Shadow

Author: Kulayefera

মান – জলি চক্রবর্তী শীল

মান – জলি চক্রবর্তী শীল

গল্প
মান জলি চক্রবর্তী শীল আল্লাহ মেহেরবান!! মনে মনে আল্লাহকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানায় ফরিদা| এবারটায় তার ছেলে হয়েছে| ওয়াকিব হালদারের বংশে প্রদীপ এসেছে। সাত মেয়ের কোলে ছেলে। ফরিদার মনেও আহ্লাদ। কাল হাসপাতাল থেকে ছুটি পাবে সে। তারপর সে‚ওয়কিব হালদারের গর্বিত বউ ছেলে কোলে বাড়ি ফিরবে সেই পাড়া দিয়ে যে পাড়ায় সবাই বলত তাকে অপয়া। এই বউয়ের কোল থেকে কোনদিনই ছেলে জন্মাবে না। শুধু কি পাড়া প্রতিবেশী‚ ওয়াকিবের মা কি কম তানা দিয়েছে। আর ওয়াকিব‚ সেও তো ছেড়ে কথা বলেনি। আল্লাহর দোরে মান্নত মেনেছে ফরিদা কত বার। মাদুরের মত নিজেকে বিছিয়ে দিয়েছে ওয়াকিবের শরীরের তলায়  একটা ছেলের আশায়। অবশেষে আল্লাহ দয়া করেছেন। ফরিদার চোখ দিয়ে জল চুঁইয়ে নামে। এটা ফরিদার দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম বিয়ে মাত্র এগারো বছর বয়সে। বিয়ে কি তা জানার আগেই ফরিদার বিয়ে হয়ে যায় সুলতান আহমেদের সাথে। ফরিদা তখন সবে গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা করছে। একদিন লেখাপড়া ...

দ্বাদশ জ্যোতিরলিঙ্গের (দ্বিতীয় পর্ব) – বিজিত কুমার রায়

দেখবো এবার জগৎটাকে
দ্বাদশ জ্যোতিরলিঙ্গের (দ্বিতীয় পর্ব) জ্যোতিরলিঙ্গ বিশ্বনাথ বিজিত কুমার রায় বিশ্বেশম মাধবং ঢুন্ডিং দণ্ডপানিঞ্চ ভৈরবম। বন্দে কাশী, গুহাম গঙ্গাম, ভবানী মনিকর্নিকাম এই বন্দনা করে কাশী ধাম ঢোকার প্রচলন। আয়ু বংশের মহারাজা কাশের নাম থেকে হয় কাশী। বরুনা আর অসি এই দুই সঙ্গমে বলে বারাণসী। কথিত কাশী মহাদেবের ত্রিশূলের ওপর স্থিত বলে কোনো ধ্বংস প্রাপ্ত না হয়ে পৃথিবীর প্রাচীনতম নগরী। দশাশ্বমেধ রোড ধরে পশ্চিম দিকে গিয়ে উত্তর দিকে বিশ্বনাথ গলি। মন্দির এই গলিতেই। প্রসঙ্গত আমাদের থাকাও এই গলিতেই। এই গলিতে ঢুকলেই দুধ জ্বাল দেওয়ার, ধূপের, ফুলমালার, পান মশলার, আতরের ও গোবরের মিশ্রিত গন্ধ পাওয়া যায়। আওয়াজ পাওয়া যায় যাত্রীদের হর হর কাশী বিশ্বনাথ অন্নপূর্ণা ডাকের। আর অবশ্যই সাবধান থাকতে হয় সরু গলিতে মহাদেবের বাহনের স্পর্শ এড়াতে। প্রথমে পড়ে অষ্টমবর্ষীয় শঙ্করাচার্যের শ্বেত পাথরের মূর্তি। তারপর কোটিশ্বর আড়াই ...
আঠাশে সেপ্টেম্বর – প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

