Author: Kulayefera

ক্ষমা করো আজিকের দিনে – বিনয় দেবনাথ
ক্ষমা করো আজিকের দিনে
বিনয় দেবনাথ
এলো নতুন প্রভাতে মৃদু হেসে সূর্যের আলো যেন আজিকের দিনে
ভুলে যাবো সব পুরাতন দিন শত্রু ভেবো না মোরে হে বন্ধুবর এই অয়নে
কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকি যদি রেখো না মনে কিছু, ভুলে যেও জনে
ক্ষমা করো আজিকের দিনে।
অতীতের দিনে যা করেছি সব যেন ভুলে যাই এই নতুন বর্ষের সনে
এসো সব বন্ধুগণ নতুন আলোর স্বপ্ন, আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠি মনে
জীবন সংসার থাকিবে সবি যদি ভুলে যাই আবার মায়া মমতার ক্ষনে
ক্ষমা করো আজিকের দিনে।
আসুখ ঝড়-তুফান আসুক যতই অশুভ শক্তি,করিবো-না ভয় রুখে দাঁড়াবো
মানুষ আর্তনাদ করিবো-না সহ্য দ্রোহের শপথ নিয়ে সবাই পাশে থাকবো
নতুন দিনের নতুন উদয়ে উড়ন্ত পাখির ন্যায় আনন্দে উপভোগ করিবো
ক্ষমা করো আজিকের দিনে।
নতুন দিনে নতুন স্বপ্ন পূরণ করে সার্থক করিবো এ যেন মোদের আশা
বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন...

আমার দুর্গা – পারুল চক্রবর্তী
আমার দুর্গা
পারুল চক্রবর্তী
আমার দুর্গা ছোট্ট মেয়ে
কবেই হল বড়,
দুগ্গি বলে ডাকত বাপে
ভয়েই জড়সড় |
এখন দুর্গা অনেক বড়,
ভয় করেনা কারেও
বিপদ এলে লড়তে জানে
রাখতে জানে মান
এখন ধরে দুর্গারূপী দশভূজার স্থান।
দুর্গা আমার বলছে ডেকে
আয় না ওরে
পিশাচ রূপী অসুরের ই দল।
তোদের দেখে করবো না ভয় একটুও যে
পেয়েছি আমি অটুট মনোবল |
আয় না ওরে নেশার ঘোরে
ধর না আমার হাত
হাত ঘুরিয়ে মুচড়ে দেব
করবো কুপকাত
বলতে আমার লাগছে ভালো
এমন দুর্গা থাকলে ঘরে
সব ঘরেতেই জ্বলবে আলো
জাগবে মনোবল।
আয় রে জয়া, আয়ের উমা
কন্যা রূপী দুর্গা সমা
দশভূজা র দল।
অস্ত্র হাতে জাগ রে তোরা
অসুররূপী মানুষ গুলোর
কর রে নিধন।
অকালে তে রামের মতো
কর রে তোরা মায়ের বোধন। ...

আজো হতে পারি – সহেলী মুখার্জি
আজো হতে পারি
সহেলী মুখার্জি
আজো হতে পারি শিমুল পলাশ
ছন্দে মোড়া কাব্যে তোমার।
আগুন রঙা হৃদয় বাঁকে,
ফাগুন ভরা সুরের বাহার।
হতে পারি ঝরা পাতা ধূলিপথ-
গহন মনের মাঝখানে,
বাসন্তী ফুলে জড়িয়ে আঁচল
গভীর প্রণয় আলিঙ্গনে।
হতে পারি ভোর ,মিঠি কুহু তান
স্বপ্নে বিভোর বসন্ত মন,
নির্জনে মৃদু নদী কলতান-
স্তব্ধ আকাশ,ঘোর আলাপন।
আজো হতে পারি বাউল ফকির
গান বেঁধে ফিরি দ্বারে দ্বারে।
কৃষ্ণচূড়ার আবীর হয়ে,
মহুয়া নেশার অভিসারে।
***************************
সহেলী মুখার্জিঃ স্কুল শিক্ষিকা,নিবাস-ব্যান্ডেল/হুগলি,শখ-লেখা এবং গান করা
...

