সব্যসাচী দাশগুপ্ত পরিচিতি - যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সমাপ্ত করার পর , দীর্ঘ সময় ধরে একটি বহুজাতিক সংস্থায় সাফল্যের সঙ্গে কর্মজীবন কাটিয়ে বর্তমানে সদ্য অবসরপ্রাপ্ত। লেখালেখি ও ছবি আঁকা বরাবরই তাঁর মন টানে। তাই এই অবসর জীবনে আবার নতুন করে সৃষ্টির উন্মাদনায় নিজেকে ব্যাপ্ত করেছেন ।
...
যুদ্ধ
কাজরী বসু
মধ্যিখানে ব্রেক নিও আজ। যুদ্ধটায়।
অনেক যুদ্ধ ঘরেই রইল। বন্দুকও।
চোখ রেখেছে মেয়ের দিকে। জঙ্গিরা।
ছিঁড়ছে খাচ্ছে হাত বাড়াচ্ছে। জঙ্গি নয়?
উগ্রগন্ধী আগুন পুষছি। ডোমেস্টিক ।
হিংসে রাখছি হিংসে খাচ্ছি। খুঁজছি ব্লেড।
কান্নাগন্ধে উথলে উঠল রান্নাঘর।
অন্য আর কী ব্যাখ্যা দিচ্ছ সন্ত্রাসের?
হচ্ছি বন্ধু হইনি বন্ধু, জানলে না।
রাগ রেখেছি গুপ্ত অস্ত্রে। বাঘনখে।
বোতল ভরছি কোতল করছি। হাসছি খুব।
আমার কাছে অর্থ শিখবে কোন প্রেমের?
গন্ধ আসছে। গন্ধ পাওয়ার প্রশ্নতে
উত্তরে ভুল,দক্ষিণে ভুল। কোনটা ঠিক?
যুদ্ধ হচ্ছে যুদ্ধ চলছে সবখানে।
পারলে থামাও। বাঁধ দিয়েছ বন্যাতে ?
কাজরী বসু :
কাজরী বসু কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে সাম্মানিক বাংলায় স্নাতক। স্নাতকোত্তর পড়াশোনা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বাংলায় মাস্টার্স করার পর শিক্ষাব্রতী কাজরী নিয়মিত সাহিত্যচর্চা করেন।...
যন্ত্রবৎ
দিলীপকুমার মিত্র
বৃষ্টিস্নাত শীতের সকালে যখন
হাওয়ার ডানায় ভর করে
শীকরেরা হানা দেয় ঘরে,
লুটোপুটি খায় সোয়েটারে, চাদরে ---
তখনই, কেবল তখনই আমার
হিমের জন্যে মন কেমন করে
নইলে শীকর তো ঝর্ণাকলেও ওড়ে!
ঘোরতর শীতের মাঝেও যেদিন
মেঘলা আকাশ, তাই মৃদু মৃদু ঘাম
বালাপোশ বাড়তি মনে হয়,
জড়ো হয় পায়ের তলায় ---
সেইদিন, কেবল সেইদিনই আমার
ওমের জন্য মন কেমন করে,
নইলে উত্তাপ তো হীটারও ছড়ায়!
প্রতিদিনের আসা যাওয়ার মাঝে,
পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে হঠাৎ দেখা
যেদিন বাঁধভাঙা কলতান আনে
হৃদয়, শরীর জুড়ে, আনে মনেপ্রাণে ---
সেই, কেবল সেই মুহুর্তেই আমার
তোমার জন্যে মন কেমন করে,
নইলে যন্ত্রবৎ তুমিই তো নিত্য এ জীবনে ।।
দিলীপকুমার মিত্র
দিলীপকুমার মিত্র পরিচিতি: পৃথিবীর আলো দেখা ১৯৬৬ সালে। বেড়ে ওঠা এবং পড়াশোনা বর্ধমান শহরে। পেশায় একটি সর্বভারতীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আধিকারিক। নেশায় পাঠক। শখে লেখালেখি।...
