Shadow

Author: Kulayefera

হারায়ে খুঁজি – কল্যানী মিত্র ঘোষ

হারায়ে খুঁজি – কল্যানী মিত্র ঘোষ

কাশবন ৫
হারায়ে খুঁজি রম্য রচনা কল্যানী মিত্র ঘোষ বহু বছর প্রবাসে বসবাস করার ফলে স্বভাবটা কেমন যেন "কাছা খোলা" টাইপের হয়ে গেছে। প্রবাস অর্থাৎ আমেরিকা বলেই এই বদভ্যাস,ইউরোপের কয়েকটা দেশে অবশ্য একটু অসাবধান হয়েছ কী মাল গায়েব! আমেরিকায় এসে পড়েছি প্রায় চব্বিশ বছর আগে। তার আগে কলকাতায় জীবনের একটা বড় সময় কাটিয়েছি আর নানা ভাবে বিভিন্ন প্রিয় বস্তু হারিয়ে (পড়ুন চুরি হয়ে) বিষণ্ন হয়েছি। বাসে উঠলে পকেটমারী না হওয়াটাই আশ্চর্যের,কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের ব্যাগে কত ই বা টাকা পয়সা থাকে,তবু তাতেও নির্দয় কাঁচি চালিয়ে  চামড়ার ওপর বাটিকের কাজ করা প্রিয় ব্যাগকে ফর্দা ফাঁই করে দিয়েছে। টাকার শোকের চেয়েও বোকা বনে যাওয়ায় খুব অপমানিত মনে হয়েছে নিজেকে। কলেজ জীবন শেষে চাকরিতে ঢুকি। এক বান্ধবীর বিয়ে স্থির হয়। তার বাবা অত্যন্ত বিত্তশালী,বেক বাগানের একটি বিশাল বাড়িতে তার বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। আমি ...
মন ভালো নেই – বাদল বসু

মন ভালো নেই – বাদল বসু

কাশবন ৫
মন ভালো নেই বাদল বসু শীতের সকালে হালকা মিষ্টি রোদে ধূমায়িত চায়ের পেয়ালা হাতে নিয়ে খবরের কাগজ পড়া আমার বহুদিনের অভ্যাস। প্রতিদিনের মতো সেদিনও সকালের মিষ্টি রোদে গা এলিয়ে কাগজে চোখ রেখে চায়ের কাপে চুমুক দিতেই লক্ষ্য করলাম একটা ছোট্ট পাখি জানালার কাছে এসে বসলো। তারপর একটু একটু করে পাশে থাকা ডিশের দিকে খুব সন্তর্পণে এগিয়ে আসতে লাগলো | বুঝতে অসুবিধা হলো না যে ডিশে রাখা বিস্কুটের লোভেই ওর এই গুটিগুটি পদচারণ। এরপর ইচ্ছে করেই চোখটাকে খবরের কাগজের দিকে মনোনিবেশ করলাম | কয়েক সেকেন্ড পরেই চোখ ঘোরাতেই দেখলাম ডিশের উপর রাখা বিস্কুট দুটো নেই। কোথায় গেল বিস্কুট ? আর পাখিটাকেও তো দেখতে পাচ্ছি না ! তবে  জানলার কাছে দাঁড়িয়ে বাইরে তাকাতেই দেখলাম রাস্তার ওপারের বাড়ির জানালার উপর সানসেটে বসে পাখিটা মহা আনন্দে ব্রেকফাস্ট সারছে | মা কাপ ডিশ নিতে এসে দেখলেন আমি জানালার কাছে দাঁড়িয়ে বাইরে তাকিয়ে...
ভালোবাসার রং – রেশমি দত্ত