আঠাশে সেপ্টেম্বর – প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

গল্প
আঠাশে সেপ্টেম্বর প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় শুভ যখন স্টেশনে পৌঁছলো, তখন আটটা তিরিশের ট্রেনটা ঢুকছে। এই ট্রেনটা ধরলে মেদিনীপুরে সাড়ে নটার মধ্যে নেমে যাওয়া যায়। নটা চল্লিশের বাসটা ধরতে সুবিধে হয়। অফিসে পৌঁছতে খুব বেশী দেরী হলেও দশটা কুড়ি। কিন্তু পরের ট্রেনে গেলেই সাহেবের সুমধুর বাণী শুনে তবেই টেবিলে বসতে পাবে। ট্রেনটা বেরিয়ে যেতে দেখে শুভ-র মুখটা ভার হয়ে গেল। আজ আবার সাহেবের সুরেলা বচন হজম করতে হবে। কিন্তু আজ সে নিরুপায় হয়েই ট্রেনটা ছেড়ে দিলো। মান্থলিটা কালই দেহ রেখেছে। টিকিট চেকার প্রতিটি নিত্যযাত্রীকে বিলক্ষণ চেনেন। তিনি টিকিট দেখতে চাইবেনও না। তবু, নিজের কাছে ছোটো হওয়ার পক্ষপাতী নয় শুভ। চোরের মতো বিনাটিকিটের যাত্রী হয়ে ট্রেনে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। পরের ট্রেন দশমিনিটের মধ্যেই। এদিকে লাইনে এখনো জনা দশেক দাঁড়িয়ে। পেছন থেকে একজন চেঁচিয়ে উঠলো, “ও টিকিট দাদা, আপনার একটা সেলফি দেবেন প্লীজ।...
স্মরণে বরণে কিংবদন্তী সুরকার ও শিল্পী শৈলেন মুখোপাধ্যায় – রাজেশ দত্ত

স্মরণে বরণে কিংবদন্তী সুরকার ও শিল্পী শৈলেন মুখোপাধ্যায় – রাজেশ দত্ত

সংস্কৃতির বৈঠক
‘বারে বারে কে যেন ডাকে আমারে? কার ছোঁয়া লাগে যেন মনোবীণা তারে?’ স্মরণে বরণে কিংবদন্তী সুরকার ও শিল্পী শৈলেন মুখোপাধ্যায় শৈলেন মুখোপাধ্যায় (জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯৩১ — মৃত্যু: ৮ নভেম্বর, ১৯৭৮) ছিলেন বিশ শতকের পাঁচের দশকের শেষার্ধ থেকে সাতের দশক পর্যন্ত সময়কালে বাংলা স্বর্ণযুগের গানের জগতের এক অগ্রগণ্য সুরস্রষ্টা ও শিল্পী। সুদর্শন, সৌম্যকান্তি, সদাশয় ও মিষ্টভাষী এই মানুষটি ছিলেন একাধারে গায়ক, সুরকার এবং সংগীত শিক্ষক। মাত্র সাতচল্লিশ বছরের স্বল্প আয়ুষ্কালে এমন সব কালোত্তীর্ণ গান সৃষ্টি করেছিলেন যে, আজও সেই গানগুলি সংগীতপ্রেমী বাঙালিদের বিমোহিত করে। এছাড়া তাঁর সুমধুর ও অনিন্দ্যসুন্দর রোম্যান্টিক আবেশে পরিপূর্ণ দরদি কণ্ঠের গানগুলিও বাংলা গানের চিরায়ত সম্পদ। ১৯৫৭ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে জীবনের প্রথম রেকর্ডেই তাঁর কণ্ঠে ‘স্বপ্ন আমার ওগো সপ্তরঙের প্রজাপতির পাখা’ এবং ‘স্বাতী তারা ডুবে গেল’ গান ...
রামগড় পর্বত শিখরে – অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য

রামগড় পর্বত শিখরে – অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য

পাকা চুলের কলমে
রামগড় পর্বত শিখরে অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য সম্প্রতি সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে যে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শাখা খুলবার সিদ্ধান্ত সরকারী অনুমোদন লাভ করেছে এবং সেই শাখাটি  স্থাপিত হতে চলেছে উত্তরাখণ্ড প্রদেশের কুমায়ুন অঞ্চলের অন্তর্গত "রামগড়"* নামক একটি স্থানে। এই আপাত অখ্যাত "রামগড়" স্থানটিতে বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় শাখা নির্বাচনের তাৎপর্য্য সাধারণ পাঠককুলকে অবগত করাতেই আমার এই নিবেদন। আর তার জন্য বর্তমান সময় থেকে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে প্রায় এক শতাব্দীরও কিছু বেশী সময় আগে। আসুন আমরা সেই অতীতের পথে কালান্তরে ভ্রমণ শুরু করি। কাহিনীর শুরু এক কিশোরের পথচলা দিয়ে। কলকাতার এক অভিজাত পরিবারের সেই কিশোরের পিতা তাঁর পুত্রকে এক আদর্শ  ব্রহ্মচর্যাশ্রমে প্রতিপালিত করে তুলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাই তিনি তাঁর পুত্রকে ব্রহ্মচর্যাশ্রমের কঠোর জীবনের প্রত্যক্ষ অনুভবের স্পর্শে দীক্ষিত করার উদ্দেশ্যে পদব্রজে তীর্থ...