'বাংলার বুলবুল' উমা বসু : জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধাঞ্জলি
রাজেশ দত্ত
উমা বসু। স্বর্ণযুগের বাংলা গানের আকাশে এক ক্ষণপ্রভা উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিশ শতকের দুই ও তিনের দশকে বাংলার সংগীত জগতে তিনি ছিলেন এক বিস্ময় প্রতিভা। 'বাংলার বুলবুল' হিসেবে খ্যাত উমা বসু তাঁর ডাকনাম 'হাসি' নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। অনন্যসাধারণ এই সংগীত শিল্পীর জন্ম ১৯২১ সালের ২২ জানুয়ারি। জীবনাবসানও ওই একই তারিখে, ২২ জানুয়ারি, সালটা ১৯৪২। জন্মগ্রহণ আর অকাল মৃত্যুর মধ্যে মাত্র একুশটি বসন্ত। এই স্বল্প আয়ুষ্কালেও তাঁর সাংগীতিক প্রতিভার কী অলোকসামান্য বিচ্ছুরণ! কিন্নরকন্ঠী এই গায়িকার অপ্রতিম গানের উজ্জ্বল আলোকচ্ছটায় বাংলা সংগীতের প্রাঙ্গণ উদ্ভাসিত হয়েছিল।
কলকাতায় শিল্প-সংস্কৃতির ঐতিহ্যসম্পন্ন এক নামী, বিদগ্ধ ও অভিজাত পরিবারে তাঁর জন্ম হয়েছিল। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। মায়ের নাম প্রভা বসু (মিত্র)। খ্যাতনামা স্থপত...
জলসাঘর
দেবশ্রী রায়
তুমি ও তানপুরা জুড়ে স্মৃতিজল
কোন মেঘ বিকেলে
জানালায় বেসামাল আলো এলে
সাত সুরের সিঁড়ি ভেঙ্গে ক্লান্ত পায়ে হেঁটে যাই,
আঙ্গুলের ডগা থেকে খসে পড়েছে
ভৈরবী -ইমন- আশাবরী।
জল সরে গেলে মালকোষ আসে,
মধুবন্তী আসে,
গান ও গল্প জুড়ে এক গভীর আবহের অনুরণন
তরঙ্গের উৎস আঙুলে আজও তীব্র কম্পাঙ্ক,
স্বপ্নপুরী থেকে উঠে আসে গান্ধর্বী
শব্দের ঢেউ ভেঙে শুরু হয় নতুন সরগম।
আমার ঘরের ভেতর তখন জলসাঘর।।...
বলা যায়
অনুপ ঘোষাল
নিভৃতের দিকে হেঁটে গেলে
বৃষ্টিরা বৃষ্টির সাথে মিশে যায়।
মেঘেরাও ফেলে আসে নামডাক,
আদরে জড়িয়ে ধরে কুয়াশা গন্ধমাখা
মিহি সন্ধ্যার গান।
এলানো দুপুরগুলো রাখা থাকে নোঙরবিহীন।
গাছে গাছে এলোমেলো শীত ফুটে থাকে!
বড় বেশি মিঠে লাগে
কাকভেজা বিডিও অফিস।
একটু বাঁদিকে গেলেই
বোধগম্য নদী-ঋণ,
ধোয়ামোছা জাতীয় সড়ক।
এরা সব মুখ বুজে থাকে অবুঝ তালুর ভিতর।
শেষ বাস চলে গেলে
দৃষ্টি সরিয়ে রাখে মাইলফলক।
একসাথে ভিজে যায়
ঝুঁকে থাকা ল্যাম্পপোস্ট,
আনমনা বীজধান আর অনর্গল চাঁদ।
নোনা দেওয়ালের গায়ে সযত্নে
আঁক কেটে যায় কেউ।
ফেলে যায় দোরগোড়া কিছু।
তাঁকেই সম্পূর্ণ ভাবি!
ভেবে ফেলি শূন্যতর সুখ!
সেই ভুলে,
নিজেকে সাজিয়ে রাখি সম্পন্ন তাঁবুর আড়ালে।
ঠিক যেন তোমাদের পাড়া।
মুড়ে নিতে চাই সবটুকু মায়া সোহাগী থলিতে।
অনুপ ঘোষাল পরিচিতি
পঃ বঙ্গ সরকারের একজন সাধারণ কর্মচারী। স্কুল, কলে...