Shadow

Author: Kulayefera

সম্পাদকীয় – ‘কুলায়ফেরার বিহানবেলায় ৫’

সম্পাদকীয় – ‘কুলায়ফেরার বিহানবেলায় ৫’

বিহানবেলায় ৫
সম্পাদকীয় কুলায়ফেরার বিহানবেলায় ৫ প্লিজ ফাসন্ ইয়োর সীট বেল্ট। ল্যান্ডিং প্রসেস্ হ্যাজ্ বীন স্টার্টেড ....।" বিমান যাত্রায় এই ঘোষণার মতন মধুর ঘোষণা সম্ভবত: আর হয়না। এক ঘন্টা হোক বা বারো-চোদ্দ ঘন্টার দীর্ঘ বিমানযাত্রা,যাই হোক না কেন,মাটি ছোঁয়ার জন্য মন কিন্ত আনচান করে। তারপর,নীচে,আরও নীচে নামতে নামতে ছোট্ট ঝাঁকুনীটা যেন একরাশ খুশি নিয়ে আসে,কুলায় ফিরে আসার আনন্দ নিয়ে আসে। সুনীতা যেন প্রতি পলে এই কুলায় ফেরার সুখ উপলব্ধি করেছে। নাসার মহিলা মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং বুচ মহাকাশে গিয়েছিলেন আট দিনের জন্য। মহাকাশে ভারশূণ্য অবস্থায় বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা সেরে ঘরে ফেরার কথা। আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টা মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কাছে জলভাত। কিন্তু তা হলো কই? আট দিনের বদলে তাঁরা মহাকাশ স্পেস স্টেশনে বন্দী থাকলেন প্রায় নয় মাস। বাড়ী থেকে মাত্র চারশো কিলোমিটার উঁচু থেকে বাধ্য হয়েই তাঁরা ৪,৫৭৬ বার নীল গ্রহের স...
অচিন পাখি – ব্রতী ঘোষ

অচিন পাখি – ব্রতী ঘোষ

বিহানবেলায় ৫
অচিন পাখি  ব্রতী ঘোষ নীলাদ্রিশেখর যবে থেকে ওর মেয়ে মোহিনীর রিলেশনশিপের কথা স্ত্রী শিপ্রার মুখে শুনেছেন তবে থেকেই দুর্ভাবনায় একেবারে মুষড়ে পড়েছেন | মাত্র আটমাস হল মোহিনী আঠেরোতে পা দিয়েছে । সোশিওলজি তে অনার্স নিয়ে প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি করিয়েছেন কত আশা করে | আর তার মাঝেই এই খবরটা হঠাৎই শিপ্রা শোনালো । এটা কি একটা রিলেশনশিপে জড়ানোর বয়স ?  " আর ওর পড়াশোনা করতে হবে না |সব ছেড়ে এবারে বিয়ে করতে বল।"  শিপ্রা জানেন যে কত দুঃখে নীলাদ্রির বুকের ভেতর থেকে কথাগুলো উঠে আসছে । মোহিনী ওর চোখের মণি | তবে মোহিনীর একটা গুণ হল যে কোন কথা ও এখনো পর্যন্ত মাকে গোপন করে না । অচিনের সঙ্গে আলাপ হওয়ার প্রথম দিন থেকেই মাকে সব কথা বলেছে ও | তবে শিপ্রা মেয়েকে কখনোই বাধা দেয়নি। ও জানে বাধা দিলে এই বয়সে ছেলে মেয়েরা আরও বেঁকে বসে। এরপর যেদিন অচিনের সঙ্গে মোহিনী আলাপ করিয়ে দিল সেদিনই বাড়ি ফিরে নীলাদ্র...
অদ্ভুতুড়ে – মধুমিতা মিত্র

