা। সন্ধ্যে হলেই সুন্দর গন্ধে চারদিকটা ভরে যায়। এই গাছটা টিডো আর শ্রীলেখা একসঙ্গে লাগিয়েছিল। মাঝে মাঝে বড্ড নিঃসঙ্গ মনে হয়। কে আছে তার টিডো ছাড়া? দেবাশীষ চলে যাবার পর ওই তো তার শিবরাত্রির সলতে। অদ্ভুত শীতল সম্পর্ক তাদের মা ছেলের। অথচ ছোটবেলায় কি ন্যাওটাই না ছিল  টিডো ! আর আজ ! হাজার চেষ্টা করেও দশ বছর ধরে এই দুর্লঙ্ঘ্য্ সীমারেখা অতিক্রম করতে পারেনি শ্রীলেখা। ক্লাস...
দাশু তোর সঙ্গে – ইন্দ্রাণী ঘোষ

দাশু তোর সঙ্গে – ইন্দ্রাণী ঘোষ

গল্প
দাশু তোর সঙ্গে ইন্দ্রাণী ঘোষ দাশু সেদিন দুপুরবেলা পাড়ার মোড়ে বসে সেই মার্কামারা হিনডেলিয়ামের টিফিন কৌটো খুলে কি যেন খাচ্ছিল। আমারও চনচন করে  ক্ষিদে পেয়েছে, ইশকুল থেকে ফিরছি। একটু উঁকি মারতে গেছি, ব্যাটা বলে 'বাড়ী গিয়ে খা না, হ্যাংলামি এ বয়েসেও গেল না। আমি বললাম, 'তোরই বা খাবার জায়গা এরম কেন? খেটেখুটে ফিরছি  ক্ষিদে পেয়েছে, আর গাছতলায় বসে তুই লুচি, তরকারি খাচ্ছিস। চাইওনি, শুধু তাকিয়েছি, তাতেই এত কথা।' বলে হাঁটা লাগিয়েছিলাম। দাশু বললে 'খেয়ে কি করবি, রক্ত দিতে তো পারবি না, তোর তো লো প্রেসার। ইশকুলে রক্তদান শিবির আছে।' রোববার সকাল থেকেই মনটা কেমন ইশকুলের দিকে টানছিল। ভাবছিলাম দাশু যা চ্যাটাং, চ্যাটাং কথা বলল সেদিন ভরদুপুরে, ব্যাটাকে জবাব না দিলেই নয়। রক্ত দেব না তো কি হল। দাশুর বন্ধুদের পাশে তো থাকতে পারি। সত্যিই দাশুদের বন্ধুরা যে একসাথে হয়, হৈচৈ করে, বন্যা  দুর্গতদের জন্য কোন প্রত্যন্ত ...
অবিমৃষ্য – সাজেদুল হক

অবিমৃষ্য – সাজেদুল হক

কবিতা
অবিমৃষ্য সাজেদুল হক যুক্তিহীন মানুষের কণ্ঠ বড়, নাটাই কাঁটা ঘুড়ির মতন ছুটে চলে একা; কিছু মানুষ যুক্তিহীন হয়। কিছু মানুষের লুণ্ঠিত প্রেম অধর স্পর্শ করে স্বপ্নজালে, বেহিসেবি লেনাদেনায় । কিছু মানুষের মন ভালো নেই একলা আকাশ একলা প্রহর নিয়ে একা; কোনো পিছুটান নেই। কিছু মানুষ নিরামিষাশী মাংসের খিদে নেই , গোপন ক্ষত নিয়ে ঘরে এদিক সেদিক। কিছু মানুষের কামুক হৃদয় তৃষ্ণায় বুদ হয়, নগ্নরাত্রির ভেলা ভাসায় দ্রাঘিমা রেখায়। কিছু মানুষ বিশ্বাসের উষ্ণ চাদরে ঢাকে বুকের জমিন । কিছু মানুষ হয় ভালোবেসে, না হয় ভালোবাসায় খুন হয়। কিছু মানুষ যুক্তিহীন হয়।। সাজেদুল হক পরিচিতি – জন্মঃ সেপ্টেম্বর, ১৯৭০। শিক্ষা - বালিগাও প্রাইমারী স্কুল, ভানুগাছ, কমলগঞ্জ। বশিরউদ্দিন আদর্শ হাইস্কুল, মিরপুর। বাঞ্চারামপুর এস এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বাঞ্চারামপুর। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়।বাল্যক...
স্বপ্নসুখ – পার্থ প্রতিম মিত্র

স্বপ্নসুখ – পার্থ প্রতিম মিত্র

কবিতা
স্বপ্নসুখ পার্থ প্রতিম মিত্র একমুঠো আবির ছড়িয়ে দিই রক্তমাখা হৃদয়ে, ভালোলাগার আবেশে চোখ বুজে আসে... মুঠোফোনে হাতরাই ভাষা ভাষা চোখ বিস্মৃতির গভীরে ডুবে। পাড়ভাঙ্গা শব্দ ধেয়ে আসে ঝাউবন পেড়িয়ে... নিকষ কালো অন্ধকার সন্ সন্ বাতাসে দোল খায়... আমি দুহাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরি নিঃশব্দ পৃথিবীকে... বড়ো একা লাগে নিজেকে। কাল এসে দাঁড়ায় সামনে পেছনে চারদিকে, সময় যায় থমকে... অস্পষ্ট মৃদু পদচারণের ধ্বনি শুনতে পাই.. আমি হারিয়ে যাই বহুদুরে সমুদ্রের ফেনার সাথে ভাসতে ভাসতে... হটাৎ আলোর রোশনাই ধেয়ে আসে অন্ধকার চিরে, আমি মুক্তির আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাই, আত্মদর্শনের পরিতৃপ্তি বাঁচার মোহে ফিরিয়ে নিয়ে আসে আমায়, এইতো আমি দাঁড়িয়ে আছি স্বপ্নের মাঝে খুশির হাওয়ায়। স্বপ্ন ভেঙে যায়...... ঘামে ভেজা আমি চোখ মেলে দেখি আমার একান্ত আপন পৃথিবী, সবুজ মাটি স্বপ্ননীল আকাশ ভোরের ঠান্ডা বাতাসে...বড়ো মায়াময়। ***********...
শ্রদ্ধার্ঘ্য-মুনমুন রায়

শ্রদ্ধার্ঘ্য-মুনমুন রায়

সংস্কৃতির বৈঠক
                                                                                                         শ্রদ্ধার্ঘ্য                                                                                                        মুনমুন রায় কিছু অজানা কথা সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি "বন্দেমাতরম "। শ্রদ্ধার্ঘ্য …………. (জন্ম :২৭ শে জুন ১৮৩৮  তিরোধান: ৮ই এপ্রিল ১৮৯৪ )। "বন্দেমাতরম" সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা শুধু একটি সঙ্গীত নয়, এটি ভারত আত্মার কথা।এই সঙ্গীত ভারতবাসীর পঞ্চকোষের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে সম্পর্কিত। এই পঞ্চকোষের প্রথম কোষ  "বন্দেমাতরম" সঙ্গীতের প্রথম দুই লাইনে পাই "অন্নময় কোষ”। তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ লাইনে পাই "আনন্দময় কোষ”।,"সপ্তম থেকে একাদশ লাইনে পাই “প্রাণময় কোষ”। দ্বাদশ থেকে সপ্তদশ লাইনে পাই "মনোময় কোষ" এবং বাকি শেষ অংশে পাই “বিজ্ঞানময় ক...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!