ভালোবাসার রং – রেশমি দত্ত

কাশবন ৫
ভালোবাসার রং রেশমি দত্ত আজ ২৫ বছর পর মিত্র বাড়িতে সানাই বাজছে,পাড়া-প্রতিবেশী,আত্মীয়-স্বজন,বন্ধুবান্ধব সবাই নিমন্ত্রিত। অরিন্দম ও শর্মিলা দুজনে মিলে সবার বাড়িতে গিয়ে নিমন্ত্রণ করে এসেছে। প্রথমে সবাই দুজনের একত্রে এসে নিমন্ত্রণ পত্র বার করাতে ভেবেছিল বোধ হয় ওদের একমাত্র মেয়ে  তিন্নির বিয়ে,কিন্তু পরে বুঝতে পারা গেল যে এটা অরিন্দম ও শর্মিলার বিবাহ বার্ষিকীর নিমন্ত্রণ। হ্যাঁ,এবার ওদের পঁচিশ বছর পূর্ণ হল,সব আয়োজন করা হয়েছে একেবারে পঁচিশ বছর আগের মতন,শুধু পুরোহিতের মন্ত্রপাঠটাই হবে না,বাকি সব রেডি। বিয়ে বাড়ির গেট,ক্যাটারিং,ফুলের মালা,বেনারসি,বিউটিশিয়ান,ফটোগ্রাফার,বরের পাঞ্জাবি,টোপর,মুকুট,জুতো,নতুন খাট তা ও ফুল দিয়ে সাজানো,নতুন ড্রেসিং টেবিল অর্থাৎ পঁচিশ বছর আগের সবকিছুই পাল্টে ফেলতে চেয়েছে শর্মিলা। অরিন্দমের জন্য বানিয়েছে সোনার চেন,আংটি,ঘড়ি। এত খরচা করার পক্ষে অরিন্দমের বিশেষ স...
টংকাবতির পাহাড়ে – মোতাজিদ খুররম

টংকাবতির পাহাড়ে – মোতাজিদ খুররম

কাশবন ৫
টংকাবতির পাহাড়ে মোতাজিদ খুররম নদী-পাহাড়-অরণ্য মানুষকে টানে,পিন্টুকে টানে একটু বেশি। আমরা যাচ্ছি পিন্টুর রবার বাগান দেখতে। বাগানটা জঙ্গলের গভীরে। জীপ গন্তব্যে পৌঁছে গেল।  জায়গাটার নাম টংকাবতি। নামটা সুন্দর। নামের পিছনে একটা কিংবদন্তি আছে,সেটা আরও সুন্দর। সম্রাট শাহজাহানকে বন্দি করার পর তার ছেলে আওরঙ্গজেব ভাইদের হত্যা করতে শুরু করে একে একে। প্রাণের ভয়ে মেজো ভাই সুজা রওনা দেন আরাকানের দিকে। পথে পড়ে এই ঘন অরণ্যের রাজ্য। এখানে তিনি কিছুদিন আত্মগোপন করে ছিলেন। সেই সময় এক সুন্দরী মারমা নারীর প্রেমে পড়েন সুজা। আরাকানে চলে যাওয়ার আগে সেই নারীকে তিনি উপহার দিয়ে যান বাদশাহি মোহর আর মূল্যবান অলঙ্কারে ভরা এক সিন্দুক। অলঙ্কারগুলো সেই নারী ব্যবহার করেছেন নিজের কাজে আর মোহর ভরা সিন্দুকটি পুঁতে রেখেছেন এই অরণ্যভূমির কোনো এক পাহাড়ে। 'কোন্ পাহাড়ে আছে সেই সিন্দুক-কেউ জানে না’ পিন্টু মজা করে বললো,‘সে...
বিপ্লব ও আধ্যাত্মিকতার পীঠভূমি প্রবর্তক সংঘের দেবী দুর্গা – অনির্বাণ সাহা

বিপ্লব ও আধ্যাত্মিকতার পীঠভূমি প্রবর্তক সংঘের দেবী দুর্গা – অনির্বাণ সাহা

কাশবন ৫
বিপ্লব ও আধ্যাত্মিকতার পীঠভূমি প্রবর্তক সংঘের দেবী দুর্গা ও ভারতমাতা আরাধনা অনির্বাণ সাহা দুর্গাপূজা;বাঙ্গালীদের কাছে একটি মহোৎসব,একটি মিলন উৎসব। কিন্তু এই দুর্গাপুজোর সাথে যখন দেশাত্মবোধ,আধ্যাত্মিকতা,বেদান্তবাদ,তন্ত্রসাধনা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় এবং যখন সেই দুর্গাপূজাটি বৈষ্ণব রীতিতে পালিত হয়,তখন সেই দুর্গাপুজাটির মাহাত্ম্য এক অন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়। তখন এটিকে শুধু দুর্গাপুজো না বলে দেশ মাতৃকার আরাধনা বলাই সম্ভবত ভালো। ব্রিটিশদের সামরিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে দেশবাসীর মনস্তাত্ত্বিক শক্তির সঞ্চয় ও তাদের বিরুদ্ধে লড়ার যে মানসিক অবলম্বনের প্রয়োজন হতো তার শক্তি তৎকালীন সময়ে এই সকল পুজো থেকেই মানুষ বা বিপ্লবীরা পেত। ঠিক এরকমই একটি পুজো অনুষ্ঠিত হয় ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত চন্দননগরের প্রবর্তক সংঘে। চন্দননগরের প্রবর্তক সংঘের কথা এলেই সবার আগে যাদের কথা মনে পড়ে ...
যখন অন্য চোখে – অর্চনা মহান্তি

