Shadow

Author: Kulayefera

রাগে অনুরাগে – সুরজিত সরখেল

রাগে অনুরাগে – সুরজিত সরখেল

"পার্বণী ১৪৩০"
রাগে অনুরাগে সুরজিত সরখেল কতদিন পর সুধাময় লোকাল বাসে উঠলো। আসলে উঠতে বাধ্য হল। করোনা অতিমারী একেবারে চলে যাবার পর,যখন মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক ছন্দে ক্রমশ: আসতে শুরু করেছিল, ততদিনে অনেক অভ্যাস আর বদভ্যাসও,মানুষ একটু একটু করে ভুলতে বসেছিল। যেমন, অফিস থেকে মেট্রো করে শ্যামবাজারে নেমেই ঘোষ দা,বোস দা,তন্ময়,আর সুধাময় উত্তর পূর্ব দিকে একটা ছোট্ট তেলেভাজার দোকানে নিয়ম করে প্রতিদিন গরম গরম পেঁয়াজি আর আলুর চপ গোগ্রাসে গিলতো! সেটা আবার অফিসের হেড ক্যাশিয়ার নীলিমা সেনের চোখে একদিন পড়েছিল। বেশ রাশভারী,গম্ভীর,মেজাজি ভদ্রমহিলা,চোখ সরু করে সুধাময়ের দিকে তাকিয়ে বলেছিল,"এই ভর সন্ধ্যেবেলায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে তেলেভাজা না খেয়ে বাড়িতে গিয়ে হাতমুখ ধুয়েই তো খেতে পারতেন! যত্তসব! আপনাদের দেখে মনে হচ্ছে কতগুলো ষাঁড় রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জাবনা কাটছে !”ভীষণ রেগে গিয়েছিল ওরা সবাই। আসলে...
আহোম রাজবাড়ী তলাতল ঘর – অজন্তা প্রবাহিতা

আহোম রাজবাড়ী তলাতল ঘর – অজন্তা প্রবাহিতা

"পার্বণী ১৪৩০"
তলাতল-ঘর-আসাম আহোম রাজবাড়ী তলাতল ঘরঅজন্তা প্রবাহিতা ভারতের উত্তর পূর্ব সীমান্তে  অসম রাজ্যর  সমৃদ্ধশালী  ইতিহাস ও রহস্যময়ী প্রকৃতি সকলকেই আকর্ষিত করে। প্রাচীন তথ্য অনুযায়ী অসমের অংশ ছিল কামরূপ এবং রাজধানী ছিল প্রাগজ্যোতিষপুর (বর্তমান গুয়াহাটি শহর)। অসম কন্যা হবার কারণে  চোখের সামনে বহু  ইতিহাসকে  চাক্ষুষ দেখেছি এবং তার রোমাঞ্চ অনুভব করেছি।পাল,কোচ,কছারি এবং চুটিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন রাজবংশ দ্বারা শাসিত হয়েছিল অসম। ১৩শ শতাব্দীতে আহোমরা মিয়ানমার থেকে পাটকাই রেঞ্জ অতিক্রম করে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রবেশ করে।কোনো রকম প্রতিষ্ঠিত রাজার সঙ্গে যুদ্ধ না করেই নিজেদের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আহোমরা।১২২৮ থেকে ১৮২৮ পর্যন্ত আহোম রাজারা প্রায় ৬০০ বৎসর নিজেদের সার্বভৌমত্ব বজায় রেখেছিল এবং অসমে মোগল সাম্রাজ্য স্থাপনে বাধা দিয়েছিল। রাজকুমার সাউলং সুক...
ঝরা পৌষের চারণ – মণি ফকির

