Shadow

Author: Kulayefera

পিতৃঋণ – চন্দ্রকান্তি দত্ত

পিতৃঋণ – চন্দ্রকান্তি দত্ত

বিহানবেলায় ৩
পিতৃঋণ চন্দ্রকান্তি দত্ত ছোট্ট একটা থলিতে সামান্য সবজি নিয়ে বাড়ির পথে চলেছেন কনকলতা। দুুর্গাবাড়ির কাছাকাছি আসতেই মাথাটা হঠাৎ ঘুরে গেল। কনকলতা সাবধানে পাশে সরে এসে একটা পুরনো বাড়ির রোয়াক ঘেঁষে দাঁড়ালেন। শুধু যে মাথা ঘুরছে,তা নয়।শরীরটা কেমন ঝিমঝিম করছে। কনকলতা ভয় পেলেন। গত তিনদিন ধরে কী যে হচ্ছে শরীরে? কোন খারাপ লক্ষণ নয় তো? একটু জল খেলে ভাল হত। কাছাকাছি কোন দোকান নেই। কাছারি মোড়ে শিন্টুর দুধের দোকান। ও জলও বিক্রি করে। তবে এখন কাছারি মোড় পর্যন্ত হেঁটে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। হাতে ফোন ছিল। একটু ভেবে কনকলতা শিন্টুকে ফোন করলেন। একটুও দেরী হল না। শিন্টু জলের বোতল নিয়ে হাজির হল। জল খাইয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল,"কি হয়েছে মাসিমা? শরীর খারাপ?" কনকলতা লজ্জা পেলেন। বললেন,"না,মানে,মাথাটা হঠাৎ ঘুরে গেল। কি জানি কেন,শরীরটাও ভাল নেই। তাই তোর কাছে জল চেয়ে ফোন করলাম।" "বেশ করেছেন",বলল শিন্টু,"কিন্তু ম...
ফিরে যেতেই হবে – মীনা রায় বন্দ্যোপাধ্যায় 

ফিরে যেতেই হবে – মীনা রায় বন্দ্যোপাধ্যায় 

বিহানবেলায় ৩
      ফিরে যেতেই হবে        মীনা রায় বন্দ্যোপাধ্যায়  —------------------------------------ ভোর হলে পাখি উড়ে দূরে বহু দূরে, সাঁঝেতে কুলায় ফেরা কাকলির সুরে; মানব জন্ম নিয়ে এই দুনিয়াতে আসা, বেহিসেবি দিতে হবে প্রীতি ভালোবাসা। যেদিনে ফিরতে হবে বেলাশেষে জানি, হিসেবের খাতা দেখো সামনেতে টানি; ভালোবাসা দিয়েছো তো এ জগতে এসে! কেঁদে জন্ম নিলে তবে আজ যাবে হেসে। আসল কুলায় সবার স্রষ্টার কাছে,  ইচ্ছামতো নাচান তিনি মানুষেরা নাচে; ভালো কাজে মিঠে ফল পাবে সখি সখা, শান্ত স্নিগ্ধ স্বভাবে চলো মিছে বকা ঝকা। *********************************** মীনা রায় বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮০\এ,রামকৃষ্ণ রোড,সারদা পল্লী,শ্রীরামপুর,হুগলী ...
গালিচার ঢেউ – পদ্মনাভ 

গালিচার ঢেউ – পদ্মনাভ 

বিহানবেলায় ৩
                            গালিচার ঢেউ          পদ্মনাভ  সৃষ্টি সুখের ধারায় বেঁচে থাকে কলম আর মনন; স্রোতের বহমানতায় ধরা দেয় ভাটা জোয়ারের তরী। নতজানু সিঁড়িতে রেখে যায় জল ছাপ! সৃষ্টির অপেক্ষায় পাতা ঝরায় বিগলিত বসন্ত; গন্তব্য আপন করে, অন্ধকার সরে আলোর জন্য....। গোপনে মাখা রঙ শূন্যতাকে আলিঙ্গন করে; মোমের গলন স্পর্শ করে কাঠের চাদর ! এক টুকরো বিশ্লেষণ তোমার অপেক্ষায়......। সে জেনে গেছে অন্ধকারের গল্প; লম্ফের পলতের আবছা আলোয় সৃষ্টি হচ্ছে এক কড়া কলাপাতার স্বপ্ন ! তুমি ধরে থাকো হাল; জবানবন্দির বর্ণমালা.... উড়ন্ত পাখির পালক স্পর্শ করুক কলমের মুখ। রসায়নের পথে হাঁটবে এক টুকরো কাগজ । বিশ্লেষণ প্রবেশ করতেই কালো সাদার স্বপ্ন হবে সফল; মনস্কামের ইচ্ছা বাতির জল। মুক্ত দরজায় শব্দের অপেক্ষা; মাথায় শব্দ আসুক,কৌ...
অনির্বাণ – বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত

অনির্বাণ – বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত

বিহানবেলায় ৩
          অনির্বাণ       বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত —---------------------------     চুল্লিটা নিভিয়ে দিও না,                ওকে জ্বলতে দাও।    ওর গভীর বুকের পাঁজরে,          লেখা রয়েছে অনেক গল্পকথা।       বহু অভিমানের সাক্ষী,             অনেক হতাশার ইতিকথা।       মনের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার মলম।                 কারো জানা নেই।         মুক্তির খোঁজ মেলে,               ওই দগদগে আগুনে।       জীবনের সায়াহ্নে এসে,              সব সত্যিগুলো যখন,             মিথ্যা হয়ে যায়,        তখন চুল্লিটা জ্বালিয়ে রেখো।         আধুনিকতার সাথে সাবেকিয়ানার,                    চিরন্তন শত্রুতা ।            মেলালেও মিলবে না কিছুতেই।            হিসাবের খাতা খুললে,                 ব্যালান্স সিট বিগ জিরো।           শত অপমান লাঞ্ছনা পেরিয়ে,                   যাকে আপন করি।              বিচারের তুল্য...
কবিতা – অর্চনা মহান্তি

কবিতা – অর্চনা মহান্তি

বিহানবেলায় ৩
       কবিতা - অর্চনা মহান্তি         অন্তর সত্তার সম্পদের খোঁজে          ---------------------------------------- খুঁড়ছি-খুঁড়ছি,নিজেকে খুঁড়ে চলেছি প্রতিটি দন্ডে,প্রতিটি মুহূর্তে কি আছে মনের গভীরতায় কতটুকু পুঁজি অন্দরমহলের হৃৎ-ভান্ডে আবিষ্কৃত হতে চাই নিজেই  নিজের কাছে তাই চলছে অন্তর-সত্তার জিওলজিক্যাল খনন। অসীম আগ্রহ,কি আছে খনির গভীরে? শুধুই শূন্যতা,নাকি সোনা-হীরের দ্যুতি? নিদেন কিছু গ্রানাইট? সত্যি জানিনা,নিজেকে সঠিক ভাবে জানা  হয়নি কখনো আলতো ছুঁয়ে দেখেছি আস্তরণ,মনের গভীরতার স্তরকে সেভাবে স্পর্শ করিনি আত্মচেতনাকে উপলব্ধি করতে গর্ত খুঁড়িনি হৃৎপিণ্ডে। এখন খুঁড়ছি গভীর থেকে গভীরতর গর্ত কি আছে দেখিই না,কৌতূহলে এবং প্রয়োজনেও অমূল্য কিছু উঠে এলে সার্থক তো এ জীবন মানবিক আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের মুখোমুখি দাঁড়ানোর সাহস নইলে চির-শূন্যতায় ঘন ডুব তাই আজকের এই অধ্যবসায় অক্লান্...
মুখ,শুধু মুখ – দেব মুখার্জী

মুখ,শুধু মুখ – দেব মুখার্জী

বিহানবেলায় ৩
মুখ, শুধু মুখ দেব মুখার্জী সচ্চা কোই সপনা হোতা মুঝকো কোই আপনা হোতা আনজানা সা, মগর কুছ পহেচানা সা... ধীর লয়ে গানটা বাজছে...রেশমী সোমুকে চিনতে না পেরে চলে গেল...টয় ট্রেনে চড়ে...কালো স্টীম ইঞ্জিনটা সাদা সাদা ধোঁয়া ছেড়ে হুশহাশ শব্দ তুলে মিলিয়ে গেল সামনের পাহাড়ের ঢালে...সবুজ গাছগাছালির ভেতরে...মেঘের আড়ালে...একরাশ মনখারাপ ছড়িয়ে দিয়ে। সালটা বোধহয় ১৯৮৩...কৈশোর আর যৌবনের সন্ধিক্ষণে আমি তখন...বৃষ্টিস্নাত পাহাড়ি রেলস্টেশনটা...বোধহয় রামনগর লেখা ছিল বোর্ডটায়...আজ লিখতে বসে মনে পড়ছিল...বড় মনে ধরেছিল সেই পাহাড়ী শহরটা, ছোটো স্টেশনটা...ছোটো ট্রেনটা...ভেবেছি একবার যদি সেখানে যাওয়া যায়। অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে সেইদিনটা থেকে... ভুলেই গেছি রামনগর স্টেশনটার কথা, সেই টয় ট্রেনটার কথা। কিন্তু আজ... কুন্নুরের ছোট্ট স্টেশনে পৌঁছে চারিদিক তাকিয়ে দেখি ... পুরোনো স্টেশন বিল্ডিংটা... পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন... বড়ই স...
ফুটেছে নতুন ফুল – অরুণ শীল