যখন অন্য চোখে – অর্চনা মহান্তি

কাশবন ৫
যখন অন্য চোখে  অর্চনা মহান্তি ------------------------- জরার মধ্যে বাস করতে করতে সতেজতা কাকে বলে ভুলেই গেছি মনে হয় সবকিছুই দোমড়ানো মোচড়ানো,কুঁচকে থাকা বলিরেখায় আক্রান্ত, মাঝে-মাঝে মুখময় মেচেতার ছোপ আর কাঁচাপাকা চুলের মতো দ্বিধায় বিভক্ত। চিকনতা নেই,সবুজ পালিশ নেই,রসালো বৃন্ত নেই পোকায় কাটা সে কুঁড়িতে ফুল ফুটবে কেন ? আশা ভরসা সব মাটি,অথচ পায়ের তলায় তেমনভাবে যেন মাটি নেই। এসব কথা তোমার অসংগত লাগছে বুঝতে পারছি,কিছুই শুনতে চাও না মন দিয়ে, এই দেখ,ভুল বললুম,মন দেওয়া নেওয়ার পাঠ সেই কবেই শেষ,এখন শুধু কথার খই,তবে কথা কেউ শোনেনা,পড়ে,আর সেটাই সুবিধা --- ভেবেচিন্তে যুৎসই মিথ্যে সাজিয়ে দেওয়া যায় পাতে অজুহাত সাজাতেও তেমন কোন আপত্তি নেই। তা যাক সেসব কথা,ভস্মে ঘি ঢালতে আমিও রাজি নই তোমাকে বাতলাতে এসেছিলাম একটা অন্য কথা,গতকাল পার্কে দেখলুম বিস্তর সবুজ,আর দোলনায় দো...
সেই মেয়েটা – শর্মিষ্ঠা দাস 

সেই মেয়েটা – শর্মিষ্ঠা দাস 

কাশবন ৫
সেই মেয়েটা শর্মিষ্ঠা দাস  মেয়েটার সত্যি ক্ষমতা ছিল, ডার্বিকেও আজ মিলিয়ে দিল। মেয়েটার সত্যি ক্ষমতা ছিল, মসনদকেও নাড়িয়ে দিল। ঐ রাতে যখন হচ্ছে ধর্ষণ, কোথায় ছিল পুলিশ-প্রশাসন। মেয়েটার সত্যি ক্ষমতা ছিল, তাই তো অকাল বোধন হল। মেয়েটার সত্যি ক্ষমতা ছিল, বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় তুলল। মেয়েটার সত্যি ক্ষমতা ছিল, লক্ষ্মী'কে সে কালী বানালো। মেয়েটার সত্যি ক্ষমতা ছিল, রাতের শহরকে চিনিয়ে দিল। মেয়েটার সত্যি ক্ষমতা ছিল, জীবন দিয়ে স্টেথোর মান রাখল। মেয়েটার সেদিন কপাল পুড়ল, যেদিন স্বপ্নকে দিয়ে জলাঞ্জলি, অসময়ে মেয়ে চিতায় উঠল। চিতার আগুন নিভল বটে, মনের আগুন জ্বলল। অকালে ও মেয়ে ঝরে গিয়ে, আঁধারে দিশা দেখালো। যা দেবী সর্বভুতেষু শক্তিরূপেণ সংস্থিতা নমস্তসয়ৈ নমস্তসয়ৈ নমস্তসয়ৈ নমো নম হ। **************************    ...
সম্পাদকীয় – ‘ কুলায় ফেরার  চতুর্থ  বর্ষপূর্তি ‘