ঝরা পৌষের চারণ – মণি ফকির

"পার্বণী ১৪৩০"
ঝরা পৌষের চারণ মণি ফকির..........................  বিষাদ ছুঁয়েছ চোখ, নাকে ফসলের ঘ্রাণ। অবিরত ভাঙে শোক, বুকে কার্তিক অঘ্রাণ। চরণ চেয়েছে জল। মুক্তিযুদ্ধে শুদ্ধি খোঁজেনি, রুদ্ধ শ্বাসের দল।চোরাবালি মন দেখে প্রিয়জনতলিয়ে যাওয়ার আগে।এখনও স্থায়ীর কোমল নিষাদনিষ্কলঙ্ক লাগে।এখানেই কবিতা থামবে আর তারপর একটা চারণ।ইন্টারল্যুড থেকেই ধরি?................................. মাঘের বাতাসে আদুরে শীতপরিযায়ী পাখিরা এখনওফেরার কথা ভাবেনি। তোমার আবার বেরিয়ে পড়ার কাল।শুনেছি এবার নাকি মেঘের দেশে?কলাবতীর মধুর চলনে, সোহগী ধানের ফলনে;তোমার মুক্তি স্নান।আবার তোমার পরবাস।মৃদু লয়ে চলে শ্বাস।ভালো কথা, একটা পাথর এনআর এক আঁজলা নদীর নীর।আবার কোনো অজানা বাঁকেমৌসুমী ভেসে যাওয়া,এক অনামী সন্ধ্যায়।ঝরা পৌষের চারণ। একলা শোনায় বারণ। *****************...
কবিতা – দীপন মিত্র

কবিতা – দীপন মিত্র

"পার্বণী ১৪৩০"
গোলাপের ঈর্ষাদীপন মিত্র ভিখিরি করেছ তুমি,গোলাপের ঈর্ষাআমি তো উত্তরবাসী,বনেদি জেনো হেতোমাদের রাজধানী,বুরুজ,গম্বুজআমার জগতে নেই, আমি আছি তবুমেঘের আড়ালে থাকা নক্ষত্রের মতোতোমারই তো মনে! নই আশ্চর্য সম্পদ?তোমার স্মৃতিতে আছি ভোরের তারাটিপল্লব-বেষ্টিত লেবু ফুল যেন দোলেপ্রশান্ত সাগর তীরে যার ঘরখানিতেমনই লাবণ্যে আছি, সরল আনন্দেএকটি জাহাজ আসে আমার দুয়োরেতারারা জড়ায় তার মাস্তুলে, রজ্জুতে।************************************** রাত্রির গর্জাস রূপেদীপন মিত্র রাত্রির গর্জাস রূপে নয়ন ধাঁধিয়ে যায় প্রায়নক্ষত্রের কাচুলিতে আবৃত ঊর্ধ্বগ কুচযুগকিরণ কিরীটি শিরে,ললাম অঞ্জনচক্র ছেয়েসীতাহার ঢাকে স্তনবিভাজিকা;চকিত তড়িৎছোটে রাতে;চমৎকৃত বাজুবন্ধ খুলি খুলি যায়শ্বেতাভ শাঁখার বালা সফেন ঢেউয়ের মতো আসেকটিবন্ধে ঊর্মিমালা উচ্ছ্বসিত বঙ্গোপসাগরআভূষিত রাত্রি যবে নৃত্য করে অঙ্গুরীয় ছোঁড়েতারার জ্যোৎস্নার মত...
তাথৈ & অথৈ – দেবযানী ঘোষ

তাথৈ & অথৈ – দেবযানী ঘোষ

"পার্বণী ১৪৩০"
PC Iconscout তাথৈ & অথৈ দেবযানী ঘোষ ডাঃ কেয়া মুখার্জী  চোখে মুখে মিটিমিটি  হাসি নিয়ে গালে হাত দিয়ে বসে আছেন চেয়ারে,তাঁর নিজস্ব চেম্বারে। দৃষ্টি অদিতি আর তমালের দিকে। গলায় একরাশ উৎকণ্ঠা নিয়ে অদিতি বলে,     ‘---ম্যাম প্লিজ হেল্প আস। আমরা খুব অসহায় বোধ করছি।’তমালও সমর্থনসূচক মাথা নাড়লো। ওরা দুজনই এই মুহূর্তে  মানসিক টানাপোড়েনে বিপর্যস্ত। যেন সর্বস্ব হারাতে বসেছে এমন উদ্ভ্রান্ত চোখমুখ। ডাঃ কেয়া মুখার্জী একাধারে কোলকাতার একটি নামকরা বেসরকারি  ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অধ্যক্ষা এবং একজন মনস্তত্ববিদ। তাঁর পারসোনাল চেম্বারে তিনি শুধুমাত্র চাইল্ড সাইকোলজি নিয়েই কাজ করে থাকেন। অদিতি আর তমালের দুই মেয়ে কেয়ার স্কুলেই পড়ে। তাই তারা বিপদে পড়েই ছুটে এসেছে কেয়ার কাছে।                         (১)সমস্যার সূত্রপাত বেশ কয়েক বছর আগে। অদিতি আর তমালের দুই যমজ মেয়ে  তাথৈ আর অথৈ। দশ মিনি...
ঈশানচন্দ্র  বন্দ্যোপাধ্যায় – অনির্বান সাহা