মুহূর্তে বাঁচে প্রেম, মুহূর্তরাই বাঁচে – আশিস দাস
মুহূর্তে বাঁচে প্রেম, মুহূর্তরাই বাঁচে
আশিস দাস
"প্রতীক্ষা তাই প্রহরবিহীন
আজীবন ও সর্বজনীন,
সরোবর তো সবার বুকেই
পদ্ম কেবল পর্দানশীন"...
কলেজ ফাংশানে পূর্ণেন্দু পত্রীর এই কবিতা আবৃত্তি করে যেই স্টেজ থেকে নেমে এলাম তখন নুপূর বলেছিল,"ওরে অনি,তোকে আমার ওখানেই জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছিল রে...মাইকে তোর কি রোম্যান্টিক ভয়েস..ওহ !!" ll সেই নুপূরকে একদিন বলেছিলাম "সিনেমা দেখতে যাবি ?" ও কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে,আমাকে মোহিনী মায়ায় আচ্ছন্ন করে বলেছিল,"জানিস অনি,তোর সাথে আমি জাহান্নামে যেতেও রাজি" ll সেদিন আমরা সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম ঠিকই,কিন্তু ওর কথা মতো জাহান্নামে যাওয়া আমাদের হয়নি ll
অনেক কিছুই স্মৃতি থেকে মুছে গেছে,নুপূরও আজ নেই,কিন্তু ওর সেদিনের সেই কথাটা একটুও ঝাপসা হয়নি,অমলিন থেকে গেছে কয়েকটা মুহূর্ত: সেইসব মুহূর্তের মধ্যেই বেঁচে আছে প্রেম...

পুতুলখেলা – দেবাশিস দণ্ড
পুতুলখেলা
দেবাশিস দণ্ড
আমার তখন পুতুলখেলা
চিলেকোঠার ছাতে
কত যে কাজ একা হাতে
পারি না সামলাতে।
কমলারানী হলদেবেণী
চোখ নাচানি মাথা দুলানি
যত রকম বকবকানি
সবই ওদের সাথে।
আমার তখন পুতুলখেলা
চিলেকোঠার ছাতে।
দিদা তখন ঠাকুরঘরে
গোপাল ঠাকুর নিয়ে।
একদিন সব দেখেছিলাম
পা টিপটিপ গিয়ে।
সোনাগোপাল নাড়ুগোপাল
দিদা কেমন উথাল পাথাল
ফুলের সাজি নীল সাদা লাল
সাজায় সে ফুল দিয়ে।
দিদা তখন ঠাকুরঘরে
গোপাল ঠাকুর নিয়ে।
সহজ কি আর পুতুলখেলা
কাজের পরে কাজ
একেকটা দিন হাঁপিয়ে যেতাম
পড়তো মাথায় বাজ।
মেয়ে দুটোকে তেল মাখিয়ে
চান করিয়ে গা মুছিয়ে
চুল আঁচড়ে কাজল দিয়ে
একটুখানি সাজ।
সহজ কি আর পুতুলখেলা
কাজের পরে কাজ।
ঠিক তখুনি ঠাকুরঘরে
একই চানের ছল
দিদা মাথায় দিচ্ছে ঢেলে
ঘটির গঙ্গাজল।
চান করিয়ে নাড়ুগোপাল
মোছায় মাথা মোছায় কপাল
কত যে মিল সকাল সকাল
পাই না খুঁজে তল।
...

সম্পাদকীয় – “কুলায়ফেরার কাশবন ৫”
সম্পাদকীয়
' কুলায়ফেরার কাশবন ৫ '
“আকাশ জুড়ে শুনিনু ওই বাজে
তোমারি নাম সকল তারার মাঝে।
..আঁধারে মোর তোমার আলোয় জয়
গভীর হয়ে থাক জীবনের কাজে।।..”
দীর্ঘ অপেক্ষার পর বছর ঘুরে আবার মা আসছেন। বর্ষা শেষে আকাশে পেঁজা তুলোর মতন মেঘ। মাঝে মধ্যে সোনালী উঁকিঝুঁকি।
তপ্ত দ্বিপ্রহরের পর সন্ধ্যায় একটু যেন হিমের ছোঁওয়া। কিন্ত সব থেকেও কি যেন নেই। শরৎ প্রভাতেও কেন মনে হচ্ছে এ কোন সকাল! রাতের চেয়ে অন্ধকার?
মাঝে মাঝে মনে হয়,এত অন্ধকার কেন? কিন্ত এর পরও হঠাৎ হঠাৎ আবার আলোর ঝলকানি মনে সাহস আনছে! এ যেন অরোরা বোরিয়ালিস!
সত্যি বলতে কি,নারীর চোখের জলের মতন অমূল্য আর বিশ্বব্রহ্মান্ডে কিছু নেই। নারী আমাদের জন্মদাত্রী মাতা। নারী আমাদের সহেদরা,আমাদের অর্ধেক আকাশ। এই আকাশ কেন মেঘাচ্ছন্ন হবে? নারী কিন্ত অবলা নয়,সবলা! সংসার থেকে বিশ্ব সংসার,জগজ্জননী রূপে তিনি সামাল দেন। দূর্বল হয়েও কমজোর নন /শক্তি র অপর...