ফুটেছে নতুন ফুল – অরুণ শীল

বিহানবেলায় ৩
ফুটেছে নতুন ফুল           অরুণ শীল ভাঙন ঠেকানো দায়,অবনত মুখ তোমার জিহ্বায় জানি অরুচি অসুখ! নতুনত্ব চাও তাই পুরাতনে গ্লানি ঘেন্না জমেছে মনে জানি মহারানী। যদিও বাহান্ন পার করেও পঁচিশ মগজে জমেছে সেই লেবুচিপা বিষ হয়তো কেউ চুষে নেবে পরম আদরে আমিও ভুগছি আজ হারামির জ্বরে। মহাস্বার্থপর সময় মার্কেটে হাঁটে পতেঙ্গা বাজার ও লেকে বদ্ধ কপাটে জেদ অভিমানের জন্ম দিতে দিতে আমিও কেটেছি ভুল দরজার ফিতে! সবাই বুঝবে কি এসবের মানে? তোমার বন্ধু মায়াহরিনী কি জানে? ফুটেছে নতুন ফুল? কোন সে কাননে! কে আছে স্বর্গে? বুকে! গভীর গোপনে? তোমার আদরের কাছে হয়ে আছি নত তোমার গিরিখাত থাকুক অক্ষত পেরিয়ে পঞ্চাশতম ফুলসজ্জার দিন এখনও রঙিন তোমার পতাকা উড্ডীন শুভ জন্মদিন প্রিয়,শুভ জন্মদিন। ********************************** অরুণ শীল। নর্দার্ন হিল পার্ক, ৩৫ বৌদ্ধ মন্দির সড়ক, নন্দনকানন, চট্টগ্রাম-৪০০০।...
আধার,সিদ্ধান্ত না নেওয়া সিদ্ধান্ত – জয়িতা সরকার

আধার,সিদ্ধান্ত না নেওয়া সিদ্ধান্ত – জয়িতা সরকার

বিহানবেলায় ৩
               আধার        জয়িতা সরকার জান্তব চাহিদার পার্থিব দিন ডুবে গেলে ত্রিকালদর্শী হয়ে প্রেত পায় অলৌকিক ঘুম সমূলে। যোগ্যতায় অবান্তর কানাগলি খোঁজা সে তো শুধু দেখে দেখে বোঝা, দিনে দিনে সব আকার নিরাকার হয়! আসলে কেউ বা কিছুই বোধহয় শেষ হয়ে যাবার নয়। মননের হাত ধরে হেঁটে চলে চেতনার রসায়ন‌ নিভৃত অন্ধকারে এক শিশুর জাগরণ, দায় ফুরোলে ক্লান্ত হলে জায়গা বদলে নেয় শেষরাতে । শিব আবার শব হয়ে যায় অপঘাতে। শূন্য-আধার থেকে পূর্ণের প্রান্তরে যাওয়া নিরাবলম্ব সত্তার সামিয়ানা সন্ধান পাওয়া নির্ঘুম সত্তার বিশ্রাম, রাত্রি এক অনন্ত আধারের নাম। ---------------+----------------     সিদ্ধান্ত না নেওয়া সিদ্ধান্ত                    জয়িতা সরকার সময়ের গায়ে গায়ে সিদ্ধান্ত বদলে বদলে যায়।তাই আমি কোন সিদ্ধান্ত নিইনি। শপথ বেশির ভাগই রাখা হয় না। তাই কোনভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ...

স ম্পা দ কী য় – পৌষ সংখ্যা ১৪২৯ “পার্বণী”

“পার্বণী” ১৪২৯
স ম্পা দ কী য় পৌষ সংখ্যা ১৪২৯ “পার্বণী” পৌষ মাসকে ধরা হয় সৌভাগ্যের মাস হিসেবে। কথায় আছে কারও পৌষ মাস...! বাঙালীর কাছে পৌষ মাস যেন পার্বণের মাসও। দীর্ঘ দহনবেলার পর,ঝড় বৃষ্টি, বন্যা,বজ্র গর্জন, মেঘ কালো করা বর্ষার পর,এ যেন একটু স্বস্তির সময়। বারো মাসে তেরো পার্বণের দেশে পৌষ যেন আনন্দ আর আলোর ভরা ধরণীতল। নরম শীতের উষ্ণ রোদ্দুর মাখা,মাঠে মাঠে সবুজ ফসল,শাক সব্জি,স্বস্তি বাজার দরেও। কুলায় ফেরার পৌষ মাসের,পৌষালী সংখ্যার নামেও তাই এরই প্রতিফলন ঘটেছে। কুলায় ফেরার এই বিশেষ সংখ্যার নাম করা হয়েছে "পার্বণী"। নানান রঙ,নানান স্বাদে আমরা পাঠক/পাঠিকার কাছে পৌঁছাতে চেষ্টা করছি এই পার্বণী সংখ্যায়। পৌষকাল টি সুন্দর হলেও আমাদের যাত্রাপথ কিন্ত মসৃণ হয়নি আজও। বলা যায়,আমাদের 'পথে পথে পাথর ছড়ানো...'।একটি পত্রিকা সুষ্ঠু ভাবে চালাতে শুধু অক্লান্ত পরিশ্রম,উৎসর্গকৃত মানসিকতা,সম্মিলিত প্রয়াস,নিবেদিত প্রাণ লেখকগোষ্...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!