অদ্ভুতুড়ে – মধুমিতা মিত্র

বিহানবেলায় ৫
অদ্ভুতুড়ে মধুমিতা মিত্র কলকাতার একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে খুব বনেদী অভিজাত অঞ্চলের পুরো সরকারী এক স্কুল,বি-রা-ট এক ক্যামপাসে বিশাল বিশাল ময়দান,ব্রিটিশ আমলের একাধিক সর্বাঙ্গ অভিজাত ইমারৎ--অনেক অনেক মহীরুহ,নানান গাছ গাছালি,কেয়ারি-সুন্দর সুন্দর স্বর্গীয় সাজানো বাগান এই নিয়ে ছোট্ট পিউলির  অনেক বড়ো বিদ্যালয়। ব্রিটিশ আমলের সেই যে বড়ো উঁচু বাড়ি,তার মধ্যে একটিতে ই পিউলিদের স্কুল বসে। পিউলির বাড়ি আবার স্কুল থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে।পিউলির মা,পিসিরা সবাই শিক্ষিকা-তাই পিউলিকে স্কুলে নিয়ে আসা-যাওয়ার দায়িত্ব পালা করেই মা পিসিরা নিয়ে থাকেন। এ যে সময়ের গল্প সে সময়টা কিন্তু আজকের নয়-সে প্রায় আজ থেকে পঞ্চাশ পঞ্চান্ন বছর আগের কথা। তখনও এ মহানগরীতে যাতায়াত এমনটা সহজ ছিল না।মহানগরীরই এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় আসা যাওয়া বেশ সময় সাপেক্ষ ছিল। পিউলির বাড়ি থেকে স্কুল পৌঁছানো সে এক মহা ব...
জবাব – বিদ্যুৎ পাল

জবাব – বিদ্যুৎ পাল

বিহানবেলায় ৫
জবাব বিদ্যুৎ পাল প্রদ্যুম্ন সিং গর্বের সাথে হেসে বললেন,“একটা প্রশ্নেরও জবাব দিতে পারলেন না প্রফেসর-সাহেব!”  সবাই চুপ করে আছে দেখে নিজেই এগিয়ে নিয়ে গেলেন কথাটা,“তার মানে কী? তার মানে হল ওঁর সিদ্ধান্তগুলো ভুল!…আরে একটা হিড়িক লেগেছে! যাকে দেখ সেই নতুন অর্থের বিন্যাস খুঁজছে! খোঁজো! তাবলে ক্লাসিকে হাত দিতে যেওনা! তাঁরা সব প্রাতঃস্মরণীয় মনীষী! চেষ্টা কর আবার প্রথম থেকে পড়ে তাঁদের বুঝতে!” তা,উনি হয়ত সেই চেষ্টাই করছিলেন! আবার থেকে পড়ে যা মনে হল সেটাই বলছিলেন! অবশ্য আমরা তাঁর লেখাটাও পড়িনি আর আপনার প্রশ্নগুলোও জানি না। পড়লেও বুঝব সেরকম জ্ঞানগম্যি আমাদের নেই। বুঝতে চেষ্টা করার মানে কী? মূল সিদ্ধান্তগুলো পালটে দেওয়া? পালটে দিয়েছিলেন? ঠিক পালটে দেননি। তবে,তার মাঝে মাঝে নিজের সিদ্ধান্ত ঢোকাচ্ছিলেন।  প্রদ্যুম্ন সিং নিজেও স্থানীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের প্রফেসর। আমাদের সাথে ভাল...
অমৃত সংবাদ – সোনালী গুহ

অমৃত সংবাদ – সোনালী গুহ

বিহানবেলায় ৫
।। অমৃত সংবাদ ।। ।।সোনালী গুহ।।              অমৃতের ভাণ্ডারে গল্পের শেষ নেই। অবশ্য সবই তার নিজেরই গল্প।না ঠিক গল্প নয়,সবই সত্যি ঘটনা। ছোট থেকেই অন্য পাঁচটা ছেলের মত নয় সে।গ্রামের বাড়িতে একান্নবর্তী পরিবারে বড় হয়েছে । ছোট্ট নিরিবিলি গ্রাম আমতলা।গ্রামের অনতিদূরে বয়ে যাচ্ছে ছোট্ট একটি নদী... চূর্ণী।গ্রামের ছেলের দল যখন গ্রীষ্মের দুপুরে চূর্ণীর জলে মাতামাতি করে সাঁতার কেটে বেড়ায়,তখন অমৃত নিরিবিলি একটা গাছের তলায় বসে নদীর দিকে তাকিয়ে থাকে অপার বিস্ময়ে । ছোট্ট অমৃতের মনে কত প্রশ্ন।এইভাবেই একটু শান্ত,সরল ছেলেটির বেড়ে ওঠা। পড়াশোনায় বরাবরই ভালো সে।চার ভাইবোনের মধ্যে বড় হওয়ায়,মা তেমন করে নজর দিতেও পারেননা। তাছাড়া একান্নবর্তী পরিবারের সন্তানরা নিজেরাই কীভাবে যেন বড় হয়ে যায়। অমৃতও সেইভাবেই প্রতি ক্লাসেই ভালো নম্বর পেয়ে পাশ করে যেত।তেমন করে কেউ ওকে খেয়ালও করত না। এইভাবেই চলছ...
দাঁত নিয়ে দাঁদড়ামি – গৌতম সরকার