Night Views Hongkong – সম্রাট দাশগুপ্ত

খিচিক্
আই এফ সি বিল্ডিং - Night Views Hongkong চিত্রগ্রাহকঃ সম্রাট দাশগুপ্ত Camera - Sony A9 Lens For landscape night shots Sony G-Master 16-35mm ,F2.8 ********************************************* সম্রাট দাশগুপ্তর পরিচিতিঃ সম্রাট দাশগুপ্ত হংকং নিবাসী একজন অতি উৎসাহী যোগ শিক্ষক। বিশ্বব্যাপী যোগ শিক্ষক শিক্ষিকা দের প্রশিক্ষণ দেন, যোগ কর্মশালা এবং রিট্রিট করেন। ফটোগ্রাফি, ওয়েট প্রশিক্ষন, ব্যাডমিন্টন খেলা ওনার শখ।...
নীলটুনি – ভাস্কর চ্যাটার্জি

নীলটুনি – ভাস্কর চ্যাটার্জি

খিচিক্
নীলটুনি  (The purple sunbird) চিত্রগ্রাহকঃ ভাস্কর চ্যাটার্জি নীলটুনি (The purple sunbird), দুর্গা টুনটুনি বা মধুচুষকি পরিবারের একটি ক্ষুদ্রকায় মধুপায়ী পাখি। ভারত ছাড়াও দক্ষিণ, দক্ষিণ এশিয়া এবং আরব উপদ্বীপে দেখতে পাওয়া যায়। মূলত মধু পান করে তবে পোকামাকড়ও খায়, বিশেষ করে যখন বাচ্চাদের খাওয়ায়। হামিং বার্ডের মতো এরাও বাতাসে স্থির থেকে উড়তে পারে। বাতাসে তীব্র গতিতে ঢেউ খেলিয়ে, এ ফুল থেকে ও ফুলে উড়ে উড়ে মধু পান করে। খুব চঞ্চল। ফুলের বোঁটায় বসে বাদুড়ের মতো ঝুলে মধু পান করে। খুব ভালো করে লক্ষ্য করলে পুরুষ নীলটুনির রং ধাতব-বেগুনী যা দূর থেকে কালো মনে হয়, গায়ে সরাসরি আলো পড়লে বোঝা যায় দেহে কতো চাকচিক্য। স্ত্রী নীলটুনির উপরের দিকটা ফিকে জলপাই রঙের। নিচের অংশ হালকা হলুদাভ এবং তাতে হলুদের বিভিন্নতা দেখা যায়। ব্যাবহৃত ক্যামেরাঃ ক্যামেরাঃNickon 7200D, লেন্সঃ Nickon 200/500mm ************...
দশাবতার তাসঃ এক লুপ্তপ্রায় শিল্প ও খেলার উৎস সন্ধানে – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

দশাবতার তাসঃ এক লুপ্তপ্রায় শিল্প ও খেলার উৎস সন্ধানে – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রবন্ধ
দশাবতার তাসঃ এক লুপ্তপ্রায় শিল্প ও খেলার উৎস সন্ধানে সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘সর্বনাশা’ তকমা জুটলেও ‘রঙ্গে ভরা’ বঙ্গদেশে তাসখেলার জনপ্রিয়তায় কোনোদিনই ভাঁটা পড়েনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নষ্টনীড়’-এর চারুলতা ও মন্দাকিনীর মতো অন্তঃপুরে নারীরা এখন আর বিশেষ তাস খেলেনা সত্য। কিন্তু শহর-মফস্বলে ভিড়ে ঠাসা লোকাল ট্রেনের এক চিলতে বসার আসনে বা গ্রামের বুড়ো বটতলায় কি ভাঙা মন্দির-চত্বরে ছেলে-বুড়োর দল জমিয়ে বসে তাস খেলছে, এ ছবি দুর্লভ নয়। যদিও ইউরোপীয়রা এদেশে নোঙর ফেলার আগে সাহেব-বিবি-গোলামের বাহান্ন তাসের সঙ্গে ভারতীয়দের পরিচয় ছিলনা। পঞ্চদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে জার্মানীতে জোহানেস গুটেনবার্গের আবিষ্কৃত যন্ত্র মুদ্রণ ব্যবস্থায় বিপ্লব আনলে ইউরোপে বিপুল পরিমানে কাগজের তাস তৈরি হতে থাকে। ফলে সেখানকার বিভিন্ন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও তাসখেলা ছড়িয়ে পড়ে। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে আমাদের দেশের বাজারেও আসতে শুর...
প্রকৃতির সন্তান – সোমনাথ দাস অধিকারী