ঈশানচন্দ্র  বন্দ্যোপাধ্যায় – অনির্বান সাহা

"পার্বণী ১৪৩০"
ঈশানচন্দ্র  বন্দ্যোপাধ্যায় অনির্বান সাহা ঈশানচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভারতীয় হেডমাস্টার এবং প্রথম ভারতীয় ইংরেজির অধ্যাপক। এছাড়াও তিনি ছিলেন বহু ভাষাবিদ ও বহু বিষয়ের জ্ঞানের অধিকারী,এর সংগে সাহিত্যক্ষেত্রেও তাঁর বিচরণ ছিল অবাধ। তৎকালীন সময়ে তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট কবি। পলাশীর যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ে বাংলার যথার্থ নবজাগরণ শুরু হয় রামমোহনের কলকাতায় আগমনের পর। সেই সময় সঠিক শিক্ষা এবং জীবন-রহস্য মন্থনের মন্ত্র জনসাধারণের মধ্যে প্রচার ও প্রসারের জন্য যেকয়জন দিকপাল দেশি এবং বিদেশি ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব ঘটে,তাঁদের মধ্যে ঈশানচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম সর্বাগ্রে আসা উচিত।এহেন প্রতিভাধর এক পন্ডিত ব্যক্তির জন্ম হয় ১৮ই সেপ্টেম্বর,১৮২০ তারিখে গুপ্তিপাড়ার গঙ্গা-বেহুলার সঙ্গমস্থলে অবস্থিত আয়দা পল্লীর সম্ভ্রান্ত কুলীন ব্রাহ্মণ বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে। পি...
নয়ন – জলি চক্রবর্তী শীল

নয়ন – জলি চক্রবর্তী শীল

"পার্বণী ১৪৩০"
PC..weddingz নয়ন জলি চক্রবর্তী শীল 'এসো না মা একটা ফটো তুলি'‚সাগ্রহে ডাকে জুনিতা |আজ জুনিতার রিসেপশন | জুনিতার সাথে গোটা দুদিন দেখা হয়নি নয়নের | দুটোদিনে অবশ্য এত কাজ ছিল যে নয়নের দিন কোথা দিয়ে কেটে গেছে নয়ন টেরও পায়নি | শুধু মাঝে মাঝে দু একবার ফোনে কথা হয়েছে মেয়ের সাথে | কে কি দিল আশীর্বাদীস্বরূপ‚সবাই তাকে কতটা আদর দিচ্ছে‚কে কে তাকে কতটা সঙ্গ দিচ্ছে এইসব আর কি ! কিন্তু এই গোটা দুটোদিনে সে অনেকবার জানতে চেয়েছে তার জুনিতা কেমন আছে‚কিন্তু জুনিতার একবারও মনে হয়নি মা'কে একবারের জন্য জিজ্ঞাসা করে‚'মা তুমি খেয়েছ তো? মা তোমার খুব ফাঁকা লাগছে না আমি নেই বলে?' না এসব প্রশ্ন করেনি জুনিতা |একলা হাতে মানুষ করেছে নয়ন মেয়েকে | দুজনের মধ্যে তাই বন্ধনটা খুব দৃঢ় হওয়া উচিত ছিল কিন্তু বাস্তবে এমনটা হয়নি | চিরকাল মেয়ে জেনে এসেছে সে মূল্যবান মা নয় | তাই হয়ত | অবশ্য এসব এখন আর নয়ন ...
কবিতা – বিদ্যুৎ পাল