দাঁত নিয়ে দাঁদড়ামি – গৌতম সরকার

বিহানবেলায় ৫
  দাঁত নিয়ে দাঁদড়ামি গৌতম সরকার      ডিস্পেন্সারিতে ঢুকে আজকেও মেজাজটা ঘেঁটে গেল প্রহ্লাদবাবুর। ওয়েটিংরুমের এদিক-ওদিকে কম করে জনা পনেরো বসে, যদিও এদের মধ্যে রুগীর সাথে বাড়ির লোকজনও আছে। এই ডাক্তারবাবু সন্ধ্যে সাতটা থেকে রুগী দেখতে শুরু করেন। অফিস থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে চা-জলখাবার খেয়ে আসতে আসতে আটটা বেজে যায়। রিসেপশনিস্ট মেয়েটির কাছে গিয়ে নিজের নামটি বলতে, চোখ না তুলে লিখতে লিখতে নির্লিপ্ত কণ্ঠে জানালো 'এগারো নম্বর, … … এখন চার নম্বর গেছে'। একটা ফাঁকা জায়গা দেখে বসতে বসতে হিসেব কষতে লাগলেন প্রহ্লাদবাবু,একঘন্টায় ডাক্তারবাবু একঘন্টায় যদি চারটে রুগী দেখেন তাহলে তার টার্ন আসতে রাত পৌনে দশটা-দশটা হয়ে যাবে; আর যদি দয়া করে আজ দাঁতটা তুলে দেন তাহলে এগারোটা রোখে কে! দাঁত তুললে আরেক দফা হ্যাপা, ছেলেটাকে ফোন করে ডাকতে হবে। বাড়ির কেউ না থাকলে দাঁত তুলবেন না, এটাই নাকি দস্তুর।      ওয়েটিং রুম...
চেনা অচেনা – রেশমি দত্ত

চেনা অচেনা – রেশমি দত্ত

বিহানবেলায় ৫
চেনা অচেনা রেশমি দত্ত আজ বেসরকারি হাসপাতালের রিসেপশন এরিয়াতে বসে গালে হাত দিয়ে কি যেন গভীরভাবে ভাবছে অনু। অনসূয়া ও মন্দিরা দুই বন্ধু একই বয়সী,এক অফিসে চাকুরীরতা। এক সঙ্গে চাকরি জয়েনও করেছিল তারা,প্রায় আঠাশ বছর এক সঙ্গে কাজ করছে,চাকরি পাওয়ার পরপর বিয়ে করেছিল তারা,তারপর সংসার,ছেলে মেয়ে মানুষ করতে করতে দুজনেরই চুলে পাক ধরল,হাঁটুর ব্যথা ধরল,তবে একজনের  বাঁ হাঁটু আর আরেকজনের ডান। এত কিছুর মধ্যেও দুজনের বন্ধুত্ব  দিনদিন বেড়েছে বৈ কমেনি। সংসার সামলে দৌড়তে দৌড়তে গিয়ে যখন সকাল সাড়ে নটার চার্টার্ড বাসটা ধরতো মন্দিরা,আর উঠেই দেখতো অনু তার পাশের সিট টা রেখে দিয়েছে তখন একটা স্বস্তির হাসি হাসতো সে,আর সারা রাস্তা কথা বলতে বলতে কখন যে ফুরিয়ে যেতো রাস্তাটা। তারপর একসঙ্গে টিফিন খাওয়া,অফিসের পর সংসার ভুলে গিয়ে দুজনে মিলে মাঝে মাঝে সিনেমা দেখা,রেস্টুরেন্টে খাওয়া এগুলো তাদের মধ্যে চলতেই থাকতো। হঠাৎ করে ছ...
প্রকৃতির বন্ধু রাহুল – অজন্তা প্রবাহিতা