প্রকৃতির সন্তান – সোমনাথ দাস অধিকারী

প্রবন্ধ
প্রকৃতির সন্তান (ওলট চন্ডাল- gloriosa superba) সোমনাথ দাস অধিকারী মনে হয় মানব শিশু মাতৃস্তন্য পান করেছিল বলে পানীয়কে এত ভালবাসে ,শরীরের ৭৫% ভাগ জলীয় অংশ মাত্র ২৫% শক্ত বস্তু। হ্যাঁ কথা হচ্ছিল পানীয় নিয়ে, আমরা মানুষ নানান রকম পানীয় ব্যবহার করি, নানা জাতের স্বাদে-গন্ধে ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন নামে। সপ্তসতী চন্ডীকে দেবী দুর্গা বলেছেন, --"গর্জ  গর্জ ক্ষণং মূঢ়"। "মধু যাবৎ পীবামহ্যৎ"  এই বাক্য দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করার আগে, শক্তি সঞ্চয় পূর্বক দেবী মধু রূপে সুরা পান করেছিলেন। এই ঘটনা অনেক প্রাচীন। অতীতে শক্তির উৎস হিসেবে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন আদিম জাতির ভিন্ন ভিন্ন পানীয় ছিল। আজকে খুব প্রাচীন সাঁওতাল জাতির প্রিয় পানীয় "হেঁড়্য/হাড্ডি" সম্বন্ধে বলছি। ওদের সমাজে বিবাহ সবচেয়ে বড় আনন্দদায়ক উৎসব। মেয়ের বাড়িতে ছেলেরা তাদের পরিবারের সমস্ত সদস্য/ সদস্যা, প্রতিবেশী সহ দলবেঁধে ধা...
বলা যায় – অনুপ ঘোষাল

বলা যায় – অনুপ ঘোষাল

কবিতা
বলা যায় অনুপ ঘোষাল নিভৃতের দিকে হেঁটে গেলে বৃষ্টিরা বৃষ্টির সাথে মিশে যায়। মেঘেরাও ফেলে আসে নামডাক, আদরে জড়িয়ে ধরে কুয়াশা গন্ধমাখা মিহি সন্ধ্যার গান। এলানো দুপুরগুলো রাখা থাকে নোঙরবিহীন। গাছে গাছে এলোমেলো শীত ফুটে থাকে! বড় বেশি মিঠে লাগে কাকভেজা বিডিও অফিস। একটু বাঁদিকে গেলেই বোধগম্য নদী-ঋণ, ধোয়ামোছা জাতীয় সড়ক। এরা সব মুখ বুজে থাকে অবুঝ তালুর ভিতর। শেষ বাস চলে গেলে দৃষ্টি সরিয়ে রাখে মাইলফলক। একসাথে ভিজে যায় ঝুঁকে থাকা ল্যাম্পপোস্ট, আনমনা বীজধান আর অনর্গল চাঁদ। নোনা দেওয়ালের গায়ে সযত্নে আঁক কেটে যায় কেউ। ফেলে যায় দোরগোড়া কিছু। তাঁকেই সম্পূর্ণ ভাবি! ভেবে ফেলি শূন্যতর সুখ! সেই ভুলে, নিজেকে সাজিয়ে রাখি সম্পন্ন তাঁবুর আড়ালে। ঠিক যেন তোমাদের পাড়া। মুড়ে নিতে চাই সবটুকু মায়া সোহাগী থলিতে। তারপর চড়ে বসি অলীকের পিঠে অবুঝ শিশুর মতো। রেডিওটা বেয়াদপ বড়! বারবার বলে চলে - ...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!