সম্পাদকীয় – ‘ কুলায় ফেরার  চতুর্থ  বর্ষপূর্তি ‘

চতুর্থ বর্ষপূর্তি
  সম্পাদকীয় ' কুলায় ফেরার   চতুর্থ  বর্ষপূর্তি ' তীব্র দহনের দু:সহ একটা লম্বা সময়ের পর বৃষ্টি ধারায় শুষ্ক ধরা অবশেষে শীতল হতে শুরু করেছে। রুক্ষ ফুটিফাটা মাটি, সিক্ত হয়েছে বর্ষণে। ধুলোময়,নোংরা,বিবর্ণ গাছের পাতাগুলো ধারা স্নানে এখন পরিস্কার,চকচকে,সবুজ,প্রাণবন্ত। এই নীলগ্রহের একমাত্র আত্মঘাতী, ভাতৃঘাতী, অকৃতজ্ঞ মানুষরা বিশ্বের সর্বত্রই অরণ্য ধ্বংস করে বসত বিস্তৃত করে চলেছে। এদেশও পিছিয়ে থাকবে কেন? পুষ্করিণী,জলাশয় বুজিয়ে,তোলা হচ্ছে অজস্র বহুতল। বিপন্ন হচ্ছে বন্যপ্রাণী,পাখিকুল। সাগর/সমুদ্রের পৃষ্ঠতলের তাপমাত্রা ও পৃথিবীর পৃষ্ঠতলের তাপমাত্রার মধ্যে ব্যবধান ক্রমশই কমে আসছে,যার জন্য মৌসুমী বায়ু পৃথিবীর পৃষ্ঠতলে প্রবেশ করতে সময় নিচ্ছে। ফল স্বরূপ,বর্ষা দেরীতে শুরু হচ্ছে। আগামী দিনে এই ঘটমান বিষয় আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে চলেছে। বিশ্বের তাপমাত্রা ৬০ ডিগ্রী ছুঁই ছুঁই! তবে এবারের মত বর্ষা এসে য...
আয় তবে সহচরী ……. – ব্রতী ঘোষ

আয় তবে সহচরী ……. – ব্রতী ঘোষ

চতুর্থ বর্ষপূর্তি
" আয় তবে সহচরী ....... " ব্রতী ঘোষ দীপম স্যারের কোচিং এ আসতে আজকে বেশ দেরি হয়ে গেছে নীলের | কোনরকমে সাইকেলটাকে রেখে হুড়মুড় করে ও যে চেয়ারটা খালি পায় সেটাতেই আজ বসে পড়ে  | দীপন স্যার অঙ্ক করান | এমনিতে স্যার খুব ভালো কিন্তু দেরি করে ক্লাসে ঢুকলে স্যার বেশ রেগে যান | ওদের সবার নির্দিষ্ট চেয়ার আছে। কিন্তু আজ দেরি হয়ে যাওয়াতে নীল সৃজনের খালি চেয়ারটাতে বসে পড়ে। ওর স্যার অঙ্কের বই থেকে চোখটা তুলে একবার নীলকে দেখে নিলেন। নীল একবারও স্যারের দিকে তাকালো না। অঙ্কতে খুব একটা চৌখশ কোনদিনই নয় নীল কিন্তু ওর মুখের দিকে তাকালে স্যারের অদ্ভুত একটা মায়া হয়। আর সেই জন্য নীলকে কিছু বলতে পারেন না উনি। নীল পৌঁছবার আগেই স্যার দুটো অঙ্ক করিয়ে ফেলেছেন | কি হবে এখন ? ক্লাস শেষ হওয়ার পর তড়িঘড়ি ক্লাস থেকে বেরিয়ে নীল স্যারের বাড়ির গেটে দাঁড়িয়ে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ পর সম্প্রীতি বেরোয় | 'কি রে ন...
শূন্যতার ফেরিওয়ালা – মণি ফকির

শূন্যতার ফেরিওয়ালা – মণি ফকির

চতুর্থ বর্ষপূর্তি
শূন্যতার ফেরিওয়ালা          মণি ফকির আরো একবার দুচোখ নামিয়ে, দুহাত দিয়েছি বাড়িয়ে। দ্বিধাহীন শূন্যতা দাও ভরিয়ে। অনাবৃষ্টির ফসলী জমির মত। ফিরে যাওয়ার সময় হয়ে এল। মনসুরের বন্ধ দোকান, দীপুর থেমে থাকা টোটো, খোকনের সব্জির ঠেলা, দিগন্তবিস্তৃত অকাল অবসর ঠেলে, আমায় এগোতেই হবে, দ্রুত পা চলিয়ে। যত পারো বেশি করে দিও। শূন্যতা ফেরি হবে, রাত্রির শেষ ট্রেনে। আবছায়া মেখে সুর করে করে। "নেবে নাকি গো?,সস্তায় দেবো। একটার দরে পাঁচ টা।" শুনেছি এ মরসুমের ফলন ভালো। আকাশ ভারী হয়ে এল। এবেলা না বেরোলেই নয়। একটু তাড়াতাড়ি,আরেকটু.... বেআক্কেলে সুসময়, রেল গেট নামিয়ে ফেলার আগে ************************* মণি ফকিরের জন্ম শিল্পনগরী বার্ণপুরে। সাহিত্য চর্চার অভ্যাস ছাত্র জীবন থেকেই। অনুপ্রেরণা মা ও মামার কাছ থেকে। প্রথম কবিতার বই *মণি ফকিরের পদাবলী* প্রকাশিত হয় ২০১৮ পূজোয়। গল্পকারের মূল বৈশিষ্ট্য ...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!