প্রকৃতির বন্ধু রাহুল – অজন্তা প্রবাহিতা

বিহানবেলায় ৫
প্রকৃতির বন্ধু রাহুল কলমে - অজন্তা প্রবাহিতা আমার ভাইপো রাহুল ছোট্ট হলেও অসম্ভব কৌতূহলী। সে প্রকৃতি,গাছপালা আর প্রাণীদের নিয়ে জানতে দারুণ ভালোবাসে। একদিন রাতে তার দাদু বললেন,"জানো,দাদুভাই,আমাজন এমন এক জঙ্গল,যেখানে লুকিয়ে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রহস্য।" রাহুল অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল,"কী রহস্য, দাদু?" দাদু মৃদু হেসে বললেন,"শোনা যায়,আমাজনের গভীরে এমন এক গাছ আছে,যা নিজে নিজেই হাঁটতে পারে! কেউ কাছে গেলে তার লতাগুলো সাপের মতো নড়েচড়ে ওঠে। এমনকি,কেউ কেউ বলে,সেই গাছ বড় জন্তু আর মানুষকেও গিলে ফেলতে পারে!" রাহুলের চোখ বড় হয়ে গেল। "সত্যি, দাদু?" দাদু বললেন, "কেউ জানে না সত্যি কি না। আমাজন এখনও রহস্যে মোড়া।" সেদিন রাতে রাহুল যখন ঘুমিয়ে পড়ল,তখনও তার মনে দাদুর কথাগুলো ঘুরছিল। হঠাৎ সে অনুভব করল,সে এক বিশাল সবুজ জঙ্গলের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে! চারপাশে অজস্র লম্বা গাছ, ঝুলন্ত লতা,আর নাম না জানা পাখির ডাক। রাহ...
মহাকাল – কঙ্কণা সেন

মহাকাল – কঙ্কণা সেন

বিহানবেলায় ৫
মহাকাল  কঙ্কণা সেন প্রতিদিন ভেসে চলি শিশু থেকে কৈশোরে যৌবন থেকে প্রৌঢ়ত্বে বয়োজ্যেষ্ঠ থেকে বৃদ্ধত্বে ভেসেই চলি____ মাঝে বয়ে চলে মহাকাল নীরবে,নিঃশব্দে,অব্যক্তে। খড়কুটো কিছু আঁকড়াই বটে তবে কাল-স্রোতে ভেসে যায় সব নিবিড় মুহূর্ত,কথা দেওয়া নেওয়া কত প্রতিশ্রুতি,দৃঢ় অঙ্গীকার জেগে থাকে মহাকাল। তুমি বড়ো নৈর্ব্যক্তিক তোমার অঙ্গুলি হেলনে আমরা পুতুল বৈ তো  নই আর কিছু তবু হাজার বছর ধরে হেঁটেই চলেছি  এই পৃথিবীর পথে। ************************ কঙ্কনা সেন: রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম, এ। ছোট থেকেই কবিতার প্রতি ভালোবাসা। বিশ্বাস মানবতায়। পেশা - শিক্ষকতা।  ...
ধ্রুপদী ভাষা বাংলা এবং মাতৃভাষা দিবস সংক্রান্ত ‘আরো’ কিছু কথা – জয়িতা সরকার

ধ্রুপদী ভাষা বাংলা এবং মাতৃভাষা দিবস সংক্রান্ত ‘আরো’ কিছু কথা – জয়িতা সরকার

বিহানবেলায় ৫
ধ্রুপদী ভাষা বাংলা এবং মাতৃভাষা দিবস সংক্রান্ত 'আরো' কিছু কথা জয়িতা সরকার একুশে ফেব্রুয়ারি 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস'। এটি বাংলা ভাষা দিবস না হলেও বাঙালির দাঁতে দাঁত চেপে বহু যন্ত্রণা সহ্য করে লড়াই করা ও একটি রাষ্ট্র ছিনিয়ে নেওয়ার ক্ষমতার বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এই ঘোষণা হয়েছিল। এই দিনটিতে দিকে দিকে সেই ব্যাপার চর্চিত হয়। ভাষার আবেগ রাষ্ট্রের জন্ম দেয় দেখা গেল। "দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা,কারো দানে পাওয়া নয়"(আব্দুল লতিফ)। খুশির কথা এবং ন্যায্য,ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে বাংলা ভাষা স্বীকৃতি পেয়েছে, অনেকটা দেরিতে হলেও। এর প্রাচীনত্ব,এর সমৃদ্ধি,এর অসামান্য বিস্তার,এর চর্চা,প্রাচীন কাল থেকে একটানা এর পথচলা সবই তো গৌরবময় এক অবস্থান সৃষ্টি করেছে। ক্লাসিক্যাল ভাষার সন্তান বিভিন্ন রাজ্যে এবং সারা বিশ্বে গর্বিত হবে।        কিন্তু বাড়িতে বসেই হোক,আর রাস্তায় বের হয়েই হোক,বিশ্বায়নে...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!