কবিতা – বিদ্যুৎ পাল

"পার্বণী ১৪৩০"
PC: Facebook বনভোজন বিদ্যুৎ পাল বহুদিন হয়ে গেল ভাড়াবাড়ি বদল করি না।নিজের বাড়িতে আছি; ফ্ল্যাটবাড়ি। ফোনে,“কুম্‌হ্রার? মানে সেই পুরাতত্ত্ব বিভাগের পার্ক,অশোকের দরবার?”                শুনে বলি,হ্যাঁ,দাদা,সাম্রাজ্য তাঁহার!পার্ক মানে অনেকেরি মধুস্মৃতি বনভোজনের!যদিও যাইনি সে পার্কে বনভোজনে কোনোদিন।বনভোজন সবার কপালে থাকে না।                                             কবে আসেসে সময় যখন সবাই,মানে যে ক’জন হলে,আশৈশব,বলতে পারি সবাই,পৌঁছেছি কোথাও একসাথে?   &n...
ব্যাখ্যাহীন মনস্তত্ত্ব – অর্চনা মহান্তি

ব্যাখ্যাহীন মনস্তত্ত্ব – অর্চনা মহান্তি

"পার্বণী ১৪৩০"
ছবি: ফেসবুক ব্যাখ্যাহীন মনস্তত্ত্ব                          অর্চনা মহান্তি অসহ্য অস্থিরতায় খাবি খায় প্রত্যেকটি দিনরাত,বিরক্তিবোধে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে মন,বিতৃষ্ণা গজিয়ে ওঠে ভালো লাগার সবুজ উপত্যকায়।এভাবে কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে ক্রমশ বেঁচে থাকা,হতাশার কালো মেঘ থেকে বিষাক্ত বৃষ্টি ঝরে অবিরাম,অসহনীয় হয়ে উঠেছে যার নাছোড়বান্দা ছোবল,তবু প্রাত্যহিক কান্নার অবসর মেলে কই? ইদানিং যুদ্ধের ময়দানটাই গৃহস্থালিঅদৃশ্য শত্রুর সঙ্গে অসম মোকাবিলাই জীবনযাপনতারপরও কি করে জানিনা,পড়তে ভালো লাগে ভালোবাসার সাতসমুদ্র-তেরো নদী রূপকথা।এ কেমন রহস্য!************************************ অর্চনা মহান্তি পরিচিতি: বাঁকুড়া জেলার হিড়বাঁধ গ্রামে জন্ম। বাবা শ্রী ফ...
কবিতা – অঙ্কন দন্ড

কবিতা – অঙ্কন দন্ড

"পার্বণী ১৪৩০"
PC: meng.ru ব্রেক-আপ অঙ্কন দন্ড পাঁচিলের গায়ে শ্যাওলার মতোমিশে থাকো আমার সাথে।কোন এক প্রবল বর্ষার সময়তুমি আমি এক হয়েছিলাম।বাড়ির মালিক বহুবার ঘষে ঘষেতোমাকে আমার থেকে আলাদা করেছে। কিন্তু আবার আমার অঙ্গে অঙ্গেশ্যামলতায় ছেয়ে গেছো তুমি। মাঝে মাঝে ভাবি কত ভালোবাসো আমাকে!রোদে যখন তুমি লাল হয়ে যাওভাবি হয়তো আমার জোরালো প্রেমের লজ্জা। আমার নিজের কোনো রঙ নেই,তোমার রঙেই আমার পরিচয়। হঠাৎ একদিন বাড়ির মালিকআমাকে প্লাস্টার করে রঙ করে দিল। সেদিন থেকে তুমি আর আমার কাছে আসো না। হ্যাঁ,এখন আমি দেখতে সুন্দর হয়েছি,শরীরেও বেড়েছে শক্তি। কিন্তু তুমি ছাড়া বড়ো একা লাগে। হয়তো তুমিও অন্য কোনো দেওয়ালে নিজেকে সাজিয়ে তুলেছো। ************************************ প্রত্যাখ্যান                   &...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!