গবেষণা -পল্লব চট্টোপাধ্যায়
গবেষণা
পল্লব চট্টোপাধ্যায়
না না,এটা আমার পি-এইচ-ডির থিসিস নয়। সম্প্রতি এ দেশে গো-জাতি নিয়ে নানাবিধ চর্চা হচ্ছে। গরু আমাদের মাতা এবং গোমাংস ভক্ষণ পাপ হলেও গোমূত্র ইত্যাদি পানে যে সর্বরোগহারিণী সুধা আছে বা গোদুগ্ধে সোনা বা তার কিছু লবণ বর্তমান তা প্রচার ও বিশ্বাস করা হচ্ছে। কোন বিতর্কের মাঝে যাব না,কিন্তু এই দেশে এক নতুন জাতির আবির্ভাব হয়েছে, যাদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে গেলে গো-জাতি সম্বন্ধে ন্যূনতম জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। অবশ্য জ্ঞান থাকলেই যে সর্বত্র তার প্রদর্শন করতেই হবে তার কোনও মানে নেই। বিশেষতঃ সামনের দশ জন সশস্ত্র যুবক যদি মোষকে কালো গরু বলে দাবী করে বা নীলগাইকে একপ্রকারের গাই,সেক্ষেত্রে তা মেনে নেওয়াটাই শ্রেয়ঃ-মাথা তো বাপু একটাই! তাই বলে গরু সম্বন্ধে কিঞ্চিৎ জ্ঞানলাভও করতে নেই? ‘গো+এষণা’-সে-ই তো গবেষণা,মানে গরু খোঁজা। অবশ্য রিসার্চের সঙ্গে গরু-খোঁজার কী সম্পর্ক সেটা বলার মত জ্ঞান আমার...

নিশীথ চারিণী – মধুমিতা মিত্র
নিশীথ-চারিণী
(সত্য ঘটনা অবলম্বনে)
মধুমিতা মিত্র
দলমা পাহাড়ের কোলে,পাহাড় কেটে করা ইস্পাত নগরী ভারতবর্ষের মানচিত্রে শিল্প-শহর হিসেবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ইস্পাত নগরী হলে কি হবে?-এখানকার মানুষ গুলি কিন্তু লৌহ মানব নয়। লোহা তৈরীর সঙ্গে সঙ্গে প্রায় প্রতিটি ঘরেই রয়েছে সূক্ষ্ম শিল্প কলার সমাদর। প্রায় সকলেই নিজেরাও নানা রকমের শিল্প-কলার চর্চায় নিজেদের যুক্ত তো রাখেনই,ঘরে ঘরে ছেলেমেয়েরাও সঙ্গীত,নৃত্য,বাদ্য,অঙ্কন,আবৃত্তি,নাটক সমস্ত ধরনের চারুকলাই পড়াশোনার পাশাপাশি তীব্র আগ্ৰহে এবং ভালোবাসায় চালিয়ে যায়।
এ হেন ইস্পাত নগরীতে বছর বছর নানা চারুশিল্পকলার বিবিধ প্রদর্শনী,অনুষ্ঠান,প্রতিযোগিতা লেগেই থাকে। এরকমই একটি প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত বিভাস।লৌহ নগরীর দক্ষিণ প্রান্তের উপ-নগরীর একটি বিখ্যাত ক্লাব ইমন কল্যাণ সঙ্ঘ আয়োজিত প্রতিযোগিতা ইস্পাত নগরীর যথেষ্ট মান্যগণ্য প্রতিযোগিতা।ইমন কল্যাণ স...

আগুনের পরশমণি – ব্রতী ঘোষ
আগুনের পরশমণি
ব্রতী ঘোষ
আজও ভোরের আলো ফুটতেই দেবাশ্রিতার ঘুম ভেঙ্গে যায় | জানলার ফাঁক দিয়ে ভোরের আভাস পাওয়া যায় অল্প অল্প | কিন্তু এই ভোরের আলো রাতের চেয়েও বেশি কালো বলে মনে হয় ওর। বুকের ভেতর ভারী পাথর চাপিয়ে দিলে যে ভার অনুভূত হয় সেই ভার অনুভব করে দেবাশ্রিতা | গত দুদিন আগে কলকাতায় নৃশংস ভাবে ঘটে যাওয়া অভয়ার মৃত্যু দেশের প্রতিটি বিবেকবান নাগরিকের মত ওকেও অত্যন্ত ব্যথিত করেছে | ও ভাবতে পারছে না মানুষ এত নৃশংস ও হতে পারে ? হাত বাড়িয়ে মোবাইলটা খোলে | নেট অন করতেই সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলের পর্দায় ভেসে আসে কতগুলি কুৎসিত মেসেজ। আবার ? আবার পাঠিয়েছে সন্দীপ ? ইতর একটা। সঙ্গে সঙ্গে মেসেজটা ফরওয়ার্ড করে সুদীপ্তকে। তাকিয়ে দেখে পাশে সুদীপ্ত অকাতরে ঘুমোচ্ছে । এই নিয়ে পাঁচ দিন হলো | নিজের বৌদিকে কেউ এত জঘন্য ইঙ্গিত পূর্ণ মেসেজ পাঠাতে পারে ? অথচ সুদীপ্ত সব জেনেও কিচ্ছুটি বলবে না ? শ...